অপরিকল্পিত ও ধ্বংসাত্মক উপায়ে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের আয়োজন বন্ধের দাবি জানিয়েছে নাগরিক প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের সদস্য নেত্রকোণা জেলার দূর্গাপুরে ও ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়ায় কয়েকটি সাদামাটি আহরণস্থল পরিদর্শন শেষে ফিরে এই দাবি জানিয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এই দাবি জানানো হয়। নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন, সংস্কৃতি কর্মী মতিলাল হাজং, আইনজীবী প্রকাশ বিশ্বাস, সাংবাদিক নজরুল কবির, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের নেতা মেইনথিন প্রমীলা প্রমুখ।
সভায় পরিদর্শন দলের সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, সাদামাটি উত্তোলনের ফলে যেসব ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী ও বাঙালি পরিবার বাস্তুচ্যুত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও যথাযথ পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। পরিবেশ-প্রতিবেশগত ভারসাম্য ধ্বংসের প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের সঙ্গে ভারসাম্যহীন উপায়ে খননকাজে ক্ষতিগ্রস্ত জীববৈচিত্রের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। খননের ফলে সৃষ্ট খাদ বা খাদের পানিতে পরে বিভিন্ন সময় শিশুসহ বেশ কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য হুমকি সোমেশ্বরী নদী হতে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনজীবন ও প্রতিবেশের ওপর যেন প্রতিকূল প্রভাব না পড়ে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে জাকির হোসেন বলেন, দূর্গাপুরের যে সৌন্দর্য ছিল তা আর নেই। সাদামাটির পাহাড় আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদ আহরণে স্থানীয়দের জীবন জীবিকার বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। দূর্গাপুরের অবৈধ বালু উত্তোলনের ব্যাপারেও কথা বলতে হবে। প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে নগদ লাভের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, ১০ সদস্যের নাগরিক প্রতিনিধি গত ৮ থেকে ১০ এপ্রিল সরেজমিন দূর্গাপুর ও ধোবাউড়ায় সাদামাটি আহরণস্থল পরিদর্শন করেন। তারা গ্রামে গিয়ে স্থানীয় হাজং, মান্দি ও বাঙালি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর দূর্গাপুর প্রেস ক্লাবে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সাথে মতবনিমিয় করেন। পরে নেত্রকোণা জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন