বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জাতীয়তাবাদী শক্তি তথা বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যেই ওয়ান ইলেভেনের ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিন সরকার আমাদের নেতা তারেক রহমানের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে। ওই সময় মাইনাস টু ফর্মুলার নামে বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা এবং দেশকে বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা হয়েছিল। তারই অংশ হিসেবে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির বহু সিনিয়র নেতাকে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হয়েছিল। গতকাল (সোমবার) বিকেলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হলে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলেই তারেক রহমান বীরের বেশে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন। তিনি নেতাকর্মীদেরকে ভোটাধিকার ফিরিয়ে পাওয়ার আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের আহ্বান জানান।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল। রঙ-বেরঙয়ের বেলুন, ব্যানার দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় মিলনায়তন। জাতীয় প্রেসক্লাবের নিচতলার মিলনায়তনে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্টা। অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, যুবদলের বজলুর রহমান, মো: আব্দুল খালেক, মোরতাজুল করিম বাদরু, মীর নেওয়াজ আলী, মামুন হাসান, আবদুল খালেক হাওলাদার, কাজী রফিক প্রমুখ। ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- মাহবুবুল হাসান পিঙ্কু, শামসুজ্জামান সুরুজ, মোনায়েম মুন্না, শিল্পাঞ্চল থানা সভাপতি মোস্তফা কামাল রিয়াদ, কেন্দ্রীয় সদস্য গিয়াস উদ্দিন মামুন, ছাত্রদল নেতা রুহুল ইসলাম মনিসহ হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ইসি পুনর্গঠনের ব্যাপারে সম্প্রতি খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনা প্রসঙ্গে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের নেত্রী একটি স্বাধীন এবং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন মানে না। কারণ তারা আবারো ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না।
তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আনন্দ-উৎসবে আমাদের নেতার জন্মদিন পালন করার কথা ছিল। কিন্তু আমরা বিষণœ মনে জন্মদিনের অনুষ্ঠান করছি। তারেক রহমান আমাদের মাঝে উপস্থিত নেই। যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব নেই। অনেকেই মিথ্যা মামলায় হুলিয়া নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।
ড. মোশাররফ বলেন, ওয়ান ইলেভেনের তথাকথিত সরকারের সময় আমাদের নেতা তারেক রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। রশিতে ঝুলিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। উপর থেকে নিচে ফেলে দেয়ায় তার মেরুদ-ের হাড় ভেঙে যায়। এখনো তিনি আদালতের নির্দেশে লন্ডনে মেরুদ-ের চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, শত্রুরা ভেবেছিল জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। কিন্তু তা হয়নি। বরং খালেদা জিয়ার যোগ্য নেতৃত্বে বিএনপি ৩ বার দেশ পরিচালনা করেছে। এমতাবস্থায় দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি আবারো দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করবে। এজন্যই আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ভয় পায়। তারেক রহমানকে ভয় পায়। কারণ তারা জানে তারা কী করেছে। দেশের মানুষ তাদের সম্পর্কে ভালো করেই জানে। আজকে বিএনপির ওপর এত নির্যাতনের পরও কোনো নেতাকর্মী দল ছেড়ে যায়নি। আসলে বিএনপি এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগকে ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের ফসল। বর্তমানে তাদের উত্তরসূরিরা দেশ পরিচালনা করছে। আর ওই সরকার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা দিয়ে নিজেরা বিদেশে পালিয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আটকের পর নির্যাতন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের লাগামহীন দুর্নীতি আর অন্যায়ের যেনো কেউ প্রতিবাদ করতে না পারে সেজন্য তারেক রহমানকে গ্রেফতারের পর নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। কিন্তু আল্ল¬াহর রহমতে সুদূর লন্ডনে থেকেও তারেক রহমান দেশের ব্যাপারে সচেতন। তিনি দেশের সবকিছুর খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। এ কারণেই তার দেশি-বিদেশি শত্রুরা আজো ভীত-সন্ত্রস্ত্র। আজকে বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। সংসদে কোনো বিরোধী দল নেই। দেশে চলছে এক নেত্রীর একনায়কত্ব। যেমনটি অতীতে বাকশাল কায়েম করে এককভাবে দেশ চালাতেন শেখ মুজিবুর রহমান।
আবদুস সালাম আজাদ বলেন, ষড়যন্ত্র, নির্যাতন করে যতই মিথ্যা মামলা দেননা কেনো তারেক রহমানকে স্তব্ধ করা যাবে না। তিনি দেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়ে ইতিমধ্যে জাতীয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। কারণ তিনি মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়ার সন্তান। কায়েমী গোষ্ঠীর বুঝা উচিত তিনিই দেশের ভবিষ্যৎ নেতা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন