খ্যাতিমান লেখক, সাংবাদিক ও গীতিকার আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে গতকাল বিকেলে স্ত্রী সেলিমা আফরোজ চৌধুরীর কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
দাফনকালে মিরপুর-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টু, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচিসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে তার জানাজা সম্পন্ন হয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক নেতা, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, সাংবাদিক নেতা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা জানাজায় অংশ নেন।
এর আগে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার কফিন নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার লাশ পৌঁছালে গার্ড অব অনার দেয়ার পর বিশিষ্টজন ও পরে সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করা হয় গাফফার চৌধুরীর কফিন।
শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বের শুরুতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কবির আহমেদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শ্রদ্ধা জানান।
আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাসিম, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
গাফফার চৌধুরীর কফিনে আরো শ্রদ্ধা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, ট্রেজারার প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমেদ সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
এরপর বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে লাশ নেওয়া হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবে।
গত ১৯ মে ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে লন্ডনের বার্নেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে গতকাল বেলা ১১টা ৫ মিনিটে তার লাশ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সরকারের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে লাশ গ্রহণ এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
সেখানো উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া।
বাঙালির অমর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র রচয়িতা গাফফার চৌধুরী একাত্তরের মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পদকে ভূষিত গাফফার চৌধুরী স্বাধীনতার পর থেকে প্রবাসে ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন