অনলাইনের বিভিন্ন পেজে কম দামে বিভিন্ন আকর্ষনীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন দেখে অর্ডার করতো ক্রেতারা। ক্যাশঅন ডেলিভারির নামে আগেই টাকা নিয়ে এস.এ পরিবহনের মাধ্যমে পাঠানো হতো পার্সেল। ক্রেতা পার্সেল গ্রহনের পরে দেখতো তাকে নিম্নমানের ছেঁড়া অব্যবহারযোগ্য কাপড় পাঠানো হয়েছে। পরে অনলাইন পেইজটিতে যোগাযোগ করলে ক্রেতাকে ব্লক করে দেয়া হতো। এভাবে প্রতিদিন ১০০-১৫০ জন ক্রেতাকে ঠকিয়ে মাসে ৩০-৩৫ লাখ টাকা আয় করা একটি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. বাপ্পি হাসান, মো. আরিফুল ওরফে হারিসুল, মো. সোহাগ হোসেন, মো. বিপ্লব শেখ ও নুর মোহাম্মদ। গত রোববার রাজধানীর হাজারীবাগ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ব্যবহার অযোগ্য ও অতি নিম্নমানের পুরাতন ছেড়া শাড়ি, লেহেঙ্গা, থ্রী পিচসহ বিভিন্ন পণ্য-সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
গতকাল সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. রাজীব আল মাসুদ জানান, চক্রটি ৫-৬ বছর যাবত চক্রটি ছেঁড়া অব্যবহারযোগ্য কাপড় পার্সেল পাঠিয়ে মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলো। পার্সেল পাঠাতে তাদের সহযোগিতা করতো কুরিয়ার সার্ভিস এসএ পরিবহনের ৫-৭ জন। কুরিয়ার করতে প্রতিটি পার্সেলে অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে নিতো এসএ পরিবহনের অসাধু ওই সদস্যরা। তাদের সবার নাম পাওয়া গেছে। ডিসি বলেন, ছেঁড়া কাপড় পাওয়ার পর ক্রেতা টাকা ফেরত চাইলে প্রচন্ড দুর্ব্যবহার ও গালিগালাজ করে ব্লক করে দেয়া হতো।
সবাই অল্প টাকার পণ্য কিনে প্রতারিত হওয়ায় লজ্জায় কাউকে জানাতো না, এমনকি থানায় অভিযোগও করতো না। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগিয়ে আসছিলো চক্রের সদস্যরা। তাদের মোট ২১টি ফেসবুকপেইজ শনাক্ত করা হয়েছে। কোনো পেইজে যদি ক্রেতারা তাদের প্রতারণার বিষয়টি কমেন্ট করে জানাতো, তাহলে চক্রের সদস্যরা সেই পেইজ বন্ধ করে দিতো। নড়াইলে থাকা এ চক্রের অন্য সদস্যদের নাম পাওয়া গেছে। তাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে হাজারীবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ডিবি কর্মকর্তা। ঈদকে ঘিরে অনলাইন প্রতারকরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, এটি মনিটরের জন্য আলাদা সেল রয়েছে। তারাই ভালো বলতে পারবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন