শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কাউন্সিলে ‘বিপর্যয়’ কাটিয়ে উঠবে বিএনপি : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:০৯ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে বিএনপি ‘বিপর্যয়’ কাটিয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বোরবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কাউন্সিলের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় একথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ৬ষ্ঠ কাউন্সিলকে সামনে রেখে নয়া পল্টনের কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে নেতাকর্মী-সমর্থকদের ভিড় বেড়ে গেছে। সাব-কমিটিগুলো কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, আমরা এক প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে এসব কাজ করছি। তারপরও আমরা আশা করি, কাউন্সিল সফল করতে পারব। সরকারের নির্যাতনের কারণে আমাদের দল যে সঙ্কট ও বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছিল, এই কাউন্সিলের মাধ্যমে আমরা তা থেকে বেরিয়ে আসব।
১৯ মার্চ কাউন্সিলের জন্য রাজধানীর ৩টি জায়গা চেয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন করা হলেও এখনও কোনও ভেন্যু ঠিক হয়নি বলে জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তিনি বলেন, ৩টি জায়গার মধ্যে বসুন্ধরা সম্মেলন কেন্দ্র চেয়ে আবেদন নাকচ করেছে কর্তৃপক্ষ। শেরে বাংলানগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সম্পর্কে এখনও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। আমরা আশাবাদী, এই সম্মেলন কেন্দ্রটি পাব। এটা পেলে আমাদের জন্য সব দিক থেকে ভাল হয়। তবে সেখানে না হলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন আমাদের শেষ পছন্দ; বলেন ফখরুল।
জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কাউন্সিলে প্রশাসনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ার অভিযোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তিনি বলেন, আমরা জেলা-উপজেলায় কাউন্সিল করতে গিয়ে প্রচ- বাধার মুখে পড়ছি। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের হল দিচ্ছে না। কাউন্সিল করতে পুলিশ অনুমতিও দিচ্ছে না। বহু জায়গাতে আমরা ‘ওপেন স্পেসে’ সম্মেলন করতে পারিনি, ক্লোজড ডোর কক্ষে করেছি। তারপরও আমরা এরকম প্রতিবন্ধকতার মধ্যে কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
ফখরুল বলেন, অনেক জেলা ও উপজেলায় কাউন্সিল হয়ে গেছে। এই কাজটা খুব সুন্দর করে হচ্ছে যে, প্রতিটি উপজেলাতে ইউনিয়ন পর্যন্ত এই কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে আমাদের দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমটা অত্যন্ত বেড়েছে। এটার খুব প্রয়োজন ছিল।
জাতীয় কাউন্সিলে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ভালো করতে হলে দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের কাউন্সিল সুষ্ঠুভাবে হতে হবে। জেলা কমিটির কাউন্সিল অনুষ্ঠানে সারাদেশে কেন্দ্রীয় নেতারা সফর করছেন বলেও জানান তিনি।
দলের চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের নির্বাচন কমিশন কাজ শুরু করেছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, একটি কুচক্রী মহল বেশ কিছু দিন ধরে বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের মতো বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের একটা চেষ্টা করে আসছে।
বিএনপিকে ভাঙার ষড়যন্ত্রের চেষ্টার সঙ্গে তার জড়িত থাকার ইঙ্গিত করে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফখরুল বলেন, একটি কুচক্রী মহল ১/১১ থেকেই বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করে আসছে। এর মূল উদ্দেশ্য রাজনীতির যে চর্চা রাজনৈতিক দলগুলো যেন এখানে টোটালি ফাংশন করতে না পারে সেটার চেষ্টা করা। আরেকটা চেষ্টা আছে, সত্যিকারের রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম কথাবার্তা বলে রাজনীতিকে আরও কুলসিত করার চেষ্টা করা।
তিনি বলেন, এটা টোটালী অনৈতিক। যারা এটা লিখছেন, তারাই বা কেন লিখছেন? কারও সঙ্গে কথা না বলে, মতামত না নিয়ে। এটা আমি বুঝি না। এটা কোন ধরনের সাংবাদিকতা প্রশ্ন করে ফখরুল বলেন, সে সম্পর্কে আমার ধারণা নেই। এ ধরনের নিউজ করে আপনারা কাকে সহায়তা করছেন। সহায়তা করা হচ্ছে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধ শক্তিকে। একটি দলের অভ্যন্তরীণ সোকল্ড (তথাকথিত) সমস্যাগুলো নিয়ে, যার কোন ভিত্তি নেই; এরকম প্রতিবেদন করা হয় সেটা খুবই দুঃখজনক।
তিনি বলেন, একটি কুচক্রিমহল তারা চেষ্টা করছে। বিএনপির ব্যাপারে এ চেষ্টাটা আরও বেশি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের সিনিয়র নেতাদের কিভাবে দূরত্ব সৃষ্টি করা যায়, সেজন্য কিছু কিছু কল্প কাহিনী তৈরি করা হচ্ছে। তৈরি করে সেটা আবার প্রচার করা হচ্ছে। আমরা এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নই। বিএনপি সম্পর্কে এটা বরাবরই করে আসা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বিশেষ করে পত্রিকার কাটতির জন্য আপনারা এগুলো বড় বড় করে ছাপছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রকে একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রত্যেকেরই নিজ নিজ জায়গায় থেকে দায়িত্ব রয়েছে। সবচেয়ে বড় দায়িত্ব মিডিয়ার। যেটা সর্বজন স্বীকৃত। সেই মিডিয়া ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। আমরা এটাও প্রত্যাশা করি যে, গণতন্ত্রকে যারা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়, দেশে সুষ্ঠু রাজনীতি আনতে চায়, যারা সুষ্ঠু রাজনীতি করতে চায়, রাজনীতিকে সামনে আনতে চায় তাদের ব্যাপারে, সেই দলগুলোর ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা দরকার। সেভাবেই কাজ করা উচিৎ। এটা সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রত্যাশা।
বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয় ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর। ৩ বছর পর পর কাউন্সিল অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও ৬ বছরের বেশি সময় পর দলটির ৬ষ্ঠ কাউন্সিল হতে যাচ্ছে। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের বিবৃতি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল হককে গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল এক বিবৃতিতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সারাদেশে বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের অংশ হিসেবেই জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হেনস্তা করার অপকৌশল হিসেবেই নিরবচ্ছিন্নভাবে এ ধরনের অকপকর্ম সংঘটিত করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তিনি অবিলম্বে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তার নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান। রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন