বরিশাল ব্যুরো : বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার ক্যাম্পাস থেকে সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিনপ্রাপ্ত ৭ আসামীকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে উঠিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদ্রাসার প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. বাকি বিল্লাহ, ফাজিল ডিগ্রীর ৩য় বর্ষের ছাত্র মো. নুরুল ইসলাম, ঢাকার নিউ মার্কেটের দর্জি কারিগর মো. সোহাগ হাওলাদার, মো. ইউসুফের একমাত্র ছেলে মো. যোবায়ের, মো. আবুল বাসার, মো. সিরাজুল ইসলাম, মিনহাজুল ও মো. মসিউর রহমান।
এর মধ্যে একমাত্র মো. মসিউর রহমান শোন এ্যারেস্টে রয়েছে। জেল গেট থেকে বের হয়ে জেলারের বাসভবনের কাছাকাছি পৌঁছাবার আগেই একটি কালো গাড়ি ও ১টি সাদা রংয়ের হাইএক্স গাড়িতে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ ২ বছর পর জেল থেকে বের হয়ে আসা সন্তানদের গ্রহণের জন্য অপেক্ষমাণ ছিলেন মা-বোন ও পিতা-মাতা। কিন্তু সন্তানদের গ্রহণের আগেই তাদেরকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় পরিবারের সদস্যরা গাড়ির পেছনে দৌড় দিলে জামিনপ্রাপ্তরা ডিবি ডিবি বলে চিৎকার করে কথা বলে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে। এব্যাপারে কোতয়ালী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী করতে গেলে তাদের অভিযোগ রেখে দিলেও তা খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ। গতকাল (রোববার) দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ হওয়া সন্তানদের সন্ধান এবং ফিরিয়ে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে প্রার্থনা জানিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাকি বিল্লাহ’র মা মাহমুদা। এসময় বাকি বিল্লাহর ভাই মোঃ খাইরুল বাসার, মোঃ হাসান, বোন হাফসা, নুরুল ইসলামের পিতা আঃ মন্নান খাঁন, বোন মাহিনুর, সোহাগের পিতা নুরুল ইসলাম ও কোরানে হাফেজ যোবায়েরের পিতা মোঃ ইউসুফ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ২দিনেও সন্তানদের কোন খোঁজ দিতে পারছে না বরিশাল ও ঝালকাঠীর পুলিশ এবং ডিবিসহ আইন শৃংখলা-বাহিনী। এব্যাপারে জামিনপ্রাপ্তদের পরিবারের সদস্যরা জেলারের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি জানান, একমাত্র মসিউর বাদে বাকি ৭জনকে আমরা ছেড়ে দিয়েছি। সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন তোলা হয়, ওদেরকে ছেড়ে দেয়ার পূর্বে কারাগারের ভিতরে রাখা ওই গাড়ি ২টি কাদের ছিল। যে গাড়িতে করে ২ বছর পর হাইকোর্ট থেকে প্রাপ্তদের জেলের বাইরে আসার সাথে সাথে নতুন করে ধরে নিয়ে গুম করা হল।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট নলছিটি থানার মোল্লার হাট ইউনিয়নের খাদেমুল ইসলাম কওমি মাদ্রাসা ও জামে মসজিদে এশার নামাজ পড়তে গেলে তৎকালীন পুলিশ সুপার মজিদ আলি ও নলছিটি থানার ওসি মাসুদসহ একদল পুলিশ সেখান থেকে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী মামলা দায়ের করে। আটককৃত ৮জনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করে। যা পরবর্তী সময়ে ঝালকাঠী জেলা জজ আদালত মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে। একমাত্র সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় দীর্ঘ ২বছরের বেশী জেল হাজতে থাকার পর গত ৭ নভেম্বর হাইকোর্ট জামিন প্রদান করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন