কংক্রিট আর অট্টালিকার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় খেলার মাঠ দরকার অন্তত ৬১০টি। বর্তমানে মাঠ রয়েছে ২৫৬টি। দুই সিটির ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪১টি ওয়ার্ডেই কোনো খেলার মাঠ নেই। প্রয়োজনীয় খেলার মাঠ না থাকায় রাজধানীতে জন্মনেয়া শিশুরা ঘরে ভিতরে ‘ফার্মের মুরগির’ মতো মানুষ হচ্ছে। এরই মধ্যে ধানমণ্ডির কলাবাগান এলাকায় ‘তেঁতুলতলা’ খেলার মাঠ নিয়ে তোলপাড় চলছে। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে। একদিকে ডিএমপি তথা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী (পুলিশ) অন্যদিকে আওয়ামী লীগ অনুগত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, পরিবেশবাদী, মানবাধিকার কর্মী এবং কলাবাগান এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা। তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন এই মাঠ হলো এলাকার ফুসফুস। শিশুরা খেলাধুলা করেন, মানুষ সকাল বিকেল হাটাহাটি করেন। কিন্তু আইন শৃংখলা বাহিনী বলছে স্থানীয় থানার স্থাপনের জন্য যায়গাটি ২৭ কোটি ৫৪ লাখ ৪১ হাজার ৭১০ টাকা দিয়ে ক্রয় করা হয়েছে। পরিবেশবাদীরা মাঠটি রক্ষায় একদিকে আন্দোলন করছেন; দেনদরবার করছেন। মাঠ রক্ষার পক্ষ্যে আওয়ামী লীগের অনুগত বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত দেশবরেণ্য ৩৬ বুদ্ধিজীবী বিবৃতি দিয়েই নীরব হয়ে গেছেন। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কলা বাগারের ওই যায়গা কখনো খেলার মাঠ ছিল না। তেঁতুলতলা এখন পুলিশের সম্পত্তি।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মাঠ রক্ষার দাবি উপেক্ষা করে রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আগের মতো পুলিশি প্রহরায় এ নির্মাণকাজ চলছে। শুধু তাই নয়, নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাখ্যাও দিয়েছে পুলিশ। তবে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবেশবাদী ও নাগরিক সমাজের নেতারা। গতকাল মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে বৈঠকও করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থপতি ইকবাল হাবিব, মানবাধিকার কর্মী খুশি কবিরসহ তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তেঁতুলতলা মাঠে এসে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান, মাঠ রক্ষা আন্দোলনের প্রতিনিধি স্থপতি ইকবাল হাবীব এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান।
ইকবাল হাবীব জানান, বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খুবই আন্তরিকভাবে মাঠটি রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি মাঠ রক্ষা প্রসঙ্গে আমাদের প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে নির্মাণকাজ বন্ধ করা এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসার আগ পর্যন্ত শিশুরা যেন মাঠে প্রবেশ করতে পারে তার ব্যবস্থা করবেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন শিশুদের খেলার মাঠ দখলের বিষয়ে আমি নিজেও উদ্বিগ্ন। এ ছাড়া প্রতিনিধি দলকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থানা নির্মাণের জন্য বিকল্প জায়গা প্রস্তাব করারও অনুরোধ করেছেন বলে জানান তিনি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তেঁতুলতলা কখনও মাঠ ছিল না, এটা পরিত্যক্ত সম্পত্তি ছিল, সেজন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে থানা নির্মাণের। কলাবাগানে একটা থানা ভবন করা প্রয়োজন। এই জায়গাটা পেয়েছি। এখন যদি মেয়র অন্য একটি জায়গা দেন সেখানে মাঠ হবে। এখানে বরাদ্দ হয়ে গেছে। এখন এটা পুলিশের সম্পত্তি। মন্ত্রী বলেন, যারা আবেদন করেছেন সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চিন্তা করবো কি করা যায়। বিকল্প জায়গা খুঁজে পাওয়া গেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। থানাও মানুষের জন্যই নির্মাণ হচ্ছে।
এদিকে, থানা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে রাজধানীর কলাবাগান তেঁতুলতলা মাঠ শিশু-কিশোরদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মানবাধিকার, পরিবেশ আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক কর্মীরাও। অন্যথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘেরাওসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন স্থাপনের প্রতিবাদে গতকাল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এরপর মাঠের সীমানা ঘেঁষে ১৪টি দেশীয় গাছ রোপণ করা হয়। পাশাপাশি একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।
প্রতিবাদ সমাবেশে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, যারা এখানে খেলে, যারা এ মাঠের প্রকৃত মালিক; তারা এখানে আছে। তারা প্রতিবাদ করছে মাঠ কেন দখল করা হচ্ছে? আমরা সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করছি, সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথাবার্তা হচ্ছে। পুলিশকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা যেখানে-সেখানে, যখন খুশি মাঠ নিয়ে নেবেন, পুলিশ যদি এটা প্রতিষ্ঠিত করে ফেলে তাহলে আর মাঠ থাকবে না। ঢাকা শহরে আমরা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মরে যাওয়ার অবস্থায় আছি। সেখানে যদি মাঠ দখল হয়ে যায়, তাহলে এ এলাকার নতুন প্রজন্ম কোথায় যাবে?
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী কমিটির মহাসচিব নূর খান বলেন, মাঠ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা যখন আন্দোলন শুরু করেছে, নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়েছে, আটক হয়েছে। দেয়াল নির্মাণের মধ্য দিয়ে মাঠ ব্যবহার সীমিত হয়ে যাবে। অনতিবিলম্বে সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত আসুক, এটিকে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার মাঠ হিসেবেই বিবেচনা হোক। কোনো গোষ্ঠীকে যেন না দেওয়া হয়, কোনো থানা বা কোনো স্থাপনা যেন তৈরি না হয়।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার বলেন, থানা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে রাজধানীর কলাবাগান তেঁতুলতলা মাঠ শিশু-কিশোরদের ফিরিয়ে দেওয়া না হলে প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘেরাও করা হবে।
তবে পুলিশ বলছে, রাজধানীর কলাবাগানে ‘তেঁতুলতলা খেলার মাঠে’ নয়, জনস্বার্থে সরকার থেকে বরাদ্দ দেওয়া জমিতেই নির্মাণ করা হচ্ছে কলাবাগান থানা। ডিএমপি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার জমিতে বেআইনিভাবে থানা ভবন নির্মাণ করছে না। বিকল্প খেলার মাঠের ব্যবস্থার বিষয়টি ডিএমপির এখতিয়ারভুক্ত নয়।
এদিকে, ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার থেকে পাঠানে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনস্বার্থে কলাবাগান থানার জন্য ধানমণ্ডি মৌজার ০.২০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইনের সকল বিধি-বিধান অনুসরণ করা হয়েছে।
তবে এলাকাবাসী, বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছেন। কিন্তু এসব প্রতিবাদ, বিবৃতি উপেক্ষা করে যেকোন মূল্যে ওই মাঠে থানার ভবন নির্মাণ করতে চায় পুলিশ। কড়া নিরাপওার মধ্যে মঙ্গলবারও ওই মাঠে ভবনের নির্মাণ কাজ করতে দেখা গেছে রাজমিস্ত্রীদের।
থানার জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলাবাগান থানার জন্য ওই জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক জমির ক্ষতিপূরণ মূল্য বাবদ ডিএমপি কমিশনার বরাবর ২৭ কোটি ৫৪ লাখ ৪১ হাজার ৭১০ টাকার প্রাক্কলণ প্রেরণ করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই টাকার ব্যয় মঞ্জুরী পাওয়া গেছে, জেলা প্রশাসক বরাবর প্রাক্কলিত টাকা চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সরেজমিনে ডিএমপিকে এই জমির দখলভার হস্তান্তর করেছে। গত ২৭ মার্চ ওই জমির নামজারী ও জমাভাগকরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে ডিএমপি থেকে জানানো হয়েছে।
তবে পুলিশের এই যুক্তি ও দাবি মানতে নারাজ এলাকাবাসী। তারা বলছেন, পুলিশ জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র ঠেকিয়ে জনগণের অধিকার হরণ করতে চাচ্ছে। একপ্রকারে জোর করে তেঁতুলতলা মাঠে ভবন নির্মাণ করতে চাচ্ছে। সন্ত্রাসী কায়দায় ও জোরজবরদস্তি করে ভবন নির্মাণ করার অনুমতি রাষ্ট্র পুলিশকে দেয়নি। যে এলাকার বাসিন্দাদের আইনী সুরক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে থানা নির্মাণ করা হচ্ছে, সে এলাকার মানুষ যদি সেটি না চায় তাহলে এভাবে থানা নির্মাণ করা সরকার ও সংশ্লিষ্টদের ঠিক হবে না। স্থানীয় বাসিন্দা অনিক বলেন, সোমবার ১২টি মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে এই মাঠে মানববন্ধন করা হয়েছে। সংগঠনের নেতারা মাঠে থানার ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে ও মালামাল নিয়ে যেতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তারা তা না করে ভবনের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজমিস্ত্রীরা কাজ করে যাচ্ছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কলবাগান থানার ১৫ জন পুলিশ সদস্য মাঠে অবস্থান করছেন। নির্মাণ কর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। ওপরের নির্দেশ অনুযায়ী তারা এখানে অবস্থান করছেন এবং তদারকি করছেন বলে জানান তারা। দেখা যায়, তেঁতুলতলা মাঠ কম্পাউন্ডে দেয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। রাস্তার পাশে রাখা হয়েছে বালি-ইট-সুড়কি। দেয়াল নির্মাণের জন্য রডের ভিম করে রাখা হয়েছে। পরে দেয়াল নির্মাণের জন্য বালি সুড়কি মিকসড করে তৈরি করা হবে দেয়াল।
রাজমিস্ত্রী মো. বুলবুল বলেন, সকাল ৮টার দিকে তারা কাজে আসেন। ইতিমধ্যে তারা পিলারের রড দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। গতকাল থেকে তারা পিলার ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেছেন।
মাঠ রক্ষার আন্দোলনে থাকা সৈয়দা রত্না বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। আমি আশাবাদী, এই মাঠটি রক্ষা পাবে। এই মাঠ রক্ষা পেলে আমার আন্দোলন সফল হবে।
রাজধানীর পান্থপথের উল্টো দিকের গলির পাশে একটি খোলা জায়গা তেঁতুলতলা মাঠ হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় শিশুরা সেখানে খেলাধুলা করে। পাশাপাশি মাঠটিতে ঈদের নামাজ, জানাজাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান হয়। এই মাঠে কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই এর প্রতিবাদ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাঠটি রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী গত ৪ ফেব্রুয়ারি পান্থপথের কনকর্ড টাওয়ারের সামনে মানববন্ধন করেন। ‘কলাবাগান এলাকাবাসী’র ব্যানারে আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে স্থানীয় শিশু-কিশোর ও স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নেন। এতে মানববন্ধনের সংগঠকদের অন্যতম ছিলেন সৈয়দা রত্না। এর প্রতিবাদ করায় গত রোববার ওই এলাকার বাসিন্দা সৈয়দা রত্না ও তার কলেজপড়ুয়া ছেলেকে ধরে নিয়ে প্রায় ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে রেখে মধ্যরাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি শিশুদের খেলার মাঠে থানা ভবন নির্মাণ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন মানবাধিকারকর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
নগর-পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, একটি আধুনিক শহরে প্রতি আধা বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য একটি করে খেলার মাঠ প্রয়োজন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আয়তন ৩০৫ দশমিক ৪৭ বর্গকিলোমিটার। সে হিসাবে ঢাকার দুই সিটিতে মাঠ দরকার অন্তত ৬১০টি। কিন্তু ঢাকার দুই সিটিতে খেলার মাঠ রয়েছে ২৫৬টি। এসব মাঠের আয়তন ২০৯ দশমিক ১২ একর। নগর-পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, আয়তন বাদ দিয়ে জনসংখ্যা বিবেচনায় নিলে ঢাকায় আরও বেশিসংখ্যক খেলার মাঠ প্রয়োজন। রাজধানীর জন্য করা ড্যাপের খসড়ায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে ১২ হাজার ৫০০ মানুষের জন্য একটি করে খেলার মাঠ প্রয়োজন। ঢাকার দুই সিটিতে প্রায় ১ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ বাস করে। সে হিসাবে ঢাকায় মাঠ দরকার ১ হাজার ৪৬৬টি।
মাঠে খেলাধুলার সুযোগের অভাবে বর্তমান প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন বিশেজ্ঞরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালমা বেগম বলেন, ঢাকা শহরে খেলাধুলার মাঠের অভাব রয়েছে। আর খেলাধুলা না করায় তরুণ প্রজন্ম বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। তাই তরুণ প্রজন্মের জন্য লেখাধুলার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
ঢাকা শহরের খেলার মাঠ নিয়ে ২০১৯ সালে নগর-পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) একটি গবেষণা করেছিল। ওই গবেষণার তথ্য মতে, দুই সিটি সরকারি-বেসরকারি মিলে ২৩৫টি খেলার মাঠ আছে। এর মধ্যে ১৪১টি রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মালিকানায়, কলোনির মাঠ আছে ২৪টি, ঈদগাহ মাঠ আছে ১২টি। ১৬টি সরকারি মাঠ বিভিন্নভাবে দখল হয়ে গেছে। এর বাইরে মাত্র ৪২টি মাঠ আছে, যেগুলো সবাই ব্যবহার করতে পারে। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন