স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের সংসদীয় ইতিহাসে প্রথমবারের মত বিদেশি প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম বিল চূড়ান্ত করার সময় চারজন বিদেশি প্রতিনিধি উপস্থিত হয়ে তাদের মতামত প্রদান করেন। অনেকটা চাপে পড়ে সংসদীয় কমিটি বিদেশিদের ডাকতে বাধ্য হয়েছেন বলে সংসদ সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির ৩৩তম বৈঠকের কার্যপত্র থেকে বিদেশি প্রতিনিধিদের উপস্থিতির বিষয়টি জানা গেছে।
বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম বিল, ২০১৬-এর উপর মতামত দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, কানাডার হাইকমিশন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশন (আইএলও)। সংসদীয় কমিটির গত বৈঠকে তারা প্রতিনিধি পাঠান এবং বিলের উপর মতামত প্রদান করেন।
চলতি বছরের এপ্রিলে ইপিজেডের শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নিয়োগ, মালিক ও শ্রমিকের সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, মজুরি পরিশোধ, কার্যকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের ক্ষতিপূরণ, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে বিধান প্রণয়ন এবং শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম বিল-২০১৬ নামে সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। পরে বিল দুটি অধিকতর যাচাই-বাছাই করে সংসদে রিপোর্ট দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠিয়ে দিয়েছেন স্পিকার। কমিটির বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে পাঠানো ডেভিট মাইকেল বলেন, বাংলাদেশে টেকসই গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাচ্ছে। ইপিজেড শ্রম বিলটি পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু বিলে আইএলও সংশ্লিষ্ট বিষয়টি সঠিকভাবে বিবেচিত হয়নি।
এছাড়া স্টেক হোল্ডার ছাড়াও লেবার ইউনিয়ন এবং শিল্প মালিকদের সঙ্গে আলোচনার তাগিদ দেন এবং আইএলও’র পরামর্শ অনুযায়ী ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডে উন্নীত করার সুপারিশ করেন তিনি। একইসঙ্গে কানাডীয় প্রতিনিধিও একই পরামর্শ প্রদান করেন।
কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, এটিই হয়তো প্রথম দৃষ্টান্ত যে, কোনো বিলের উপর সংসদীয় কমিটিতে বিদেশি প্রতিনিধির উপস্থিতি। বিলটি বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য ও শ্রম সংশ্লিষ্ট হওয়ায় কমিটি তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির এক সদস্য জানান, যুক্তরাষ্ট্রেও এসব নিয়ম নেই। অথচ বাংলাদেশে এখন তারা এসব প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন। অনেকটা আন্তর্জাতিক মহলের চাপে পড়েই তাদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। তবে তাদের যুক্তিযুক্ত সব সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সৈনগুপ্তের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির সদস্য তাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুল মতিন খসরু, বেগম সাহারা খাতুন, শামসুল হক টুকু, তালুকদার মো. ইউনুস ও সফুরা বেগম । এছাড়া বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন