ফেসবুকে সুন্দরী নারীদের ছবি বসিয়ে চর্ম ও যৌন সমস্যায় টেলিমেডিসিন চিকিৎসার কথা বলে চটকদার বিজ্ঞাপন দিত একটি চক্র। চক্রটি করোনার সময়কে টার্গেট করে গত দুই বছরে হাজার হাজার রোগীর কাছ থেকে এভাবে অনলাইনে চিকিৎসার ফাঁদে ফেলে অপচিকিৎসার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। তারা জনপ্রিয় চিকিৎসকদের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ফেসবুকে ভুয়া পেজ খুলে বিজ্ঞাপন দিত।
এমন অভিযোগে রাজশাহীর শাহ মখদুম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের দুজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। গ্রেফতাররা হলেন মো. রাশেদ হোসেন প্রান্ত ও তার স্ত্রী মোসা. মৌসুমী খাতুন। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, চারটি মোবাইল সিম, ১৩টি ফেসবুক আইডি ও তিনটি হোয়টাসঅ্যাপ আইডি জব্দ করা হয়।
গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, আবু সাঈদ (৩১) জার্মানভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ইডাব্লিউ ভিল্লা মেডিকার চিফ লিগ্যাল অফিসার। যাতে অ্যাসথেটিক এবং রিজেনারেটিভ বিষয়ে চিৎকিসাসেবা প্রদান করা হয়। তিনি সম্প্রতি একটি ফেসবুক পেজ পর্যালোচনা করে দেখতে পান ফেসবুক আইডিতে ইডাব্লিউ ভিল্লা মেডিকা প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের ডা. তাসনিম খানের নাম পদবি এবং মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে অনলাইনে চিকিৎসার নামে ভুয়া প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ও ভাবমূর্তিক্ষুণ্ন হওয়ায় আবু সাঈদ শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে এই চক্রের সন্ধান পায় গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
হাফিজ আক্তার বলেন, চর্ম ও যৌন সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত প্রকাশ্যে চিকিৎসকদের কাছে পরামর্শ নিতে সংকোচবোধ করেন। এ ধরনের রোগীরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারক চক্রের চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করে। গ্রেফতাররা দেশের খ্যতিমান ও জনপ্রিয় চিকিৎসকদের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ফেসবুকে ভুয়া পেজ খোলে বিজ্ঞাপন দিত। গ্রেফতাররা কখনো চিকিৎসক কখনো চিকিৎসকের সহকারী পরিচয় দিয়ে কণ্ঠ পরিবর্তন করে রোগীদের সঙ্গে কথা বলতেন। কথা বলার পর রোগীদের কাছ থেকে টেলিমেডিসিন সেবার বিনিময়ে মোবাইল ব্যাংকি বিকাশ/নগদ/রকেটে টাকা হাতিয়ে নিতেন। সরাসরি রোগী দেখালে দুই হাজার টাকা ও টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে দেখালে এক হাজার টাকা করে নিতেন তারা। এভাবে প্রতিদিন ৩০-৪০ জন রোগী দেখতেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন