শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সর্বত্রই ডলারের প্রভাব

বর্তমান আমদানি প্রেক্ষাপটে রিজার্ভ স্বস্তিজনক অবস্থায় নেই : ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে ঋণপত্রে অন্য মুদ্রার নাম উল্লেখ করা দরকার : এস এম পারভেজ তমাল ডল

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২২, ১২:০৩ এএম

দেশে হঠাৎ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের মূল্যমান লাগামহীন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের টাকার মানের তুলনায় এক লাফে ডলারের মূল্য বেড়ে গেছে ১৪ টাকা পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক বাজারে অন্যতম প্রধান বিনিময় মুদ্রা ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার বিপরীতে বাংলাদেশের মুদ্রা টাকার দরপতন ঘটেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব দেশের সবকিছুতেই পড়ে গেছে। করোনাপরবর্তী সময়ে আমদানি বেড়ে যাওয়ায় মূলত ডলারের এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে। ডলার সঙ্কট নিয়ন্ত্রণে দেশে বিলাস পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা, কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেয়ার কথাও ভাবছে সরকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ পর্যন্ত ৫২১ কোটি ৬০ লাখ ডলারও বিক্রি করেছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই ডলারের বাজারে অস্থিরতা কমানো যাচ্ছে না।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, খাদ্যদ্রব্য ছাড়া বিলাসবহুল সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক বাড়িয়ে তা নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার সরবরাহ বাড়িয়ে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার চেষ্টা তাদের রয়েছে। আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করছি, কিছু দিনের মধ্যেই ডলারের বাজার একটা ভারসাম্যের মধ্যে আসবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে খোলাবাজারে (কার্ব মার্কেট) মার্কিন ডলারের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। টাকা দিয়েও ডলার মিলছে না। ডলারের বাড়তি দামের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। বাড়ছে স্থানীয় পণ্যের উৎপাদন ব্যয় ও মূল্যস্ফীতি। এর প্রভাব গিয়ে পড়ছে ভোক্তাদের ওপর। এদিকে ডলারের দামে অস্থিরতা বিরাজ করলেও অন্যান্য মুদ্রা ইউরো, পাউন্ড, অস্ট্রেলিয়ান ডলার, চীনের ইউয়ান, জাপানী ইয়েন, সউদী রিয়ালের ওপর খুব একটা প্রভাব পড়েনি। এসব মুদ্রার বিনিময় মূল্য দু’এক টাকা বাড়লেও স্বাভাবিকই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তাহলে কেন বাড়ছে ডলারের দাম? এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ডলারের বাইরে অন্য মুদ্রায় লেনদেনের কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত ৯০ শতাংশ লেনদেনই হয় ডলারে। কারণ সব দেশই আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে ডলারকেই বেছে নেয়। সঙ্গে টাকা পাচারেও ডলারের ব্যবহার বেশি। বছরে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। এছাড়া করোনার সময়ে যেসব আমদানির দেনা ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ স্থগিত করা হয়েছিল, সেগুলোও এখন পরিশোধ করতে হচ্ছে। সবমিলে বাজারে ডলারের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। কিন্তু আমদানির তুলনায় রফতানি আয় সে হারে বাড়েনি। একই সঙ্গে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। এসব মিলে বাজারে ডলারের সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। তাই দেশে ডলারের দাম বাড়ায় মুদ্রা বাজারের অস্থিরতা সামলাতে অল্প সময়ের মধ্যে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে কয়েকবার। যদিও ডলারের দাম যাতে না বাড়ে, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক তদারকি জোরদার করেছে, ব্যাংকগুলো কত দামে প্রবাসী আয় আনতে পারবে ও রফতানি বিল নগদায়ন করতে পারবে, তা বেঁধে দিচ্ছে। একইভাবে আমদানি বিলের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে। তবে কোনো ব্যাংক এই দামে ডলার লেনদেন করতে পারছে না। এদিকে ডলারের চড়া দামে শুধু যে আমদানি খাতে বাড়তি ব্যয় হচ্ছে তা নয়, রফতানিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা জানিয়েছেন রফতানিকারকরা। ব্যাংকে ডলারের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে ক্রয়মূল্যের পার্থক্য বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ার দাবি করেছেন তারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানোর পর মুদ্রাবাজারে শক্তিশালী হচ্ছে ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা বিনিময়ে ডলারের দাম বেড়ে গত ২০ বছরে সর্বোচ্চ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেজারি ইল্ড (যে সুদের হারে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিভিন্ন মেয়াদে অর্থ ঋণ করে) বাড়ার পাশাপাশি চীনের লকডাউনে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। একই সঙ্গে করোনার পরে আমদানি বাড়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম বাড়ছে। পাশাপাশি ব্যয় বেড়েছে তেল, ডালসহ খাদ্যদ্রব্য বা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। একই সঙ্গে বিদেশে যাওয়া বেড়ে গেছে, এর ফলে চাহিদাও বেড়েছে। তবে বিদেশি পর্যটক ও নগদ ডলার দেশে আসছে কম। এতেই বাড়ছে দাম।

চলমান ডলার সঙ্কট নিয়ে দেশের অর্থনীতিবিদেরা দুই ধরনের মতামত দিচ্ছেন। কেউ কেউ ডলারের দাম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ এর বিরোধিতা করেছেন। গত মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে অনলাইনে অনুষ্ঠিত প্রাক্-বাজেট আলোচনায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন অর্থনীতিবিদেরা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা। একই সঙ্গে ডলারের দাম বাড়ানোর পরামর্শ দেন, এতে আমদানি নিরুৎসাহিত হবে বলে মত তাঁদের। কিন্তু বেশ কয়েকজন অর্থনীতিবিদ ডলারের দাম বাড়ানো ঠিক হবে না বলে মত দেন। তাঁদের যুক্তি হলো, ডলারের দাম বাড়ালে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে। তখন মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়বে। সাধারণ মানুষের অসন্তোষ আরো বাড়বে।
সূত্র মতে, মহামারি করোনায় পুরো বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়ে। এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্য, কাঁচামাল, জ্বালানি তেলসহ প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। চলমান রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম আরো বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে জাহাজের ভাড়াও। এর প্রভাবে আমদানি ব্যয়ও লাগামহীনভাবে বেড়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশের অধিকাংশ ঘুষ বাণিজ্য এখন ডলার কেন্দ্রিক। আর যা পাচার হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ পড়েছে। এছাড়া আমদানি ব্যয় পরিশোধের চাপে মার্কিন ডলারের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু সেই হারে বাজারে সরবরাহ না বাড়ায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে ডলারের দাম।

গত সোমবার এক দিনেই ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে গেছে ৮০ পয়সা। আর গত ২২ দিনের ব্যবধানে তিন দফায় ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন হলো এক টাকা ৩০ পয়সা। এদিকে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম খাত রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। অপরদিকে আমদানি যে হারে বেড়েছে, রফতানি সে হারে বাড়েনি। রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ভালো থাকলেও যুদ্ধের কারণে এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সার্বিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হচ্ছে। ফলে প্রতি মাসে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। এ কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে জোগান দিতে হচ্ছে আমদানির খরচ। এ অবস্থায় চলতি হিসাবের লেনদেন ভারসাম্যে সবচেয়ে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। চাপ বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী এ মুহূর্তে ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বেশি রিজার্ভ রয়েছে। বড় অঙ্কের রিজার্ভ থাকলেও ডলারের বাজারের অস্থিরতার ক্ষেত্রে আমদানি ব্যয় ব্যাপকহারে বৃদ্ধিকে বড় কারণ হিসাবে দেখছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, এতদিন যে রিজার্ভকে আমরা স্বস্তিদায়ক মনে করেছি, যা এ মুহূর্তে সঠিক নয়। যেহেতু আমাদের আমদানি ব্যয় বহুলাংশে বেড়েছে এবং গত নয় মাসে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৭ শতাংশ, ফলে এখন যে রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। অথচ এই রিজার্ভ দিয়ে আট মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব ছিল, যখন আমাদের আমদানি ব্যয় কম ছিল। সংখ্যার হিসাবে রিজার্ভে যে ৪১ বিলিয়ন ডলার (চার হাজার একশ কোটি ডলার) রয়েছে, তা এখনকার প্রেক্ষাপটে ন্যূনতম মাত্রায় রয়েছে। এটা খুব স্বস্তিজনক অবস্থায় নেই।

ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটন ও চিকিৎসার জন্য বিদেশগামী যাত্রীরা। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন হজগামী যাত্রীরাও। মানি চেঞ্জার ও খোলাবাজারের মুদ্রা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে অনেক বেশিসংখ্যক মানুষ দেশের বাইরে ঘুরতে বা চিকিৎসার কাজে যাচ্ছে। ফলে ডলারের চাহিদাও অনেক বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় ডলারের সরবরাহ কম। এই কারণেও সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

কার্ব মার্কেট পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত সোমবার ৯৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৯৭ টাকা ৩০ পয়সায় ডলার বিক্রি হয়। পরের দিন মঙ্গলবার খোলাবাজারে দাম ৫/৬ টাকা বেড়ে ১০২ টাকা হয়। দেশে এখন পর্যন্ত একেই ডলারের সর্বোচ্চ দাম বলে ধরা হচ্ছে। অবশ্য গতকাল আগের দিনের থেকে কিছুটা কমেছে ডলারের দাম। তারপরও ১০০ টাকার ঘরেই ছিল প্রতি ডলারের দাম। আন্ত ব্যাংকের সঙ্গে খোলাবাজারে ডলারের দামের ব্যবধান ১৪ টাকা। ৯ মাসে টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। বাজারের অস্থিরতা ঠেকাতে সর্বশেষ এক ধাক্কায় গত সোমবার ৮০ পয়সা বাড়িয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে দিয়েছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু খোলাবাজারে এই দামে ডলার মিলছে না। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমাচ্ছে বাংলাদেশ। এতে দাম বাড়ছে মার্কিন ডলারের। আমদানি দায় মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংকগুলো প্রতি ডলারের জন্য আমদানিকারকদের থেকে নিচ্ছে ৯২-৯৫ টাকা। কোথাও কোথাও ৯৭ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। অবশ্য ব্যাংকগুলোও নিরুপায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেছেন, ব্যাংকগুলোর হাতে আমদানির এলসি খোলার মতো যথেষ্ট ডলার নেই বলে একচেঞ্জ হাউজ এবং বিদেশি কোন ব্যাংক বা স্থানীয় যাদের কাছে বেশি আছে তাদের কাছ থেকে বাড়তি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। তাই আমদানিকারকদের কাছ থেকে বেশি টাকা নেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য ও জাহাজভাড়া বেড়ে যাওয়ায় (জুলাই-মার্চ সময়ে) আমদানি খরচ বেড়ে গেছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। তবে রফতানি আয় বেড়েছে ৩৩ শতাংশ। আবার প্রবাসী আয় যা আসছে, তা গত বছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর সঙ্গে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি খাতের বড় অঙ্কের বিদেশি ঋণ পরিশোধ। ফলে আয়ের চেয়ে প্রতি মাসে প্রায় ২০০ কোটি বেশি ডলার খরচ হচ্ছে। আর এ কারণে খরচ বাড়ছে আমদানি পণ্যের। যার প্রভাব পড়ছে ভোগ্যপণ্যের দামে। ভোক্তাদের বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে।
কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান কাজী সাজেদুর রহমান বলেন, কাগজের প্লেট, বাটি ও কাপ তৈরি করার জন্য বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। ডলারের দাম বাড়ায় ৫০ টন কাঁচামালে প্রতিষ্ঠানটির খরচ বেড়েছে ৫ লাখ টাকা। খরচ বাড়লেও পণ্যের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। এর ফলে পুরো ব্যবসার ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে।
সূত্র মতে, বর্তমানে ব্যাংকগুলোর কাছে ১৮০ কোটি ডলার মজুত আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডলার রয়েছে বিদেশি খাতের সিটি ব্যাংক এনএ, দেশীয় মালিকানার ইসলামী ব্যাংক, রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ও জনতা ব্যাংক এবং কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের কাছে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ডলারের দাম বৃদ্ধির ভুক্তভোগী সবাই। ব্যবসায়ীরাও চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি ভুগছে। ডিসিসিআই সভাপতির পরামর্শ বাংলাদেশে ডলারের ব্যাংক, কার্ব মার্কেট, রফতানির ভিন্ন ভিন্ন রেটÑ এই বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে।

বেসরকারি এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল ইনকিলাবকে বলেন, দেশে আমদানি-রফতানির সিংহভাগ লেনদেনই হয় ডলারে। আর ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এখন ঋণপত্রে অন্য মুদ্রার নাম উল্লেখ করা দরকার। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর বলেন, এই মুহূর্তে আমদানির লাগাম টানা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। এই অবস্থায় মুদ্রার আরো অবমূল্যায়ন করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এভাবে ১০ থেকে ২০ পয়সা করে না বাড়িয়ে বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
আনিছ ১৯ মে, ২০২২, ২:০২ এএম says : 0
এগুলো দেখলে মনে হয় এ দেশে কোনো সরকার আছে কি
Total Reply(0)
আকিব ১৯ মে, ২০২২, ২:০৩ এএম says : 0
এভাবে চলতে থাকলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ধসে পড়বে
Total Reply(0)
আকিব ১৯ মে, ২০২২, ২:০৩ এএম says : 0
আমরা চাই সরকার এ ব্যাপারে জোড়ালো ভূমিকা পালন করুক
Total Reply(0)
আকিব ১৯ মে, ২০২২, ২:০৫ এএম says : 0
ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটন ও চিকিৎসার জন্য বিদেশগামী যাত্রীরা। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন হজগামী যাত্রীরাও। মানি চেঞ্জার ও খোলাবাজারের মুদ্রা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে অনেক বেশিসংখ্যক মানুষ দেশের বাইরে ঘুরতে বা চিকিৎসার কাজে যাচ্ছে। ফলে ডলারের চাহিদাও অনেক বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় ডলারের সরবরাহ কম। এই কারণেও সঙ্কট তৈরি হয়েছে।
Total Reply(0)
Uattom Devnath ১৯ মে, ২০২২, ১০:০০ এএম says : 0
কোথায় গেল সরকারের উন্নয়ন।দেশের মধ্যে সুষ্ঠু পরিকল্পনা না থাকলে এর চেয়েও খারাপ দিন দেখতে হবে জনগণকে।
Total Reply(0)
আমিনুল ইসলাম ১৯ মে, ২০২২, ১০:০১ এএম says : 0
এর অন্যতম কারণ প্রতি বছরে বা মাসে যত টাকা রেমিটেন্স আসে তার থেকে বেশি টাকা বিদেশে পাচার হয়। এটা সরকার কি বন্ধ করতে চায়?!
Total Reply(0)
Al Shahriar ১৯ মে, ২০২২, ১০:০১ এএম says : 0
রপ্তানির থেকে আমদানি বাড়লে ডলারের দাম বাড়বেই। গত নয় মাসে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলার। অর্থাৎ আমাদের রিজার্ভ থেকে ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে। এমন অবস্থার উন্নতি না হলে ডলারের দাম বাড়তেই থাকবে আর টাকার দাম কমতে থাকবে। আমদানি কমিয়ে রপ্তানি বাড়াতে না পারলে এই অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে না।
Total Reply(0)
Alamin Sumon ১৯ মে, ২০২২, ১০:০১ এএম says : 0
প্রাইভেট ব্যাংক ডলারের স্বল্পতার কারনে এলসি দিতে পারছে না।এটা খুবই ভাবনার বিষয়।
Total Reply(0)
MD.Shahjan Shiraj ২৪ মে, ২০২২, ১১:১৪ পিএম says : 0
শুধু আমদানি বন্ধ করে নয়, চিকিৎসা ও শিক্ষা খাতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়, সেটা কিভাবে কমিয়ে আনা যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন