শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ডায়রিয়ার প্রকোপ, শিগগির আসছে ৭৫ লাখ টিকা

রংপুর-জামালপুরে হচ্ছে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৪ এএম

মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব

রংপুরে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি এবং জামালপুরে শেখ হাসিনা পল্লী উন্নয়ন একাডেমি হচ্ছে। এজন্য দু’টি একাডেমির আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী ১৫ মে’র মধ্যে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশকে ৭৫ লাখ কলেরার টিকা দিচ্ছে বলেও উঠে এসেছে আলোচনায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, দুটো আইন একই জিনিস। সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের পল্লী উন্নয়ন ও সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে প্রাইভেট সেক্টর বিশেষ করে ক্ষুদ্র উদ্যোগকে আরও কার্যকর করার জন্য বার্ড (কুমিল্লার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি) ও আরডিএ’র (পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়া) আদলে আরও কিছু একাডেমি প্রয়োজন। কারণ, যেভাবে কাজ বেড়েছে, তাতে এই দুটি একাডেমি পর্যাপ্ত নয়। এজন্য দুটি আইন নিয়ে আসা হয়েছে। দুটি আইনই একই রকম।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দুটি আইনের খসড়ায় ২৩টি করে ধারা রয়েছে। এই আইনের মাধ্যমেই একাডেমি দুটি প্রতিষ্ঠিত হবে। এগুলো বার্ড এবং আরডিএ’র আদলেই পরিচালিত হবে। একটা বোর্ড থাকবে। কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে বোর্ড আইন, বিধি ও সরকারের নির্ধারিত নির্দেশনা অনুসরণ করবে। ২১ সদস্য বিশিষ্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকবেন পদাধিকার বলে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী।
ভাইস-চেয়ারম্যান হবেন পদাধিকার বলে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব। সদস্য সচিব থাকবেন একাডেমির মহাপরিচালক। একাডেমির কাজ হবে মূলত সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। কিছু কিছু পাইলট প্রজেক্ট করা। পল্লী উন্নয়ন ও এ সংক্রান্ত বিষয়ে তারা ডিপ্লোমা দেবে, সার্টিফিকেট কোর্স করবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন বোধে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাবোর্ডের সঙ্গে তারা এফিলিয়েটেড থাকবে।

খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, প্রফেশনাল ট্রেনিংগুলো তারা করাবে। পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক অনেক প্রশিক্ষণের বাইরেও বিভিন্ন ক্যাডারের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংগুলো এসব একাডেমিকে সম্পন্ন করতে হয়েছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় জিনিস থাকবে গবেষণার কাজ। গবেষণা হবে তাদের মৌলিক বিষয়। একই সঙ্গে তাদের কাজ হবে নতুন নতুন পাইলট প্রজেক্টের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রযুক্তি বা কর্মসূচি বা কার্যক্রম ভালো করে করা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তাদের দায়িত্ব থাকবে ব্যাপক গবেষণা করা, পাইলট প্রজেক্ট করা, সরকারের বিভিন্ন সক্ষমতা বাড়ানোর ভেন্যু হিসেবে কাজ করা। মাঠ পর্যায়ের কন্ট্রাক্ট বডি হিসেবে সেগুলোর কার্যকারিতা কতটুকু হবে সেই বিষয়ে পরীক্ষা করা।

তিনি বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী প্রতি চার মাসে বোর্ডের একটি মিটিং হবে। চেয়ারম্যান এগুলো ঠিক করে দেবেন। সরকার যুগ্মসচিব বা এর ওপরের কোনো কর্মকর্তাকে নির্ধারিত শর্তে ডিজি নিয়োগ দেবে। কর্মচারীদের নিয়োগ বোর্ডের নিয়োগবিধি অনুযায়ী হবে। একটা তফসিলি ব্যাংকে একাডেমির তহবিল থাকবে। এরপর যশোরেও হয়তো একটা পল্লী উন্নয়ন একাডমি হবে।

তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা বৈঠকে নির্ধারিত আলোচনার বাইরে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান কলেরা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। এটা কেন হলো, এটা আমিও ব্যক্তিগতভাবে ১০ থেকে ১২ দিন ধরে ট্র্যাক করছি। আইসিডিডিআরবি, আইইডিসিআর, ডিজি হেলথ তারপর ওয়াসা, তাদের সাথে আমি ব্যক্তিগভাবে কথা বলেছি। আসলে আমরা যেটা দেখলাম, ঢাকাতে গত ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে সম্ভবত এ রকম ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায়নি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যখন ড্রাই সিজনে পানির খুব অভাব হয় তখন বরিশালের উপক‚লীয় এলাকায় ডায়রিয়া হতো। এখানেও হয়েছে, এর কয়েকটি কারণ আমরা খুঁজে বের করেছি। বিষয়গুলো কেবিনেটেও আলোচনা হয়েছে। আমরা চেক করে দেখলাম, ওয়াসা যে পানি দেয়, সোর্সে কোথাও ব্যাকটেরিয়া নেই। কোনো সোর্সেই ব্যাকটেরিয়া নেই। অনেক জায়গায় লিক আছে। এখন মানুষ কী করছে, লাইন নিজেরা কেটে পাম্প বসিয়ে পানি টেনে নিয়ে আসছে। এখন যেখানে কাটছে সেখানে তো লিক থেকে যাচ্ছে। সেখান দিয়ে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করছে। এটা অন্যতম একটা কারণ।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আসলে সব জায়গাতেই ডায়রিয়া হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় এবার একটু বেশি হলো। আরেকটি বিষয় যেটা বিশেষজ্ঞরা আমাদের বলেছেন, কয়েকটি জায়গায় তারা পানি টেস্ট করে দেখেছেন, ক্লোরিন কম আছে। এটাও এই পরিস্থিতির একটি বড় কারণ। এটা সাথে সাথে ওয়াসাকে পয়েন্ট আউট করার ফলে তারা গিয়ে ক্লোরিন বাড়িয়েছে, এটা এখন ঠিক হয়ে গিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ডবিøউএইচও (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন (৭৫ লাখ) কলেরা ভ্যাকসিন দেবে। এটার দুটো ডোজ নিলে ৩ বছর পর্যন্ত কলেরা বা ডায়রিয়া থেকে নিরাপদ থাকা যাবে। এটা মে মাসের ১০ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে চলে আসবে। আরেকটি বিষয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, মানুষ ট্যাংকগুলো পরিষ্কার করে না। এই রিজার্ভারগুলো ৩ মাস বা ৬ মাস পর পরিস্কার না করলে ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যায়। এটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। সবাইকে একটু মোটিভেট করতে হবে। ওয়াসাকে বলা হয়েছে, আমরা পিআইডিকেও বলে দিচ্ছি, তারা এখন থেকেই ম্যাসিভ প্রোমোশন ক্যাম্পেইন করবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদেরকে সউদী আরব, কুয়েত, কাতার থেকে জানানো হয়েছে, তোমাদের লোকজন যারা আসে, তাদের অনেকের মধ্যে আমরা ডায়রিয়ার জীবাণু পাচ্ছি। গ্রামের পানিতে কিন্তু ব্যাকটেরিয়া নেই। আমাদের টেকনিক্যাল লোকজন যেটা বলছে, যারা বিদেশে যান তারা এয়ারপোর্টের আশেপাশে ২/৩ দিন থাকেন, ছোটখাটো হোটেলগুলোতে। আমরা গত ১০ থেকে ১২ দিন ধরে এরইমধ্যে ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিয়েছি, এখন তারা অপারেশন চালাচ্ছেন। ওয়াসার টিম গিয়ে দেখছে, হোটেলের পানিগুলো কেমন। আক্রান্তের একটি বড় অংশ কিন্তু যারা বাইরে খায়, মেসে খায়, তারই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। বাসার লোকেরা কম আক্রান্ত হচ্ছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন