দেশ দুর্নীতির এক স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সর্বত্রই দুর্নীতি ও অবাধে লুটপাট চলছে। যখন যারাই ক্ষমতায় থাকেন তাদের দোসররাই দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়ে যান। মিলেমিশে লুটপাট করতে থাকেন। এটি দেখার কেউ নেই, প্রতিবাদ করার কেউ নেই। হাওরে বাঁধ নির্মাণে লুটপাট বন্ধের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এ কথা বলেন। বাঁচাও হাওর-বাঁচাও দেশ ও জাতীয় মানবাধিকার সমিতি এ সংগঠন দুটি যৌথভাবে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ৮৫টির বেশি নদ-নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। এতে বাড়ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। পাতালেও মিলছে না পানি, চাষাবাদে ঘটছে পরিবর্তন, তাপমাত্রার পারদ দিন দিনই উপরে উঠছে। এই সময়ে সুনামগঞ্জসহ দেশের হাওর অঞ্চলের কৃষকের মাথায় হাত। যখন ফসল ঘরে তুলবেন তখন পানিতে ভেসে গেছে তা।
পানিতে ফসল ডুবে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, তখন এক শ্রেণির সিন্ডিকেটের মাধ্যমে উন্নয়নের নামে চলে চরম লুটপাট। সাধারণ কৃষক বার বার হয় বঞ্চিত। অথচ রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা তারা অপচয় করে। এভাবে আর কতদিন চলবে। জাতিকে এ নৈরাজ্য থেকে মুক্তি দিতে হবে। ‘বাঁচলে কৃষক, বাঁচবে দেশ’, ‘বাঁচাও হাওর, বাঁচাও দেশ’ Ñএখন আর শুধু সেøাগান নয়, এটি কৃষকের হৃদস্পন্দন।
বক্তারা বলেন, বাঁধ নির্মাণে যারা দুর্নীতি ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার কেউ যদি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তা যদি বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, সঙ্গে সঙ্গে তাকে চাকরিচ্যুতি করতে হবে। পাশাপাশি চাকরি শেষে যে পেনশন পান তা বন্ধ করে দিতে হবে। ঠিকাদারসহ অন্যরা যদি দুর্নীতি করেন, ঠিকাদারের লাইসেন্স কালো তালিকাভুক্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংগঠনের নেতারা বলেন, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের নদ-নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে হবে। বন্ধ খাল সংস্কার করে পুনরায় চালু করতে হবে। নদ-নদী, হাওর-বাওরের অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে। এ বিষয়ে অচিরেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাওরবাসীর পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে বলে জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও সুনামগঞ্জ জেলা জাসদের সভাপতি এনামুজ্জামান চৌধুরী। বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাসদের যুগ্ম সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাসদের যুগ্ম সম্পাদক মির্জা আনোয়ারুল হক, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম Ñবোয়াফের সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়, ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর সভাপতি আবুল হোসাইন প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন