চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮ মাসে সারা দেশে ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে ২১ হাজার ২৩২ জন। এদের মধ্যে ৫৬৫ জন ছিল মারাত্মক ম্যালেরিয়া আক্রান্ত। তাদের মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল (রোববার) স্বাস্থ্যবিভাগ, ব্র্যাক ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের যৌথ উদ্যোগে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, দেশে ১ কোটি সাড়ে ৩২ লাখ জনগোষ্ঠী ম্যালেরিয়া রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে তিন পার্বত্য জেলা উচ্চপ্রবণ, কক্সবাজার জেলা মধ্যপ্রবণ ও চট্টগ্রামসহ ৯টি জেলা নি¤œপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত। সারা দেশের ১৩টি জেলার ম্যালেরিয়া প্রবণ উপজেলা ৭১টি। উচ্চ ও মধ্যপ্রবণ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী ৩৪ লাখ ৪০ হাজার। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছে বান্দরবানে ১০ হাজার ৮০৩ জন। এরপর রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি যথাক্রমে ৭ হাজার ১২৬ জন ও ১ হাজার ৮১৮ জন। কক্সবাজারে ১ হাজার ১০৪ জন, চট্টগ্রামে ২২২ জন।
গতবছরের তুলনায় মৃতের সংখ্যা বাড়লেও মারাত্মক ম্যালেরিয়া আক্রান্তের হার ক্রমান্বয়ে কমেছে। ২০১৫ সালে ১ হাজার ২৩ জন মারাত্মক ম্যালেরিয়া আক্রান্তের মধ্যে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ২০১৪ সালে ২ হাজার ৬৩ জন মারাত্মক ম্যালেরিয়া আক্রান্তের মাঝে মৃত্যু ঘটে ৪৫ জনের। যা গত কয়েক বছেরর মধ্যে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যায় সর্বোচ্চ। ২০১৩ সালে ১ হাজার ১৫৫ জন মারাত্মক ম্যালেরিয়া আক্রান্তের মধ্যে ১৫ জন, ২০১২ সালে ১ হাজার ৪৫৭ জনের মধ্যে ১১ জন, ২০১১ সালে ৩ হাজার ৯৫ জনের মধ্যে ৩৬ জন, ২০১০ সালে ২ হাজার ৭২৬ জনের মধ্যে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়।
ব্র্যাকের সিনিয়র ম্যানেজার দিলীপ কুমার সাহা সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০১৫ সালে ম্যালেরিয়াজণিত কারণে বিশ্বে ২১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ অসুস্থ এবং ৪ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা গেছে, যাদের বেশিরভাগের বয়স ৫ বছরের নিচে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আলাউদ্দিন মজুমদারের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, বিআইটিআইডি’র পরিচালক ডা. দেলোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দীকি, ব্র্যাকের কর্মসুচি প্রধান ডা. মুক্তাদির কবির, বিশেষজ্ঞ বক্তা ছিলেন জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবদুল্লাহ আবু সাঈদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম এ সাত্তার, ডা. অনুপম বড়–য়া ও ডা. রাশেদা সামাদ। স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাকের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সঞ্জয় কুমার পাল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন