দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাতে ইবাদতের পর গত শুক্রবার ছিল এই রমজান মাসের শেষ জুমুআর দিন। তবে ঈদের বাকি আরো এক কিংবা দুইদিন। মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ঘিরে চলছে সব বয়সী মানুষের কেনাকাটা। একই সঙ্গে জমে উঠেছে রাজধানীর আতর, টুপি ও জায়নামাজের বাজারও। আতর-টুপিতে ক্রেতাদের চাহিদা থাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা। করোনার কারণে দুই বছর তেমন ব্যবসা করতে না পারলেও এবার সংকট কেটে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে মনে করছেন তারা।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেট, গুলিস্তান, সদরঘাট এলাকায় আতর-টুপির দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে তুর্কি, ভারত, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও চীন থেকে আমদানি বিভিন্ন পণ্য। পাশাপাশি এখন দেশের উৎপাদিত সামগ্রীও পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা, রুচি ও পছন্দের বিষয় গুরুত্ব দিয়ে রাখা হচ্ছে আতর, সুরমা, তসবি, জায়নামাজ,টুপির মতো জিনিসগুলো।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হারামাইন, আল-নোইম, সুইস, আহলান, কোবরা, ফারহান, গুলে-লালা, কস্তুরিসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের আতর বিক্রি হচ্ছে। আতরের মধ্যে আছে রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন সুগন্ধি। ৫০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা দামের আতর বিক্রি হচ্ছে। কস্তুরি অর্থাৎ মেশক আম্বার বিক্রি হচ্ছে প্রতি মিলি চার হাজার টাকায়। ব্যবসায়ী ইয়াছিন জানান, কম দামের আতরের মধ্যে দুবাইয়ের হারামাইন আতর প্রতি ১৫ মিলিগ্রাম ৪৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সউদী আল রিহাব কোম্পানির ৬ মিলিগ্রাম ১৮০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়, ভারতের আল নাঈম কোম্পানির ৮ মিলিগ্রাম বোতলের আতর ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশীয় ফারহান কোম্পানির আতর ৬ মিলি ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়, আলিফ কোম্পানির আতর ১৫০ টাকায় থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দোকানগুলোতে দেশীয় টুপির পাশাপাশি তুর্কি, পাকিস্তান, চায়না, ইন্ডিয়ান টুপি রয়েছে। পাকিস্তানি টুপি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায়, কাশ্মিরি টুপি ২০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায়, জিন্নাহ ও নেয়ামত টুপি ১৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায়, কাজ করা টুপি ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায়, স্টোন টুপি ১১ হাজার টাকা থেকে ১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে টুপি বিক্রেতা আমান জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় টুপি আজ বেশি বিক্রি হয়েছে। টুপির দোকানী আবুল কালাম বলেন, এখন কিছু মাল বিক্রি হচ্ছে। এতোদিন তেমন কাস্টমার ছিলো না। আর মাত্র তিনদিন বাকি আছে,তারপর আরো বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছি। সবকিছুর দাম বাড়লেও আতর ও টুপির দাম তেমন বাড়েনি।
জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের। তসবি রয়েছে ৫০ থেকে ৬০০ টাকার। এ ছাড়া দেখা যাচ্ছে হরেক রকমের সুরমাদানি। সুরমাসহ একসঙ্গে ২০০ থেকে হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের এই সামগ্রী।
বায়তুল মোকাররম মার্কেটের জায়নামাজ বিক্রেতা খায়রুল ইসলাম বলেন, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রকার জায়নামাজ আছ। সাইজ ও প্রকারভেদে আলাদা আলাদা দাম আছে। সারাবছর তো তেমন বিক্রি হয় না, কিন্তু রমজান আসলে একটু বেশি বেচাকেনা হয়। তবে যেমন আশা করছিলাম বিক্রি হবে তেমন বিক্রি নাই। আর মাত্র তিনদিন বাকি আছে ঈদের কিন্তু সেই তুলনায় বিক্রি কম।
টুপি ও আতর কিনতে আসা ৫০ বছর বয়সী কাসেম মিয়া বলেন, আতর ও টুপি কিনতে আসছি, কিন্তু দাম চায় বেশি। আতরের দাম অনেক বেশি চায়। কাঁচা বেলির আতর কিনবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন