একটি জরিপে অংশ নেয়া এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বলেছেন, সেবা গ্রহণে ঘুষ থাকতে পারে বলে তারা মনে করেন। বাকি দুই-তৃতীয়াংশ মনে করেছেন, এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও মাত্র ৫ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষের দুর্নীতি দমন আইন সম্পর্কে ধারণা বা সচেতনতা আছে। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্ট্যাডিজ-সিজিএস এবং সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ-সিআইপিইর পরিবারভিত্তিক এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ২০২১ সালের ২৭ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যবর্তী সময়ে ১ হাজার ২৩১ জন জাতীয়ভাবে প্রতিনিধিত্বশীল প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড টেলিফোন ইন্টারভিউ পদ্ধতিতে জরিপটি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিজিএস।
সিজিএস বলছে, মাত্র ৫ দশমিক ৭ শতাংশ নাগরিক দুর্নীতি দমন আইন সম্পর্কে সচেতন। তাদের অভিজ্ঞতা বলছে, দুর্নীতির ঘটনা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সরকারি কার্যালয়ে অনেক বেশি। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি নিয়ে বেশি তদন্ত করতে দেখা যায়। দুর্নীতি সম্পর্কে নাগরিকের দৃষ্টিভঙ্গি, মনোভাব, বিশ্বাস মিশ্র বলেও জরিপে বলা হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, বর্তমান দুর্নীতির পর্যায় অগ্রহণযোগ্য মনে করে ৪৪ শতাংশ উত্তরদাতা। দুই-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি উত্তরদাতার মতে, অনুমোদনহীন সেবা, অর্থ উপহার, অথবা ঘুষ কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ উল্লেখ করেছে যে এটা সর্বদা বা মাঝেমধ্যে সমর্থনযোগ্য। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দুর্নীতিকে অনুমোদন করার পক্ষেই রয়েছেন। দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য জরিপে উত্তরদাতারা প্রস্তাব করেছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জনসচেতনতা তৈরি, আইন ও বিধিনিষেধ শক্তিশালী, কৌশল প্রয়োগ এবং শাস্তির বিধান জোরদার, জনপ্রশাসনের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী, আইনের শাসনের ধারাবাহিক প্রয়োগ নিশ্চিত এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা প্রসঙ্গে সাতটি নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উত্তরদাতারা সেনাবাহিনীকে সবচেয়ে বেশি আস্থাভাজন বলেছেন। অন্যান্য নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে আইন ও বিচার ব্যবস্থা, স্থানীয় সরকার, ভূমি প্রশাসন বা রেজিস্ট্রেশন, স্থানীয় নেতা এবং পুলিশ। রাজনৈতিক দলকে সবচেয়ে কম আস্থাশীল হিসেবে মত দিয়েছেন উত্তরদাতারা। জরিপে উঠে আসে, করোনার অভিঘাতে চাকরি হারায় প্রায় অর্ধেক মানুষ। ফলাফলে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি দরিদ্রকে আরও দরিদ্র করেছে। কিন্তু ধনীরা সেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
জরিপে বলা হয়, এ সময়ে ১ কোটি ৪৭ লাখ পরিবারের কমপক্ষে একজন কর্মসংস্থান হারিয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ পরিবার সরকারি সহায়তা গ্রহণ করেছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২১ লাখ পরিবারের (মোট পরিবারের ৬ শতাংশ) কমপক্ষে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের মোট পরিবারের প্রায় অর্ধেক (৫১ শতাংশ) পরিবারের মধ্যে ন্যূনতম একজন সরকারি স্বাস্থ্য খাত থেকে সেবা গ্রহণ করেছেন। বাকিটা বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিক, গ্রাম্য ডাক্তার ও ওষুধের দোকান থেকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন