উত্তরাঞ্চলের বগুড়া জয়পুরহাট সড়কের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়ন পরিষদের সুবিশাল নান্দাইল দীঘি হতে পারে নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র এবং পিকনিক স্পট। প্রায় ৬০ একর জমির এই বিশাল, স্বচ্ছ ও মিষ্টি পানির দীঘিটি সত্যই অনিন্দ্য সুন্দর। ইতিহাস বলে ১৬১০ সালে দীঘিটি খনন করে সুপেয় পানির আধার হিসেবে প্রজাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন রাজা নন্দলাল।
বরেন্দ্রভ‚মিতে এত বিশাল পানির আধার মধ্যযুগের মানুষের কাছে ছিলো বিস্ময়কর ও অলৌকিক। জনশ্রæতি আছে প্রজা কল্যাণে হিন্দু রাজা নন্দলাল নাকি বিশ্বকর্মা পূজার আয়োজন করে। আর তারই বরে রাতারাতি তৈরি হয়েছিল এই বিশালতম দীঘি। এরপর তিনি এটি ব্যবহার করতে জনগনের জন্য উন্মুক্ত করে দেন।
স্থানীয় হিন্দু অধিবাসীদের বিশ্বাস বিশ্বকর্মার বরের কারনে নান্দাইল দীঘিতে খরা মৌসুমেও পর্যাপ্ত স্বচ্ছ পানি থাকে। আবার এর অবস্থান এবং খনন শৈলীর কারনে বর্ষাকালেও বানের পানি প্রবেশ করে না।
অবশ্য ইতিহাসের পাতায় উল্লেখিত শ্রæতির কোন সত্যতা মেলেনি। নন্দলাল রাজার সময়টাতে ভারতে মোঘল রাজত্ব ছিলো। রাজা নন্দলাল হয়তো মোঘল সুবাহর কোন সামন্ত রাজা ছিলো এই নন্দলাল বলে ধারণা কারো কারো।
সেই সময়ে বাংলায় বারো ভুঁইয়ার সংগ্রামও চলমান ছিলো। তাই দুই সৈন্য শিবিরের পানির চাহিদা মেটাতেও দ্রæত এই দীঘিটি খনন করা হয়ে থাকতে পারে বলেও ধারণা অনেকের। বর্তমানে এটি জয়পুরহাট জেলা পরিষদের অধীনে। দেওয়া হয় বার্ষিক ইজারা।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালনকারী মোহাম্মদ জাবেদ এবং পুনট ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আফজাল হোসেন জানালেন, দীঘি সংলগ্ন জমি হাজার বিঘার কম নয়। তবে বেশিরভাগই বেদখল হয়ে গেছে। ওইসব জমিতে গড়ে উঠেছে কলেজ, স্কুল, মক্তব, প্রতিবন্ধী স্কুল ঘরবাড়ি।
তারপরও শীত মৌসুমে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসে অতিথি পাখির ঝাঁক। যেটা এখানকার বড় আকর্ষণ! তাই এখানে একটি পর্যটন ও পিকনিক স্পট গড়ে তুললে মোটা দাগে রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে বলে স্থানীয়রা মনে করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন