বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘নূর জাহান’ ভারতের আধার কার্ডে ‘জয়া’

আন্তর্জাতিক নারীপাচারকারী ‘নদী’র জামিন হাইকোর্টে নাকচ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভারতের আধার কার্ডে তার নাম ‘জয়া’। বাংলাদেশী পাসপোর্টে নাম ‘নূর জাহান’। সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকার মানুষ তাকে চেনেন ‘জলি’ নামে। যশোর-বেনাপোল সীমান্তে গিয়ে তিনি হয়ে যান ‘প্রীতি’। বিভিন্ন নামের এই রূপসী নারী পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন ‘নদী’ নামে। তিনি আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের সদস্য।
গত বছর ২১ জুন তিনি গ্রেফতার হন। এখনও রয়েছেন কারাগারে। কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হতে তিনি চালাচ্ছেন আইনি লড়াইসহ নানামুখি তৎপরতা। এ প্রক্রিয়ায় তিনি হাইকোর্টে জামিন প্রার্থনাও করেন। কিন্তু আদালত সেই আবেদন নাকচ করে দেন।
গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের সদস্য হিসেবে গ্রেফতার নদী আক্তার ইতি ওরফে জয়া আক্তার জান্নাত ওরফে নূর জাহানের (২৮) জামিন আবেদন খারিজ হয়ে যায়। আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিন এবং বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি-মর্মে খারিজ করে দেন। নদীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হাসান তরিকুল চৌধুরী। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পি।
প্রসঙ্গত, গত বছর ২১ জুন নদী আক্তার ইতিসহ মানবপাচার চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও বিভাগের হাতিরঝিল থানা পুলিশ। গ্রেফতার অন্যরা হলেন, আল আমিন হোসেন (২৮), সাইফুর ইসলাম (২৮), আমিরুল ইসলাম (৩০), পলক মন্ডল (২৬), তরিকুল ইসলাম (২৬) ও বিনাশ শিকদার (৩৩)। পরে হাতিরঝিল থানায় মানব পাচার আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
গ্রেফতারের পরদিন ২২ জুন সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের অন্যতম সদস্য নদী আক্তার ইতি ওরফে জয়া আক্তার জান্নাত ওরফে নূর জাহান ১০টি নাম ব্যবহার করে ভারত, মালয়েশিয়া ও দুবাই নারী পাচার করতেন। মূলত তিনি ওই তিন দেশে নারী পাচারে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতেন। পাচারের কৌশল হিসেবে একেক সময় একেক নাম ব্যবহার করা হতো।
মো. শহিদুল্লাহ আরও জানান, পাচারের উদ্দেশে আনা মেয়েদের যশোর সীমান্তে বিভিন্ন বাড়িতে রেখে সুযোগমতো ভারতে পাচার করত চক্রটি। পাচারকরা প্রত্যেক মেয়ের জন্য স্থানীয় এক ইউপি সদস্যকে ১ হাজার টাকা করে দেয়া হতো। পাচারের সময় কোনো মেয়ের বিজিবির কাছে আটক হলে সেই ইউপি সদস্য আত্মীয় পরিচয় দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
২০০৫ সালে শীর্ষ সন্ত্রাসী রাজীব হোসেনের সঙ্গে নদীর বিয়ে হয়। ২০১৫ সালে রাজীব বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এরপর থেকেই নদী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পাচারকরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নদীর দশটির মতো নাম পাওয়া যায়। নদী ভারত, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের নারী পাচার চক্রের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে।
পাচার হওয়া নারীদের কাছে তিনি নিজেকে ‘নদী’ নামে পরিচয় দিলেও ভারতে সবাই তাকে ইতি নামে চেনে। ভারতীয় আধার কার্ডে তার নাম জয়া আক্তার জান্নাত। বাংলাদেশী পাসপোর্টে নূর জাহান, সাতক্ষীরা সীমান্তে জলি আর যশোর সীমান্তে তিনি প্রীতি নামে পরিচিত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
গোলাম কাদের ১২ এপ্রিল, ২০২২, ৫:৫২ এএম says : 0
রিমান্ডে নিয়ে তার কাছ থেকে সকল তথ্য বের করা হউক
Total Reply(0)
তিনা ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:২৭ পিএম says : 0
তাকে যারা এতদিন শেল্টার দিয়েছে, তাদেরকে খুঁজে বের করুন
Total Reply(0)
জহির ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:২৭ পিএম says : 0
তাকে ফাঁসি দেয়া উচিত
Total Reply(0)
পলাশ ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:২৮ পিএম says : 0
এরা অনেক নারীর জীবন ধ্বংস করেছে
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন