বরগুনার পাথরঘাটায় ক্লিনিক ম্যানেজার মনিরুজ্জামানের চিকিৎসায় একদিন বয়সী নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই নবজাতকের ফুপা খসরু মিয়া এ অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানা গেছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার হাসপাতাল সড়কের পাথরঘাটা সৌদি প্রবাসী ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। নবজাতকটি উপজেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের রুহিতা এলাকার সৌদি প্রবাসী আবু সালেহের সন্তান।
সরেজমিনে জানা গেছে, পাথরঘাটা সৌদি প্রবাসী ক্লিনিকে চিকিৎসক বশির আহমেদ গত সোমবার সিজারিয়ান অপারেশন (অস্ত্রোপচার) করে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরে ম্যানেজার মনিরুজ্জামান ব্যবস্থাপত্র লিখে নবজাতক ও তার মায়ের চিকিৎসা দেন এবং নবজাতককে অক্সিজেন লাগান। পরে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নবজাতককে স্যালাইন দেওয়ার জন্য অক্সিজেন খুলে প্রায় আধাঘণ্টা রেখে দেন মনিরুজ্জামান এবং ক্যানোলা পরানোর চেষ্টা করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ক্লিনিকের এক কর্মচারী জানান, মূলত আমাদের এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন ম্যানেজার স্যার। আমাদের ধারণা এই নবজাতকের অক্সিজেন খুলে রাখার জন্যই তার মৃত্যু হয়েছে। যখন নবজাতকের অবস্থা খারাপ হয়েছে তখন বশির স্যারকে বলা উচিত ছিল। তা না করে তিনিই চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
ওই শিশুর ফুপা খসরু মিয়া জানান, আমার শ্যালকের স্ত্রী মারিয়া আক্তারের প্রসব ব্যথা শুরু হলে তার চিকিৎসার জন্য পাথরঘাটা সৌদি প্রবাসী ক্লিনিকে নিয়ে আসি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ম্যানেজার মনির জানান, মারিয়ার সিজার করানো লাগবে। এর পর সিজার করালে নবজাতক অসুস্থ তাকে ইনকিউবেটরে রেখে দ্রুত বিল দিতে বলেন। বিল দিতে দেরি হওয়াতে আমার সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার শুরু করে দেন। পরে আমি টাকা দিয়ে দেই। আজ বাচ্চা অসুস্থ হলে ম্যানেজারই তার চিকিৎসা দেন। ক্লিনিকে চিকিৎসকের কাছে রোগীকে নিয়ে এলে ম্যানেজার চিকিৎসা দেন এটা কেমন ক্লিনিক। আমরা এর প্রতিকার চাই, আমাদের শিশুর মতো যেন এরকম আর না হয়। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা সৌদি প্রবাসী ক্লিনিকের ম্যানেজার মনিরুজ্জামানের কাছে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ক্লিনিকের পার্টনার নিরু জানান, ওই শিশুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল তাই তার মৃত্যু হয়েছে। এখানে আমাদের কোনো ত্রুটি বা গাফিলতি নেই।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ফজলুল হক বলেন, এরকম ঘটনার কথা আমি এখনো জানতে পারিনি। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন