কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভোট নিয়ে শুরু হয়েছে নানা সমীকরণ। এবারে সিটি করপোরেশন এলাকায় নতুন ভোটার প্রায় ২২ হাজার। নতুন ভোটার এবং এর সঙ্গে ৫০ হাজারের বেশি সংখ্যালঘু ভোটার নির্বাচনে মেয়র পদে জয়-পরাজয়ে নিয়ামক বা ফ্যাক্ট হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ নিয়ে নগর জুড়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এদিকে জয়ের জন্য প্রতিনিয়ত নিজেদের মতো করে কৌশল নিয়ে এগোচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী নৌকা প্রতীকের আরফানুল হক রিফাত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের নিজাম উদ্দিন কায়সার ও টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মনিরুল হক সাক্কু। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে জয়-পরাজয়ে কিছু ফ্যাক্টর কাজ করবে। এর মধ্যে নতুন তরুণ ভোটার, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট ও নারী ভোটার। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে যিনি এসব ভোট কব্জা করতে পারবেন, তিনিই হাসবেন বিজয়ের হাসি। সেইদিক থেকে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট অনেকটা স্থায়ী বলা চলে। আর নতুন ভোটারদের বেশিরভাগই তরুণ এবং তারা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ^াসী।
কুসিক নির্বাচন নিয়ে তরুণ ভোটারদের সঙ্গে নানা আলোচনা হয়। তাদের অনেকেই এবার নতুন ভোটার হয়েছেন। প্রথমবারের মতো ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন তারা। জীবনের প্রথম ভোট তারা একটু হিসাব করেই দেবেন।
নতুন ভোটার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত জানান, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় তরুণদের গুরুত্ব দেয়। তারুণ্য আগ্রাধিকার দিয়ে দেশকে ডিজিটালাইজড করছেন। শিক্ষা ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তনসহ তরুণ প্রজন্মের জন্য কাজ করছে সরকার। এ প্রজন্মের যারা নতুন ভোটার, তারা শেখ হাসিনাকে ভোট দিবে। শেখ হাসিনাকে ভোট দেওয়া মানে নৌকাকে ভোট দেওয়া। যেখানে নৌকা সেখানে ভোট শেখ হাসিনা সফল হউক।
স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার জানান, এবারের কুসিক নির্বাচনের ১০ শতাংশ তরুণ ভোটার। আমি এই নতুন প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি হিসেবে নতুন কুমিল্লা তৈরী করতে চাই। যে কুমিল্লার সাথে আধুনিকতা ও প্রযুক্তির একটা সমন্বয় থাকবে। তরুণ ভোটাররা ‘বদলে যাও, বদলে দাও’ এ শ্লোগানে বিশ^াসী। তারাই বদলে দিয়ে এই সিটিতে নতুন প্রজন্মের নতুন মুখের সৃষ্টি করবে।
এদিকে তরুণ ভোটাররা স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর শক্তি, এমন দাবি করে তিনি গণমাধ্যমে জানান, নির্বাচিত হলে তরুণদের নিয়ে তার নানা পরিকল্পনা রয়েছে।
নতুন ভোটারদের পাশাপাশি কুসিক নির্বাচনে মেয়র পদে জয়-পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটাররা। এবার মোট ভোটারের প্রায় ৫০ হাজারের বেশি রয়েছে সংখ্যালঘু ভোট। এসব ভোটাররা যার দিকে ঝুঁকবেন, জয়ের পাল্লা সেদিকেই ভারী হবে মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল রিফাত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার ও মনিরুল হক সাক্কুকে নিয়ে এখন থেকেই চলছে হিসাব-নিকাশ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ ও দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা। দলীয় ভোটের বাইরে নতুন ভোটার ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট কিভাবে আয়ত্বে আনা যাবে এনিয়ে হিসেব নিকেশ শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগে। দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার ও সাক্কুর মাথায় চিন্তা একটাই সংখ্যালঘু প্রায় ৫০ হাজার ভোট যদি আওয়ামী লীগের নৌকায় পড়ে তাহলে ভোটের হিসেব নিকেশের সমীকরণটা কঠিন হয়ে পড়বে তাদের জন্য। অন্যদিকে নতুুন ও সংখ্যালঘু ভোটের একটিও যাতে নিজেদের হাতছাড়া না হয় এজন্য ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরা এখন থেকেই সোচ্চার ভূমিকা রাখছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন