বিদ্বেষপ্রসূত শ্বেতপত্রের কারণে তথাকথিত গণকমিশন আজ গণধিকৃত ও গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। ইসলাম বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরাম, ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও ঈমানদারগণ ঐক্যবদ্ধ। অপশক্তির জনসমর্থন আজ শূন্যের কোটায়। পক্ষান্তরে উলামায়ে কেরামের প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানের অন্তরে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। মসজিদ, মাদরাসা ও ওয়াজ মাহফিলে এখন স্থান সংকুলান হয় না। তাদের ভাষায় নাউজুবিল্লাহ উলামায়ে কেরামকে নাকি আর বাড়তে দেয়া যায় না! তারা কতবড় জালেম! তাদের কত বড় স্পর্ধা! আল্লাহর জমিনে আল্লাহর কথা নিষিদ্ধ করতে চায়! মুসলিম রাষ্ট্রে তাদের অবাঞ্জিত ঘোষনা করা উচিত। তারা উলামায়ে কেরামের মুখে তালা লাগাতে চায়। বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিতে চায়। মিথ্যা মামলা, জেল-জুলুম, ও জুজুর ভয় দেখিয়ে রাজনৈতিক দল গুলোর মত উলামায়ে কেরামদেরও নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।
নাস্তিক তাসলিমা লিখেছে, “যারা মৌলবাদকে বিদায় করতে চায় তাদের উচিত ধর্মকে আগে বিদায় করা। কেননা সাপকে যতই বোঝানো হোক না কেন সে আজ না হয় কাল আপনাকে ছোবল দিবে। সাপ (ধর্ম) না থাকলে ছোবল মারার প্রশ্নই উঠে না। (বাহির অন্তরে কলাম সাপ্তাহিক খবরের কাগজ ১৮ মে ১৯৯৩)। নাস্তিক তাসলিমার উত্তরসূরীরা চায় এদেশে তাওহিদী জনতার ধর্মীয় বিশ্বাস, ইসলামী মূল্যবোধ ও ধর্মীয় সংস্কৃতি ধ্বংস করে নাস্তিকের মত বেপরোয়া জীবন যাপন করতে। তারা এ পবিত্র ভূমিকে কৃত্রিম নরক বানাতে চায়। উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে কাল্পনিক শ্বেতপত্র ও আষাঢ়ে গল্প সেই নীল নকশারই বহিঃপ্রকাশ। উল্লেখ্য, ত্রিশ নম্বরে যার নাম এসেছে তিনি কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিক নয়। সৌদী আরবে দাওয়াতি কাজ করেন। এ থেকেই প্রতীয়মাণ ব্যক্তি নয় দেশ নয় বরং ইসলামই এই অশুভ শক্তির টার্গেট।
ইসলামকে যারা সহ্য করতে পারে না, ধর্মের নাম শুনলেই যাদের গায়ে গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায় সেসব ধর্মবিদ্বেষী অপশক্তি ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে এটি স্বাভাবিক। তবে আমরা ধর্মপ্রাণ মুসলমান, উলামায়ে কেরাম, ওয়ায়েজিনে কেরাম ও পীর মাশায়েখগণ সেইসব ধর্মবিদ্বেষী তাসলিমার অনুসারীদের কোনোভাবেই আমাদের ঈমান ডাকাতির সুযোগ দিতে পারি না। জাতিকে নাস্তিক বানানোর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তাবয়নে সহযোগী হতে পারি না। হাদিসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, “তুমি আলেম হও অথবা আলেমের ছাত্র হও অথবা আলেমের সহযোগী হও অথবা আলেমকে ভালবাস তবে কোনভাবেই পাচঁ নম্বর তথা আলেম বিদ্বেষী হয়ো না, তাহলে ধ্বংস অনিবার্য”। এসব ইসলাম বিদ্বেষী অপশক্তি ও ইসলামের শত্রুদের প্রতিহত ও প্রতিরোধ করা প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও ঈমানদারের ঈমানী দায়িত্ব। মুসলিম রাষ্ট্রে এসব ইসলাম বিদ্বেষীদের কার্যকলাপ কোনোভাবে চলতে পারে না। পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক বলেন, “তোমরা ইসলাম বিরোধীদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়-১৯৩:২।
আমিন আস্তে না জোরে, হাত ওপরে না নিচে, রফয়ে এদাইয়ন একবার না বার বার। দোয়া’তে হাত তোলা না তোলা, সালাতু সালাম বসে না দাড়িয়ে, ঈদ দু’টি না তিনটি এগুলো ইসলাম ধর্মের বেসিক কোন বিষয় নয়। ইখতেলাফ আসলাফের মধ্যেও ছিল তবে সীমাবদ্ধ। ইখতেলাফ সত্ত্বেও পরস্পর এহতেরাম ও মহব্বত ছিল। এসব মুস্তাহাব্বাত, ফরোআত ও জুজিয়াত এবং হাদিসের ভাষায় ‘মা’লা’ঈয়ানি’ এড়িয়ে ইসলাম বিরোধীদের মোকাবেলায় সমগ্র তাওহিদী জনতা, সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও সমস্ত উলামায়ে কেরাম মতবিরোধ ও ভেদাভেদ ভুলে দ্বীনের বৃহত্তর স্বার্থে ইসলামের হেফজতে আল্লাহর ওয়াস্তে নবীজীর(সা.) ভালবাসায় সিক্ত হয়ে সাদা দিলে উদার মনে এক প্লাটফর্মে জনপ্রিয় দ্বীনি সংগঠন হেফাজতে ইসলামের পতাকা হাতে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে গেলে ইসলামবিরোধী অপশক্তি অতীতের মত লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবে ইনশাআল্লাহ। ঈমানী শক্তিতে বলিয়ান, আমার প্রিয় বোন ‘মুসকান’ ঈমানী অস্ত্র আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে যদি হয়ে গেরুয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে একাই লড়ে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে তাহলে আমরা আঠার কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান কেনো পারব না?
পরিশেষে বলতে চাই, ইসলামের শিক্ষায় হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। আসুন যার যার অবস্থান থেকে আমাদের ভালবাসা ও সম্মানেরপাত্র আলেম সমাজকে অসম্মান ও হেয়প্রতিপন্ন করার প্রতিবাদ করি। হেফাজতে ইসলামের সৃষ্টি ও লক্ষ্যই হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষীদের দমন এবং অশুভ শক্তির মোকাবেলা করা। শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফি রহিমাহুল্লাহ ও কায়েদে মিল্লাত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী রহিমাহুল্লাহর পরীক্ষিত ও প্রদর্শিত পন্থায় শাপলার চেতনায় ইসলাম বিরোধীদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ইসলাম বিদ্বেষী অশুভ শক্তি মনেহয় ভুলে গেছে আল্লামা শফি(র.) ও আল্লামা বাবুনগরী(র.) মৃত্যুবরণ করলেও উনাদের আদর্শ ও অনুসারীরা কিন্তু জীবিত। ইসলাম বিদ্বেষীদের স্মরণ করে দিতে চাই এক শফি কবরে লক্ষ শফি ওপরে, এক বাবুনগরী কবরে লক্ষ অনুসারী ওপরে। হেফাজতে ইসলাম সক্রিয় হলে অশুভ শক্তি অটো নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহপাক বলেন, “তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করোনা, যদি তোমরা মুমিন হও তবে তোমরাই জয়ী হবে-১৩৯:৩।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন