শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ

ঢাবির ভাষা ইনস্টিটিউট

রাহাদ উদ্দিন : | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও সর্বোচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান অপদস্ত করা ও প্রতিহিংসামূলক ভাবে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর একটি প্রতিবাদলিপি দিয়েছে ভুক্তভোগী প্রার্থী।
ইনস্টিটিউটের বর্তমান পরিচালক এবিএম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে। অভিযোগ করেন মাহমুদ ফয়সাল শোভন নামে এক প্রার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা বিভাগ থেকে অনার্স ও তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার বিভাগ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেছেন।
শোভন ইনকিলাবকে বলেন, গত ৯ এপ্রিল আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ৩ টি অংশ যথা : লিখিত , ব্যবহারিক ( কম্পিউটার ) ও মৌখিক অংশের পরীক্ষায় আসাধারণভাবে উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ইচ্ছাকৃতভাবে সকলের সামনে অপমান ও অপদস্থ করেন যা ষড়যন্ত্রমূলক ও প্রতিহিংসা পরায়ণতার ইংঙ্গিত বহন করে। আমাকে বাদ দেবার জন্যই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বোর্ডে ইংরেজি বিভাগের কাউকে রাখা হয়নি। কারণ তিনি চান না যে ইংরেজি বিভাগের কেউ এই পদে আসুক। মূলত ইংরেজি ভাষার প্রতি তার ঘৃণা থেকেই তিনি এসব করছেন। তাঁর বিভিন্ন লেখনিতেও ইংরেজি ভাষার প্রতি তার ঘৃণা প্রকাশ পায়।
তিনি বলেন, আমাকে বাদ দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজনকে নেওয়ার চিন্তা করতেছে বলে আমি জানতে পারি। অথচ গত ২ জন পরিচালকের সময় আমি সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে এসেছি। একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সেবা দেওয়ার জন্যই আমি বিগত ৫ টি বছর লেগেছিলাম। ভাইভা বোর্ডে সর্বোচ্চ ভালো করার পরও তিনি বিভিন্ন অজুহাতে আমায় বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং অকথ্য ভাষায় সবার সামনে আমায় অপমান অপদস্ত করেন।
অপমান অপদস্ত করা ও শোভনের যোত্যতার বিষয়টি ইনকিলাবকে নিশ্চিত করেন ভাইভা বোর্ডে থাকা একাধিক শিক্ষক ও ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক।
এদিকে অফিস-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের ( তৃতীয় শ্রেণির) নিয়োগের জন্য কমিটি গঠনেও নিয়ম না মানার অভিযোগ উঠেছে পরিচালক এবিএম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। এই পদের জন্য সি অ্যান্ড ডি কমিটির ৮ মার্চের মুলতবি সভা যা ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অফিস কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের (তৃতীয় শ্রেণির) কমিটি গঠনে প্রফেসর সাইদুর রহমান, শামীম বানু, আবসার কামাল এবং অতিরিক্ত সদস্য হিসাবে প্রফেসর আনসারুল আলমের নাম সর্বসম্মতিক্রমে সুপারিশ করা হয়। কিন্তু সি অ্যান্ড ডি কমিটির সেই সিদ্ধান্ত কমিটিতে নিশ্চিতকরণ না করে তালিকা থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে ড. সাইদুর রহমানের নাম বাদ দিয়ে পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে মনগড়া একটি তালিকা সি অ্যান্ড ডির অনুমোদন ছাড়া নিজে লিখে পাঠান। এ ব্যাপারে সিঅ্যান্ড ডি-এর তিনজন সদস্য পরিচালককে লিখিতভাবে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য অনুরোধও করেন।
প্রফেসর সাইদুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, শোভন আমাদের এখানকার শিক্ষার্থী। দুন্দুটো ডিগ্রী তার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষার উপর অনার্স করা একটা ছেলে এর চেয়ে বড় কিছু নিশ্চয়ই প্রত্যাশা করে। দীর্ঘদিন ধরে সে এখানে সেবা দিয়ে আসছে। টানা তিনজন পরিচালকের সময়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তিনি কাজ করেছেন। সব পরিচালকই ওনার বিষয়ে ভালো ধারণা রাখেন। এই পদের জন্য আমরা তাকে তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থকার ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে মাস্টার্স করতে বললে তিনি সেটাও করেন। মোটকথা এই পদের জন্য যতটুকু যোগ্যতা দরকার তার চেয়ে বেশিই যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী শোভন। শোভনকে যেন বাদ দেওয়া যায় সে জন্যই মূলত আমাকে সিলেকশন বোর্ড থেকে সুকৌশলে বাদ দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে পরিচালক ড. এবিএম রেজাউল করিম বলেন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সকল কাজ নিয়মমাফিক চলছে। নিয়োগ পরীক্ষাও নিয়মের মধ্যেই হচ্ছে। এখন কেউ যদি বঞ্চিত হয় তখন সে তো নিজেকে যোগ্যতর প্রমাণ করার চেষ্টা করবেই। এটা তো স্বাভাবিক। পূর্বে এ ধরনের কোনো অভিযোগ উঠেনি। হঠাৎই এসব অভিযোগ উঠতেছে আমার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর ড.এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমি জানি, কিন্তু বিস্তারিত বলতে পারব না।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ফাইল আসলে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন