শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বহুল আলোচিত ধর্ষণকাণ্ডে ভারতে ৯ বাংলাদেশির কারাদণ্ড

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০২২, ৪:০৩ পিএম

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর বিশেষ একটি আদালত সেখানে বাংলাদেশি এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে অন্তত ৯ বাংলাদেশিকে পাঁচ বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড দিয়েছেন। গত বছরের মে মাসে বহুল আলোচিত যৌন নিপীড়নের একটি ভিডিও দুই দেশে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

 

শুক্রবার বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত-৫৪ অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, এই মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশিরা হলেন— চাঁদ মিয়া, মোহাম্মদ রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মোহাম্মদ আলামিন হোসেন, রকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ বাবু শেখ, মোহাম্মদ ডালিম এবং আজিম হোসেন। এছাড়া তানিয়া খান নামের এক নারীকে ২০ বছর এবং মোহাম্মদ জামাল নামের এক বাংলাদেশি ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য দু’জনকে ফরেনার্স অ্যাক্টের আওতায় দোষী সাব্যস্ত করে ৯ মাসের কারাদণ্ড এবং এক ভারতীয়কে খালাস দিয়েছেন আদালত।

গত বছরের ২১ মে বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নিপীড়নের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর এই ঘটনা উভয় দেশে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। ভিডিওতে দেখা যায়, ২০-২২ বছরের এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে ৩ থেকে ৪ জন যুবক শারীরিক ও বিকৃতভাবে যৌন নির্যাতন করছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১২ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে, যাদের ১১ জনই বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী। এ নিয়ে বাংলাদেশেও তদন্তে নামে পুলিশ। পরে পুলিশ ভিডিওটির একজনের সঙ্গে বাংলাদেশি এক তরুণের ছবির মিল খুঁজে পায়। পুলিশ নিশ্চিত হয়— নির্যাতনকারী ওই যুবকের নাম রিফাতুল ইসলাম হৃদয়। রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। হৃদয়ের পরিচয় তার মা ও মামার কাছ থেকে শনাক্ত করা হয়। এলাকায় সে টিকটক হৃদয় নামে পরিচিত। নির্যাতনের শিকার তরুণীর বাবা ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানব পাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন।

পরে বেঙ্গালুরু পুলিশের গ্রেফতার অভিযানের সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। বেঙ্গালুরু পুলিশ সেসময় জানায়, ধর্ষণের শিকার তরুণী বাংলাদেশের একটি মানবপাচার চক্রের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়েছেন। ওই তরুণীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে পাচারকারীরা। টাকা নিয়ে বিবাদের কারণে ওই তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে তদন্তে উঠে আসে। এই চক্রটি বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানা এবং কর্ণাটকে নারী ও তরুণীদের পাচার করে। গত বছর ওই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এক টুইটে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহায়তার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তদন্তে পুলিশ জানতে পায় গণধর্ষণের ওই ঘটনা বেঙ্গালুরু শহরের কানাকা নগরে ঘটেছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১২ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে, যাদের ১১ জনই বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী এবং একজন স্থানীয় বাসিন্দা।

বেঙ্গালুরু পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (পূর্ব) ভীমশঙ্কর গুলেদ বলেছেন, ‌দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ডিএনএ বিশ্লেষণ, ইলেকট্রনিক প্রমাণ, মোবাইল ফরেনসিক, আঙুলের ছাপের প্রমাণ, ভয়েস স্যাম্পলিংয়ের মতো সব ধরনের বৈজ্ঞানিক সহায়তা নিয়ে যুদ্ধগতিতে তদন্ত পরিচালনা করা হয়। মামলাটি রেকর্ডের সময় থেকে মাত্র ২৮ দিনের মধ্যে চার্জশীট জমা দেয়া হয়।মামলা পরিচালনার জন্য কর্ণাটক সরকার বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর বীরান্না তিগাদি নিযুক্ত করে এবং এসিপি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে বিশেষ ট্রায়াল মনিটরিং টিম গঠন করা হয়। আদালতের বিচারক মোট ৪৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেন এবং তিন মাসেরও কম সময়ে এই মামলার রায় ঘোষণা করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Burhan uddin khan ২১ মে, ২০২২, ৭:৫০ পিএম says : 0
Bad news for our community...
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন