শামসুল ইসলাম : সউদী-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক হজ চুক্তি (১৪৩৭ হিজরি) গতকাল রোববার জেদ্দায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে কোটা অনুযায়ী ১ লাখ ১ হাজার ৭শ’ ৫২ জন হজযাত্রী হজব্রত পালনের লক্ষ্যে সউদী আরবে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার বাকি সব বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন। সউদী সরকার এ বছর থেকে প্রত্যেক হজ এজেন্সি’র সর্বনিম্ন কোটা ৫০ জনের পরিবর্তে ১৫০ জন সর্বনিম্ন কোটা বাধ্যতামূলক করেছে। জেদ্দায় সউদী হজ মন্ত্রীর কার্যালয়ে দ্বিপাক্ষিক হজ চুক্তিতে সউদীর পক্ষে স্বাক্ষর করেন সউদী হজমন্ত্রী ড. বন্দর বিন মোহাম্মদ বিন হামজা হাজ্জার। আর বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আব্দুল জলিল, ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী এমপি, রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন নজরুল ইসলাম, জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল এ কে এম শহিদুল করীম, মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ মিশনের কাউন্সেলর হজ আসাদুজ্জামান ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শহিদুজ্জামান।
হজ চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮শ’ ৬৮ জনের কোটা চাওয়া হয়েছিল। চলতি বছর নির্ধারিত কোটার চেয়ে ১২ হাজার ১শ’ ১৬ জনের কোটা বৃদ্ধির প্রস্তাব লিখিতভাবে পেশ করার পরামর্শ দিয়েছেন সউদী হজমন্ত্রী। যদি সউদী বাদশা অনুমোদন দেন তাহলে পরবর্তীতে হজযাত্রীর কোটা বাড়ানো হবে। ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান প্রত্যেক হজ এজেন্সি’র সর্বনিম্ন কোটা ১৫০ জনের সংখ্যা পূর্বের ন্যায় ৫০ জনের নির্ধারণের অনুরোধ জানান।
জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ হজ মিশনের কাউন্সেলর হজ আসাদুজ্জামান গতকাল টেলিফোনে ইনকিলাবকে এ তথ্য জানিয়েছেন। কাউন্সেলর হজ বলেন, বাংলাদেশের প্রকৃত হজযাত্রীর কোটা হচ্ছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭শ’ ৯৮ জন। সউদী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০% কোটা কমিয়ে গত বছরের হজযাত্রীর কোটাই চলতি বছর বহাল রাখা হয়েছে। গত বছর বিশেষ ব্যবস্থায় সউদী সরকার অতিরিক্ত আরো ৫ হাজার হজযাত্রী’র কোটা বাড়িয়েছিল। হজ চুক্তি অনুযায়ী ইলেট্রিক পদ্ধতিতে হজ ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। প্রত্যেক হজ এজেন্সিকে মক্কায় ব্যাংক একাউন্ট খুলতে এবং ক্যাটারিং সার্ভিসের মাধ্যমে হজযাত্রীদের খাবার সরবরাহ করতে হবে। হজ চুক্তি অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বাংলাদেশী ওমরাহ সঙ্কট নিরসন করে তা অবিলম্বে চালুর অনুরোধ জানান। সউদী হজমন্ত্রী বলেন, সউদী সরকার বাংলাদেশের ওমরাহ ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এখন আমাদের কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে তা সম্পন্ন করেই ওমরাহ শুরু হবে। মক্কা থেকে হাবের সভাপতি মো. ইব্রাহিম বাহার ও মহাসচিব শেখ আব্দুল্লাহ টেলিফোনে জানান, সউদী-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক হজ চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। হাব নেতৃদ্বয় বলেন, প্রত্যেক হজ এজেন্সি’র সর্বনিম্ন ৫০ জনের কোটার পরিবর্তে নতুন করে সর্বনিম্ন ১৫০ জন বাধ্যতামূলক করায় অনেক হজ এজেন্সিই হজের কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না। বাংলাদেশ হজযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আলহাজ এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল-নাসের এক বিবৃতিতে সউদী-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক হজ চুক্তি সম্পন্ন হওয়ায় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে আগামী ২/১ দিনের মধ্যে সউদী ওমরাহ মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশী ওমরাহ সঙ্কট নিরসনের আহ্বান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন