মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে কুয়ালালামপুর। গত শনিবার দেশটির রাজপথে জড়ো হন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। এ সময় তারা দুর্নীতির দায়ে নাজিব রাজাকের পদত্যাগ ও তাকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান। গত ১৫ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো দেশটির শীর্ষ সংস্কারপন্থী সংগঠন বারশি এ বিক্ষোভের আয়োজন করে। গত শনিবারের এ বিক্ষোভ ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল মালয়েশিয়ার পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করে সমাবেশ প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়। তারপরও নাজিব রাজাকের পদত্যাগের দাবিতে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, নাজিব রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন। তবে রেড শার্ট পরা সরকারপন্থীরা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ইয়োলো শার্ট পরা সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করার হুমকি দিলে সম্প্রতি উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সমাবেশের কয়েক ঘণ্টা আগে কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়। ব্যাপক বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতেই রাজধানী কুয়ালালামপুরের কয়েকটি রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
দেরেক ওং (৩৮) নামের একজন বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা একটি স্বচ্ছ সরকার চাই। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। তিনি বলেন, নাগরিক হিসেবে আমি দেশের ভবিষ্যতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে এখানে এসেছি। আমরা আশা করি, নাজিবকে সরানো হবে এবং আদালতে তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হবে। নাজিব অবশ্য কোনো ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। সরকার সমর্থকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, এই বিক্ষোভ হচ্ছে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে পদচ্যুত করার জন্য বিরোধীদলের একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার। তবে বেরসির ডেপুটি চেয়ারম্যান শাহারুল আমান সাহারি বলেন, আমরা দেশকে হীন করার জন্য আসিনি। আমরা দেশকে ভালোবাসি, আমরা সরকারকে চূর্ণ করতে আসিনি। আমরা এসেছি সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য। সমাবেশের আগের দিন আয়োজক সংগঠনের নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি সরকারবিরোধী সমাবেশের প্রতি সমর্থন জানানোয় বহুসংখ্যক সাধারণ নাগরিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামেনস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। আল জাজিরা, বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন