পটল, করলা, কচু, পেয়ারার পরে বিদেশি ফল ড্রাগন চাষে সচ্ছলতার মুখ দেখলেন বগুড়ার কাহালু উপজেলার কালাই ইউনিয়ন পরিষদের সুখানপুর গ্রামের চাষি উদ্যোক্তা জালাল শেখ। গত বছর নিজের ৭৫ শতাংশ জমিতে উৎপাদিত ড্রাগন ফল বিক্রি করেছেন ১৫ লাখ টাকায়। বছরে ১২ মাসে ৫ লাখ টাকা খরচ করে লাভ পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা।
জালাল শেখ এর আগে একই জমিতে করলা, পটল ও কচুর পরে থাই পেয়ারার চাষ করেছেন। পেয়ারা বাগান করার পর মাত্র ৪ বছর স্বাভাবিক ফলন পান। এরপর গাছগুলো মরে যেতে শুরু করলে তিনি টেলিভিশনে প্রচার হওয়া প্রতিবেদনে বিদেশি ফল ড্রাগন চাষ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পান। কিন্তু পুঁজি সঙ্কটের কারণে ড্রাগন প্রকল্প হাতে নিতে পারছিলেন না।
তিনি জানান, এ সময় তার পাশে এসে দাঁড়ায় সরকারি সংস্থা ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (এসডিএফ)। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জালাল শেখের সাথে আলোচনা করে ঋণ মঞ্জুর করেন। এই ঋণের পাশাপাশি নিজের কিছু অর্থ যোগ করে তিনি নিজের ৭৫ শতাংশ জমিতে ড্রাগন বাগান তৈরি করেন। রোপন করেন দুই হাজার ২১টি চারা।
চারা রোপনের ৯ মাস পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। শুরু হয় বিক্রি। দ্বিতীয় বছরেই জালাল ফল বিক্রি করেন ১৫ লাখ টাকার। এমন সাফল্য প্রসঙ্গে এসডিএফের কাহালুর সিনিয়র ব্যবস্থাপক আতোয়ার রহমান ইনকিলাবকে বলেন, জালালের মতো তরুণ কৃষি উদ্যোক্তারা যদি সরকারি সংস্থার ঋণ সহায়তা লাভ করে তাহলে তাদেরকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না।
সংস্থার কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন আকন্দ জানান, গত ১ জুন একনেক সভায় জাতীয় দরিদ্র বিমোচনে ১৪৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাশ হয়েছে। ওই অর্থে সারাদেশের ১ কোটি ৮০ লাখ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা বগুড়ার কাহালু উপজেলার জালাল শেখের মতই উপকৃত হবেন।
এদিকে জালাল শেখের ড্রাগন ফলের বাগানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আবু বকর সিদ্দিক নামে একজন শ্রমিক বাগানের পরিচর্যা ও ফল উত্তোলন করছেন। সুপারভিশনে আছেন এসডিএফের কাহালু উপজেলার সিনিয়র ব্যবস্থাপক আতোয়ার রহমান।
কথা প্রসঙ্গে আবু বকর সিদ্দিক জানালেন, তিনি বাগানে ১১ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করেন। বাগানের পাশেই তার বাড়ি। তাই ওই টাকাতেই সন্তুষ্ট তিনি। তিনি আরও জানান, একবার ড্রাগনের চারা লাগানোর পর গাছ টানা ৪০ বছর ফল দিয়ে যায়। তাই এর উৎপাদন ও পরিচর্যা খরচও কম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন