শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

লাইভে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা প্রতিরোধ

সিআইডির সাইবার ইউনিট

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২২, ১২:০১ এএম

দেশে প্রতি বছর ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। এখন এদের অনেকে আত্মহত্যার আগে ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেন বা হতাশা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পারলে এবং সাড়া দেয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় পেলে এসব আত্মহত্যা সহজেই ঠেকানো যায় বলে মনে করছে সিআইডি। এ জন্য তৈরি করা হয়েছে লাইভে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা প্রতিরোধ সাইবার ইউনিট।
সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, হতাশায় আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন নাটোরের এক তরুণ ব্যবসায়ী। বিষের বোতল হাতে নিয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি। বিষয়টি ফেসবুকের সিঙ্গাপুর অফিস থেকে তাৎক্ষণিক জানানো হয় সিআইডিকে। সিঙ্গাপুর থেকে ফেসবুকের বার্তা পেয়ে ১৫ মিনিটের মধ্যে ওই তরুণের বাড়িতে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে চিকিৎসার পর তরুণটি এখন সুস্থ। শুধু নাটোরের ওই তরুণ নয়, এভাবে ফেসবুকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত তিন মাসে সারাদেশে ৩০ জনের আত্মহত্যার চেষ্টা ঠেকিয়েছে সিআইডি। যাদের অধিকাংশই ছিলেন ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী।

কর্মকর্তারা আরো বলছেন, বাংলাদেশের ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফেসবুক কিংবা টিকটকে লাইভে এসে কেউ আত্মহত্যার চেষ্টা করলে, আত্মহত্যা করতে পারে এমন কোনো শব্দ লিখলে এবং এসব সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কেউ এমন ভাবভঙ্গি ও আচরণ প্রকাশ করলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারকে তাৎক্ষণিকভাবে জানায়। ফেসবুক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহার করে এই কাজগুলো করে থাকে।

সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, ফেসবুক আত্মহত্যা সংক্রান্ত তথ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যেই সিআইডিকে জানাচ্ছে। আমরা তথ্য পেলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তি ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। পরে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে আত্মঘাতী হওয়া থেকে তাদের সরিয়ে আনা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ফেসবুক যে প্রক্রিয়ায় তথ্য সরবরাহ করে, তাতে ওই ব্যক্তির (আত্মহত্যা চেষ্টাকারীর) নাম-পরিচয় গোপন রাখা হয়। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে তারা যেন এ ঘটনার জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি না হন, সে জন্য এটা করা হয়।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ফেসবুক লাইভে এসে পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন ব্যবসায়ী আবু মহসীন খান। তিনি চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর। দীর্ঘক্ষণ ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলার পর আত্মহত্যা করলেও সেটা ঠেকানো যায়নি। পরে বিষয়টি ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে জানায় সিআইডি।
সিআইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ফেসবুকের প্রতিটি তথ্যই আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেয় তারা। আত্মহত্যা থেকে বাঁচানোর পর ওই ব্যক্তি যাতে স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারেন, সে জন্য মানসিক সহায়তা এবং আত্মহত্যা নিয়ে কাজ করছে, এমন এনজিওগুলোকে যুক্ত করা হয়। এনজিওগুলো পরিবারগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখে, যাতে তারা আর পরবর্তী সময়ে আত্মঘাতী না হন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন