বিশ্ব বাজারে বিপুল চাহিদা থাকায় কুমিরকে বলা হয় সোনালি লোহা। আন্তর্জাতিক বাজারে কুমিরের চামড়া, মাংস, হাড়, দাঁত বেশ চড়া দামে বিক্রি হয়। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেনসহ বিভিন্ন দেশে এগুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ খামারে এই কুমিরের চাষ করে ব্যাপক আন্তর্জাতিক মুদ্রা আয়ও করছে। বাংলাদেশেও রয়েছে এমন সম্ভাবনাময় একটি প্রকল্প। যার নাম রেপটাইল ফার্ম লিমিটেড। ময়মনসিংহের ভালুকার উথুরা ইউনিয়নে অবস্থিত এই প্রকল্পটি। প্রকল্পটি ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সফলতার সাথে পরিচালিত হয়ে এর কুমিরের সংখ্যা দাঁড়ায় ২ হাজার ৫০০টি। পরবর্তীতে সঠিক সিদ্ধান্ত, পরিচালনায় অনিয়মের কারণে ও পর্যাপ্ত বিনিয়োগের অভাবে ফার্মটি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
অথচ অত্যন্ত লাভজনক এ ব্যবসার প্রসার সম্ভব। এই ব্যবসার ভবিষ্যৎ ভালো বুঝতে পেরে হাইকোর্ট খামার পরিচালনার জন্য ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয়। কুমিরগুলোর জীবন বাঁচাতে, পাশাপাশি খামার টিকে দক্ষতার সাথে সচল রাখতে এখন কাজ করছে হাইকোর্ট নিয়োজিত পর্ষদ। এই পর্ষদের বলিষ্ঠ দায়িত্ববোধ, তাদের নেয়া নানা রকম সিদ্ধান্ত এবং কুমিরগুলোর প্রতি কর্মীদের সহানুভূতি না থাকলে এতোদিনে হয়তো ফার্ম থেকে কুমির প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত।
তবে আশার কথা এই যে, নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অনুপ্রেরণা ও তত্ত্বাবধানে ফার্মের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন মনোবল ফিরে পেয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যতটুকু খাদ্য ও চিকিৎসার যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে তা দিয়েই নতুন উৎসাহ উদ্দীপনায় নিরলসভাবে কুমিরের পরিচর্যা করছেন তারা।
ফার্মের কর্মীদের কাছে জানা যায়, যেদিন প্রথমবার ফার্ম পরিদর্শন করেন পর্ষদ সদস্যরা। কুমিরগুলোর আশেপাশে সামান্য কিছু খাবার ফেলে রাখা হয়। যাতে সন্দেহ থেকে রেহাই পাওয়ার যায়। যে আসলে কুমিরেরা বেশ যত্নেই আছে। ফার্মের কর্মীদের আশংকা সংস্থাগুলির আয়ত্তে খামারটি গেলে খামারের নিয়মিত কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। তাতে অবশিষ্ট কুমিরগুলোরও জীবন সংকটে পড়তে পারে।
কুমিরের খামারের আসল কার্যক্রম পুনরুদ্ধারে নতুন পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকবৃন্দ বদ্ধপরিকর। কুমিরের ব্যবসার যে সম্ভাবনা রয়েছে এবং পর্যটন শিল্পে এর যে সম্ভাবনা রয়েছে তা আবার ফিরে আসবে বলে আশা করা যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন