সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী ও সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বহুল প্রত্যাশিত ভোটগ্রহণ চলছে।
বুধবার (২৫ মার্চ) সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৫টায়। সারাদেশের ৫১ হাজার আইনজীবী তাদের নেতা নির্বাচনে একযোগে ভোট দিচ্ছেন।
নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমর্থিত সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীরা হলেন- ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সৈয়দ রেজাউর রহমান, সাবেক মন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম, বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য মো. মোখলেছুর রহমান বাদল, আইনজীবী শাহ মো. খসরুজ্জামান, আইনজীবী শাহ মো. জিকরুল আহমেদ, আইনজীবী মো. রবিউল আলম (বুদু), আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ (রাজা)। এদের মধ্যে শাহ মো. জিকরুল আহমেদ গত ৭ মে (শনিবার) মারা গেছেন।
এদিকে, অঞ্চলভিত্তিক প্রার্থী হচ্ছেন- (গ্রুপ-এ) ঢাকা অঞ্চলের জন্য আইনজীবী আবদুল বাতেন, ময়মনসিংহ টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন খান। এছাড়া চট্টগ্রাম নোয়াখালীর জন্য আইনজীবী মোহাম্মদ মুজিবুল হক। আর কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের জন্য এ এফ এম রুহুল এনাম চৌধুরী (মিন্টু)। পাশাপাশি খুলনা বরিশাল ও পটুয়াখালীর জন্য আনিস উদ্দিন আহমেদ শহীদ, রাজশাহী যশোর কুষ্টিয়ার জন্য মো. ইকরামুল হক এবং দিনাজপুর, বগুড়া, রংপুর, পাবনার জন্য আইনজীবী মো. আবদুর রহমান।
অন্যদিকে বিএনপি ও তাদের সমমনা আইনজীবীদের নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ১৪ জন। সাতটি সাধারণ আসনে লড়ছেন— সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, জসিম উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আব্দুল মতিন।
এছাড়া গ্রুপ আসনের লড়ছেন— ঢাকা অঞ্চলের জন্য (গ্রুপ-এ) ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি মো. মহসিন মিয়া, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-বি) আ. বাকী মিয়া, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-সি) এ এস এম বদরুল আনোয়ার, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও সিলেট জেলা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-ডি) এটিএম ফয়েজ উদ্দিন, বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-ই) মো. এনায়েত হোসেন বাচ্চু, বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-এফ) মো. মাইনুল আহসান এবং বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-জি) শফিকুল ইসলাম টুকু।
আর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ থেকে সাধারণ আসনে লড়ছেন বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ জসীম উদ্দীন সরকার, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুল মতিন।
এছাড়া অঞ্চলভিত্তিক হিসেবে (গ্রুপ-এ) ঢাকা অঞ্চলের জন্য লড়ছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন মিয়া, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য অ্যাডভোকেট আব্দুল বাকী মিয়া। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, নোয়াখালীর জন্য অ্যাডভোকেট এ এস এন বদরুল আনোয়ার, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের জন্য অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ উদ্দিন লড়ছেন। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালীর জন্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন বাচ্চু, রাজশাহী, যশোর কুষ্টিয়ার জন্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাইনুল আহসান এবং দিনাজপুর, বগুড়া, রংপুর, পাবনার জন্য লড়ছেন শফিকুল ইসলাম টুকু।
এদিকে, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ আসনের প্রার্থী মোহাম্মাদ সাইদ আহমেদ রাজা ঢাকা মেইলকে বলেন, আশা করছি আমাদের প্যানেল ভালো ফলাফল অর্জন করবে। কারণ, আমাদের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বার কাউন্সিলের জন্য সুবিশাল ভবন তৈরি করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আইনজীবীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। করোনাকালে বড় ধরনের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে আইনজীবীদের মাঝে। এসব বিবেচনায় আমাদের প্যানেলকে সাধারণ আইনজীবীরা ব্যাপক ভোটে বিজয়ী করবেন।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ আসনের এই প্রার্থী বলেন, আমি প্রয়াত আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদারের ছেলে। আমার বাবা গরিবের আইনজীবী হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। বাবার সেই খ্যাতির কারণেই আইনজীবীরা আমাকে ভোট দেবেন। নির্বাচিত হয়ে বাবার সুনাম ধরে রাখতে চাই। শরীয়তপুর, ময়মনসিংহ ও খুলনা অঞ্চলে আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা আইনজীবীদের সংখ্যা বেশি।
উল্লেখ্য, প্রতি তিন বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় আইনজীবীদের সনদ প্রদানকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের। করোনার কারণে ২০২১ সালের নির্বাচন পিছিয়ে করা হচ্ছে ২০২২ সালে।
এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৪টি আসনের মধ্যে ১২টি আসনে জয়ী হয়েছিল আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা আইনজীবীরা। অন্যদিকে বিএনপি ও তাদের সমমনারা পেয়েছিল মাত্র দুটি আসন।
চলতি বছরের ২১ মার্চ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ করেন।
নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন ছাড়াও দেশের সব জেলা সদরের দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণে একটি করে ভোটকেন্দ্র থাকবে। এছাড়া বাজিতপুর, ইশ্বরগঞ্জ, দুর্গাপুর, ভাঙা, চিকন্দি, পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নবীনগর ও পাইকগাছা দেওয়ানী আদালত সমূহের প্রত্যেকটির অঙ্গনে একটি করে ভোটকেন্দ্র থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন