বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের বাকশাপাড়া থেকে নাটাবাড়ি কোনাইপাড়া পর্যন্ত পাকা সড়কের পাশে প্রায় ১২ বিঘা জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন করে লাখ লাখ টাকার টপ সয়েল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এতে করে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক ভেঙে পুকুরে বিলীন হওয়ার পথে।
পাশাপাশি পুকুরের চারপাশের ৪ ফসলী আবাদি জমিতেও ধ্বস সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসীর একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ ধুনটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কামরুজ্জামান রঞ্জু মন্ডল নামে একজনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। খননের যন্ত্রপাতি জব্দ এবং আদালতের কাজে বাধা দেয়ায় আদালত রঞ্জু মন্ডলের ছেলে শাকিলকেও ধরে নিয়ে যান।
এই ঘটনায় কয়েকদিন খননকাজ বন্ধ থাকলেও আবার নতুন করে সেখানে ভেকু মেশিন দিয়ে খননকাজ শুরু হয়েছে। খননকাজের সাথে জড়িত ভূমিদস্যু চক্রটি অভিযোগকারী গ্রামবাসীদের এখন গ্রামছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার বগুড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী গ্রামবাসীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন মো. কামরুজ্জামান মাসুদ।
তিনি বলেন, অবৈধ পুকুর খননের সাথে জড়িত কামরুজ্জামান রঞ্জু মন্ডল, তার অপরাপর সহযোগী হোসেন শহীদ সরোয়ার্দী ও হিটলারুজ্জামান হাকিম বিত্তবান ও প্রভাবশালী। এরমধ্যে হিটলারুজ্জামান হাকিম উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে কর্মরত থাকায় তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের সহজেই প্রভাবিত করেন। তিনি আরও বলেন, যে ১২ বিঘা জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুজ্জামান মন্টুর ২৯ শতাংশ জমি রয়েছে। এই ২৯ শতক ছাড়াও একই মালিকের আরও ৫ একর জমি তারা জবর দখল করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান মন্টু বলেন, ঘটনা সত্য। ভুমিদস্যু চক্রটি পুকুর খননের নামে ইটভাটায় মাটি বিক্রি করেছে ৩৯ লাখ টাকার। এখন খননকৃত জায়গাটিকে জলাশয় দেখিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২ শতাংশ সুদের ৫ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খায়রুল ইসলাম, সমাজসেবী আরিফ হোসেন ও আবু সালেহ মোহাম্মদ বাচ্চু। তারা সবাই ধুনটের বাকশাপাড়া নাটাবাড়ি সড়ক সুরক্ষা, ফসলী জমি ধ্বসে যাওয়া রক্ষা এবং অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের জন্য বগুড়ার ধুনট উপজেলা এবং বগুড়া জেলা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন