নিউইয়র্ক থেকে এনা : নির্বাচনী প্রচারণায় এবং প্রথম ১০০ দিনের কর্মসূচিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন আমেরিকা থেকে অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের বহিষ্কার করবেন এবং মেক্সিকোর বর্ডারে ওয়াল নির্মাণ করবেন। গত ৮ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম ইন্টারভিউ দিয়েছেন সিবিএস টেলিভিশনকে। সেই ইন্টারভিউতে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় বলেছেন, দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তিনি যারা অপরাধ করেছে এমন প্রায় দুই থেকে তিন মিলিয়ন অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করবেন। মেক্সিকোর বর্ডারে ওয়াল তৈরি করবেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ইন্টারভিউ দিচ্ছেন ঠিক সেই দিনই নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের সামনে ইমিগ্র্যান্টদের স্বার্থ রক্ষায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের বহিস্কারের ঘোষণায় পুরো ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটিতে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশীরাও রয়েছেন।
আমেরিকার নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আগামী ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর আমেরিকায় বসবাসরত প্রায় ৩০ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে আমেরিকা থেকে বহিস্কার করবেন, না হয় জেলে ঢুকাবেন। সিবিএস টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন। সিবিএসর সিক্সিটি মিনিটস অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসী সম্পর্কে বলেন, সন্ত্রাসী, অপরাধের রেকর্ড আছে, দুষ্কৃতিকারী দলের সদস্য ও মাদক বিক্রেতাÑ এমন প্রায় ৩০ লাখ মানুষকে আমেরিকা থেকে বহিস্কার করবো, না হয় জেলে ঢুকাবো। নির্বাচনে জয়লাভ করার পর এটাই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম সাক্ষাতকার। এ সময় তার স্ত্রী মেলানিয়া, দুই কন্যা ইভাকা ও টিফিনি এবং দুই পুত্র এরিখ ট্রাম্প ও ট্রাম্প জুনিয়র তার সাথে ছিলেন।
আমেরিকার অবৈধ অভিবাসীদের একটি বড় অংশ মেক্সিকোর। তাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তিনি সীমান্তে ওয়াল তৈরির কথাও পুনরায় উল্লেখ করেন। নির্বাচনী প্রচারণার খরচ তিনি মেক্সিকো থেকে আদায় করবেন। মেক্সিকো সীমান্তের কিছু অংশে দেয়ালের পরিবর্তে কাঁটা তারের বেড়া দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে তিনি কি তা মানবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু অংশে দেয়াল তোলাই হবে সঠিক পদক্ষেপ। আমি অন্তত তাই মনে করি। তবে নির্দিষ্ট কিছু অংশে কাঁটাতার দেয়া যেতে পারে। হিলারি কিøনটনের বিচার করা হবে কিনাÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাকে আরো চিন্তা করতে হবে। তবে আমার প্রথম কাজ হবে জব সৃষ্টি করা এবং আমেরিকানদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
এদিকে নিউইয়র্কসহ আমেরিকা জুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ১৩ নভেম্বর অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের আমেরিকা থেকে বহিস্কারের ঘোষণা দিচ্ছেন ঠিক সেই সময়ই নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের সামনে ইমিগ্র্যান্ট ও সমকামীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রায় ১৫ হাজার মানবাধিকার কর্মী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সেই বিক্ষোভ সমাবেশে তারা ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার, সমকামীদের অধিকার, নারীদের অধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের সেøাগানে সেøাগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। উত্তাল এই বিক্ষোভকে নিউইয়র্ক পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে সামাল দেয়। এই বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন বর্নের এবং ধর্মের মানুষ অংশগ্রহণ করে। এই বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্য কমিউনিটির লোকজনের সাথে বাংলাদেশীরাও অংশগ্রহণ করেন। ড্রামসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন তাদের ব্যানার নিয়ে অংশগ্রহণ করে। বিক্ষোভ সমাবেশের সেøাগান ছিল, ট্রাম্প আমাদের প্রেসিডেন্ট নন, কারণ তাকে আমরা ভোট দেইনি। ভোটে জিতেছে হিলারি ট্রাম্প নয়, ট্রাম্পকে অবিলম্ভে বিদায় নিতে হবে। ইলেক্টোরাল ভোট পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন