স্টাফ রিপোর্টার
ওলামা লীগসহ বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ বলেছেন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক যে ঔদ্ধত্যমূলক বক্তব্য দিয়েছিলো তার জবাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার এ জবাব এদেশের ৯৫% মুসলমানদেরই মনের কথা। এ বক্তব্যের জন্য আমরা তাকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই। তিনি বলেছেন, এই সব বিতর্কীতদের আগামীতে নমিনেশন দেয়া হবে না। আর রাজ্জাকের বক্তব্য আ’লীগের নয়। তাই আমাদের দাবি হচ্ছে আওয়ামী লীগের মধ্যে থেকে যারা ইসলাম নিয়ে বা ইসলামী বিষয় নিয়ে উস্কানীমূলক বক্তব্য দেয় তাদের সকলকে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। অতীতে যারা এ ধরনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছে তাদেরকেও নমিনেশনের বাহিরে রাখতে হবে।
ওলামা লীগ
ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দ বলেন, সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার বৈধতা নিয়ে করা একটি রিট আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৬ নভেম্বর প্রকাশ হয়েছে।
বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের স্বাক্ষর করা রায়ে বাংলাদেশের বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বৈধ বলে উল্লে¬খ করা হয়েছে।পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে ২(ক) অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়। সেখানেই ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা হয়। এই সংশোধনীতে বলা হয় ‘তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে।’ ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ২(ক) অনুচ্ছেদকে আরো পরিমার্জন করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘২(ক)। প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবে।’ এ কারণে এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করার পর মোসাদ সমর্থিত সংখ্যালঘু আইনজীবী পরিষদের পক্ষে আইনজীবী সমরেন্দ্র নাথ গোস্বামী গত ১২ নভেম্বর রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিষয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছে।
গতকাল এক বিবৃতিতে কার্যকরী সভাপতি হাফেজ আবদুস সাত্তারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এই আপীলের তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম একটি মীমাংসিত বিষয়। এ বিষয়ে আপীলের কোন সুযোগ নেই। যারা আপীল করেছে, তাদের মাদারল্যান্ড ভারতেও রাষ্ট্রীয়ভাবে হিন্দুধর্মকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়। অথচ বাংলাদেশে মুসলমানদের সংখ্যা ৯৫% ও হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের সংখ্যা হচ্ছে ৫%। আর ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা এক চতুর্থাংশেরও বেশি। অর্থাৎ ৩০ কোটি।
তারা বলেন, অনুচ্ছেদে ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মকেও রাষ্ট্রধর্মের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তারপরও কট্টর মুসলিম বিদ্বেষের কারণে তারা এর বিরুদ্ধে পুনরায় আপীল করেছে।
এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং এদেরকে প্রতিহত করতে সকল দ্বীনদার মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাফেজ মাওলানা শাহ আতাউল্ল¬াহ রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, যেই দুষ্টচক্র ভারতে মোসাদ এজেন্ট মেন্দী এন সাফাদির মাধ্যমে প্রোপাগা-া চালিয়েছিলো যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে, সেই একই দুষ্টচক্র মোসাদ সমর্থিত রিচার্ড বেনকিন এবং চিহ্নিত মোসাদ এজেন্ট সালাউদ্দীন শোয়েব চৌধুরীদের পরামর্শে পরিচালিত সংখ্যালঘু আইনজীবী পরিষদের জেনারেল সেক্রেটারি আইনজীবী সমরেন্দ্র নাথ চৌধুরী গত ১২ নভেম্বর রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিষয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছে। সংখ্যালঘু আইনজীবী পরিষদে চিহ্নিত মোসাদ এজেন্ট সালাউদ্দীন শোয়েব চৌধুরী সংশ্লি¬ষ্ট থাকার প্রমাণ। যঃঃঢ়://ধৎপযরাব.রং/ফী৩এী
তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে যারা এ সমস্ত সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা পরিচালনা করে তাদেরকে রাষ্ট্রদ্রোহীতার বিচার করতে হবে।
মাওলানা মাহফুজুল হক
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আছে ও থাকবে। এর বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র এদেশের মানুষ প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক সুযোগ পেলে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করা হবে’ এ বক্তব্য দিয়ে দেশে কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে দেশের জনগণ তা জানে। অথচ এ বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে মীমাংসিত।
ওলামা দল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক মাও. মো. শাহ নেছারুল হক, সহ-সভাপতি মাওলানা রুহুল আমিন, মাওলানা মোজাম্মেল হক, মাওলানা শামসুর রহমান খান বেনু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ক্বারী গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাওলানা সেলিম রেজা, মাওলানা আলমগীর হোসেন, হাফেজ জসিম উদ্দিন, হাফেজ রফিকুল ইসলাম, হাফেজ নুরুল হক প্রমূখ। সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এর রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে সংবিধান থেকে মুছে ফেলার মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শত শত বৎসর থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিমসহ সকল ধর্মের লোক এক সাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার কিছু উস্কানিমূলক বক্তব্য ও দ্বন্দ্বের কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আজ নির্যাতিত। ওলামা দল নেতৃবৃন্দ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন