ছাত্র রাজনীতির আতুঁরঘর খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাকর্মীদের একাংশের তোপের মুখে পড়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। গতকাল শনিবার দুপুরে ছাত্রলীগের এ দুই শীর্ষ নেতা মধুর ক্যান্টিনে আসলে ছাত্রলীগের ৩০ তম সম্মেলন প্রত্যাশীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সম্মেলন পেছানোর চেষ্টা করা হলে কেন্দ্রীয় নেতাদের তোপের মুখে পড়েন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, এদিন দুপুরে জয় ও লেখক মধুর ক্যান্টিনে আসার আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করছিলেন সম্মেলন পদপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। জয়-লেখক আসার পর নেতারা তাদের কাছে সম্মেলন নিয়ে নানান প্রশ্ন করেন। সম্মেলন কবে হবে এমন প্রশ্নে তাঁরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন সম্মেলন করার নির্দেশনা দেবেন তখনই করা হবে। কিন্তু ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিং-এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক সম্মেলনের তারিখ ঠিক করা হয়।
জয় ও লেখকের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা না করে এভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর ছেড়ে দেয়ার বিষয়টিকে সম্মেলন প্রত্যাশীরা ‘নাটক’ বলে উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে জয় ও লেখক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া সম্মেলনের নির্দেশনাকে তার মনগড়া কথা বলে অভিহিত করেন বলে জানান সংগঠনটির সহ-সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ আরিফ হোসেন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সোহান খান বলেন, এসব আসলে নাটক ছাড়া কিছুই নয়। ছাত্রলীগের তো গঠনতন্ত্র রয়েছে। তারা কার্যনির্বাহী সংসদের মিটিং ডাকবে। সেখানে এ বিষয়ে কথা হবে। কিন্তু তারা এসব না করে শুধু প্রধানমন্ত্রীর উপরে গড়ায় দিচ্ছেন। এটা মূলত এক প্রকারের নাটক।
সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, আমরা তাদেরকে বললাম যে ওবায়দুল কাদের আপনাদের বলেছিল দুই দিনের মধ্যে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করার জন্য। কিন্তু এখনো আপনারা এটা করতেছেন না কেন? তারা বলে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তারা সম্মেলনের বিষয়ে বলবে। এরপর নেত্রী যে তারিখ দেবে সেদিন সম্মেলন হবে। কিন্তু এটা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র নয়।
সহ সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামিম বলেন, আমরা জয় লেখকের সাথে সম্মেলন নিয়ে কথা বলেছি। ওনারা বলেছেন যে নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
এর আগে ৭ মে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সহযোগী সদস্যগুলোকে সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। গত মঙ্গলবার সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওই সভায় উপস্থিত থাকা ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে দু-এক দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের দফতর সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারিখ নির্ধারণের জন্য নির্দেশনা দেন কাদের। তবে, আওয়ামী লীগের দফতর সেলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জয়-লেখক এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন