শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হিজাব পরায় নিউইয়র্কে হেইট ক্রাইমের শিকার বাংলাদেশী কলেজছাত্রী ফাহিম

ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত

প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নিউইয়র্ক থেকে এনা : আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ হয়েছে গত ৮ নভেম্বর। নির্বাচনে মুসলিম ও ইমিগ্র্যান্ট-বিরোধী ডোনাল্ড ট্রাম্প সারা বিশ্বকে অবাক করে এবং সব মিডিয়ার জরিপকে ভুল প্রমাণিত করে আমেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় ৪ লাখের বেশি পপুলার ভোট পেয়েও হিলারি পরাজিত হয়েছেন। ইলেকট্রোলার ভোটের মারপ্যাঁচে হিলারিকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। হিলারি পরাজয় মেনে নিয়ে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। এদিকে গত ১২ নভেম্বর হিলারি ক্লিনটন কংগ্রেসকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন এফবিআইর ডিরেক্টর জেমস কমির ই-মেইল নিয়ে মিথ্যাচারের কারণেই তিনি পরাজিত হয়েছেন। অন্যদিকে হিলারি বেশি ভোট পেয়ে পরাজয় মেনে নিলেও নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়াসহ আমেরিকার ডেমোক্র্যাট অধ্যুষিত স্টেটের আমেরিকানরা এই পরাজয় মেনে নিতে পারছেন না। তারা ইলেকট্রোলার ভোট পদ্ধতির সংস্কার দাবি করছেন এবং ট্রাম্প আমাদের প্রেসিডেন্ট নয় বলে ৯ নভেম্বর থেকে টানা ১২ নভেম্বর পর্যন্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। এসব বিক্ষোভ সমাবেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গুলিও করেছে, অনেকে আহত হয়েছে, অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। নিউইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে বিক্ষোভকারীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।
নির্বাচনের আগ থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলিম এবং ইমিগ্র্যান্ট-বিরোধী বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন এবং বলেছিলেন, আমেরিকায় মুসলমানদের আসতে দেয়া হবে না। সেই অবস্থানে তিনি এখনো অনড় রয়েছেন। ডোনাল্ড টাম্প ক্ষমতা গ্রহণ করবেন আগামী ২০ জানুয়ারি। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হবার পর থেকে মুসলিম এবং ইমিগ্র্যান্ট কম্যুনিটিতে এক ধরনের নীরব আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং আমেরিকায় মুসলিমবিরোধী সেন্টিমেন্ট তৈরি হচ্ছে। যার কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হবার চতুর্থ দিনেই হিজাব পরা নিয়ে নিউইয়র্কে হেইট ক্রাইমের শিকার হয়েছেন ১৯ বছরের কলেজ পড়–য়া বাংলাদেশী ছাত্রী ফাহিম নিজাম। তিনি গত ১০ নভেম্বর কিউ ৪৩ বাসে করে কলেজে যাবার পথে হেইট ক্রাইমের শিকার হন। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত আমেরিকার প্রভাবশালী পত্রিকা ডেইলি নিউজের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ফাহিম বাসে করে ম্যানহাটনে হান্টার কলেজে যাচ্ছিলেন। বাসের মধ্যেই দুইজন শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান (স্বামী-স্ত্রী) তার কাছে এসে তাকে চিৎকার করে বলতে থাকে তার মাথা থেকে হিজাব খুলে ফেলার জন্য। তারা ফাহিমের সাথে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকে এবং বলতে থাকে মাথা থেকে বিরক্তিকর এই জিনিস খুলে ফেল। ফাহিম তার হিজাব না খুলেই প্রতিবাদ জানায়। এ ঘটনা সে বাসায় এসেই তার পরিবারকে জানায় এবং পুরো ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। ফাহিমের এ ঘটনা নিউইয়র্কসহ লন্ডনের ডেইলি মিররসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ফাহিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় হবার পরই এ ঘটনা ঘটল। নিউইয়র্কে এর আগে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে।
উল্লেখ্য, ফাহিম নিউইয়র্কের বেলরোজে থাকেন এবং তার বাবা-মা বাংলাদেশ থেকে ইমিগ্র্যান্ট হয়ে আমেরিকায় এসেছিলেন। এদিকে এ ঘটনায় মুসলিম কম্যুনিটিতে ভীতির জন্ম দিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
R'rani ২০ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৩৮ পিএম says : 0
ত্রই ঘটনায় অামি মোটেও বিচলিত বা শংকিত নই . তোমারা অামেরিকাতে কি করো ? অামাদের দেশে যেমন তাদের রুচিসম্মত বিকিনি গ্রহনযোগ্য নয় তেমনি তোমার হিজাবটাও তাদের কাছে পছন্দ না হওয়াটাই স্বাভাবিক.
Total Reply(0)
Md. Azizur ২০ নভেম্বর, ২০১৬, ৯:২৬ পিএম says : 1
হে আল্লাহ মুসলমানদের ইমানকে আপনি হেপাজত করুন
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন