বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

গণকমিশনে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে

পীর সাহেব চরমোনাই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০২২, ৮:৪৮ পিএম

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন, গণকমিশনের কোনো ভিত্তি নেই। যদি গণকমিশনের কোনো ভিত্তি না থাকে, তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনতে অসুবিধা কোথায়? বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি বলেন, দেশের বরেণ্য ১১৬ জন আলেম ও ১০০০ মাদরাসার তালিকা করে তাদের অসম্মান করার দায়ে গণকমিশনের সংশ্লিষ্ট সকলকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গণকমিশনকে কারা পৃষ্ঠপোষকতা করছে, কারা দেশকে ভয়াবহ সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিতে চায়, এসবের তদন্ত করে তাদের সম্পদের উৎস কোথায় তাও খতিয়ে দেখতে হবে। গণকমিশন দেশকে সঙ্কটে ঠেলে দিয়ে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত।

আজ রোববার এক বিবৃতিতে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, জাতির জাগ্রত বিবেক ওলামায়ে কেরাম। তাদেরকে জঙ্গি তকমা দিয়ে ধর্মব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে যারা তাদের সম্মান নষ্ট করতে এধরণের তালিকা করেছে, যারা দেশে আইন আদালত থাকার পরও নিজেরা আইন হাতে তুলে নিয়ে এসব অপকর্ম করছে তাদেরকে আইন লঙ্ঘনের দায়ে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
পীর সাহেব বলেন, যারা কথিত তালিকা তৈরি করেছে, তারা নিজেরাই বিভিন্ন অপরাধে অপরাধী ও তিরস্কৃত। সাবেক বিচারপতি মানিক চৌধুরী নিজের দ্বৈত নাগরিকত্ব গোপন রেখে বিচারপতি হয়েছে, যা সংবিধান বিরোধী। দেশে আইন আদালত থাকতে গণকমিশন গঠন দেশের সংবিধান পরিপন্থি কাজ। দেশের ওলামায়ে কেরামের তালিকা করে দুদকে দেয়ার এখতিয়ার তাদের নেই।
জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ঃ
এদিকে, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সহ-সভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া ও সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, দেশের বরেণ্য ১১৬ জন আলেম ও ১০০০ মাদরাসার তালিকা করে অসম্মান করার এখতিয়ার গণকমিশনের নেই।
তথাকথিত গণকমিশন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্যে কোন অপশক্তির মদদপুষ্ট হয়ে এ কাজ করছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি রাখে। দেশে আইন আদালত ও সংবিধান থাকার পরও যারা সরকার ও ওলামায়ে কেরামকে মুখোমুখি দাড় করাতে চায় তারা কখনও দেশপ্রেমিক হতে পারে না।

আজ এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, সবচেয়ে আশ্চয্যের বিষয় হলো যারা ওলামায়ে কেরামদের বিরুদ্ধে লাগছে, সেই তথাকথিত গণকমিশনের সাথে সম্পৃক্তদের ইসলামের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। এমন অপরাধী ও তিরস্কৃত ব্যক্তিরা মাদরাসা ও আলেমদের ভুল ধরার চেষ্টা করছে। একটি গোষ্ঠি কৃত্রিমভাবে জঙ্গিবাদকে দেশের প্রধান সমস্যা আকারে হাজির করার পায়তারা করছে। দেশে যখন স্থানীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের দলীয় হানাহানিতে সহিংসের ঘটনা ঘটছে তখন তারা কথিত সাম্প্রদায়িকতাকে ইস্যু আকারে উপস্থান করছে। তারা বলেন, দেশে যখন সরকারদলীয় ব্যক্তি ও সরকারের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির খবরে মানুষ অতিষ্ট তখন এরা উলামাদের আর্থিক লেনদেন নিয়ে হাউকাউ শুরু করেছে। জাতি এই ধান্ধাবাজ অশুভ গোষ্ঠিকে চেনে। কারা এদেরকে অর্থায়ন করে, তাদের মতলব কি তা মানুষ জানে। এরা হলো দুর্নীতির দোসর, লুটপাটকারীদের দোসর। এরা মানুষের ভাত ভোটের অধিকার হরণকারীদের ছা পোষা বুদ্ধিজীবি, এরা দুষ্ট প্রতিবেশির পা চাটা গোলাম।
ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগরঃ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম ও সেক্রেটারী মুহাম্মদ আব্দুল আঊয়াল মজুমদার এক বিবৃতিতে ওলামায়ে কেরামদেরকে ধর্ম ব্যবসায়ী ও জঙ্গি বলে আখ্যায়িত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, দেশ ও ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদী গোষ্ঠী দেশকে অশান্ত করার অপচেষ্টা করছে। নেতৃদ্বয় এক বিবৃতিতে বলেন, দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে গঠিত গণকমিশনকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তারা বলেন, জাতির গর্বিত ওলামায়ে কেরামদের ধর্মব্যবসায়ী বলে নাস্তিক মুরতাদ গোষ্ঠী ওলামাদের অসম্মান করছে। দেশবিরোধী ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তারা বলেন, যাদের চরিত্রের ঠিক নেই, যারা অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িতের কারণে বহিস্কৃত হয়েছে, তারা ওলামাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে। নেতৃদ্বয় বলেন, ওলামায়ে কেরাম এদেশে ভেসে আসে নাই। ওলামাদের সাথে সম্পর্ক মাটি ও মানুষের। কাজেই সস্তা তালিকা করে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের নামে অপমান অপদস্ত সহ্য করা হবে না। দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতা প্রয়োজনে রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে।
জাতীয় তাফসীর পরিষদ ঃ
জাতীয় তাফসীর পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ও শায়খুল হাদীস প্রিন্সিপাল মুফতী বাকিবিল্লাহ, মুফতী ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, হাফেজ মাওলানা নাযীর আহমাদ শিবলী এক বিবৃতিতে বলেছেন, জাতির বিবেক হযরত ওলামায়ে কেরামদের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র দেশের ঈমানদার জনতা সহ্য করবে না। ১১৬ জন আলেম ও ১০০০ মাদরাসার তালিকা করে আলেমদেরকে সমাজকে অসম্মান করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। তথাকথিত গণকমিশনের সাথে জড়িতরাই গণধিকৃত ও দুর্নীতির দায়ে বহিস্কৃত। কাজেই এধরণের অভিশপ্তরা কিভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের জাগ্রত বিবেক ওলামায়ে কেরামের সম্মানহানি করে তা’খতিয়ে দেখতে হবে। কাজেই দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে গণকমিশন গঠন করার দায়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Dr. Mohammad Ziaul Hoque ৩০ মে, ২০২২, ৬:৪৩ এএম says : 0
গণ ধিকৃত কমিশন বা যে কেউ কারো সম্মান নষ্ট করার, অপমান বা মর্যাদা নষ্ট করার অধিকার রাখে না । সকল অন্যায় রোধে রাষ্ট্র যন্ত্র নিয়োজিত থাকে, কোন ব্যাক্ত নয়। গণ ধিকৃত কমিশন কর্তৃক পরিচালিত সব বেআইনি কর্মের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা না নিলে অরাজকতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। বাংলাদেশের কুবদ্ধিজীবীরা ও নাস্তিকেরা ধর্মকে ব্যবসা হিসাবে প্রচার করে শুধু ধর্মকে ও ধার্মিকদের অপমান করার জন্য। কিন্তু ধর্ম কোন ব্যাবসার বিষয় নয় । যেমন ধর্ম দিয়ে ব্যাবসার ভাগ্য নির্ধারণ করা যায় না। বরং ধর্মই অনৈতিক ব্যবসাকে ( যেমন অতি মুনাফা ) নিয়ন্ত্রণ করে সমাজে সুফল প্রদান করে। এজন্য ধর্ম চর্চা দিয়ে সকল অন্যায়, মন্দ ও অসৎ কাজের প্রতিরোধ করতে হয়। নাস্তিক বা ধর্মহীন ব্যাক্তিদের নিয়ন্ত্রণে না আনলে সমাজ ও রাষ্ট্র ভেঙে পড়বে।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন