শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বেশি ফলন জাতের ধান শনাক্ত করলেন বিজ্ঞানীরা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

ধান বিজ্ঞানীরা নতুন ধানের জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি কৃষকের মাঠে সবচেয়ে বেশি ফলন দিতে সক্ষম এমন অনেকগুলো ধানের জাত শনাক্ত করেছেন। মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন জাতের ফলনের তুলনা ও নিবিড় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমন এবং বোরো উভয় মৌসুমেই সেরা ফলন দেওয়া ধানের জাত শনাক্ত করেলেন তারা। এ জাতগুলো এখন সারা দেশে সম্প্রসারণ করা গেলে চাষীদের উৎপাদন এবং মুনাফা উভয়ই বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন ধান বিজ্ঞানীরা। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) এবং ব্রি কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত এক গবেষণালব্ধ ফলাফল এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণা তথ্যে বলা হয়, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ কোটি ৮৭ লাখ টন চাল উৎপাদন করে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম চাল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। হেড টু হেড অন-ফার্ম অ্যাডাপটিভ ট্রায়ালে গবেষকরা দেখেছেন, বর্তমানে ব্রি ধান ৮৮, ব্রি ধান ৯৬ এবং ব্রি ধান ৯২ বোরো মৌসুমের সেরা ফলন প্রদানকারী ধানের জাত। রোপা আমান মৌসুমে, আইআর ১৩, এফ ৪৪১ এবং ব্রি ধান ৭৯ আকস্মিক বন্যা-প্রবণ পরিবেশের কার্যকরী জাত। এছাড়া ভারতীয় ধানের জাত স্বর্ণার বিকল্প হিসেবে দেশের উত্তরাঞ্চলে ব্রি ধান ৯৩, ব্রি ধান ৯৪ এবং ব্রি ধান ৯৫ সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে মাঠ পর্যায়ে আমনের সর্বোচ্চ ফলন প্রদানকারী জাত হচ্ছে ব্রি ধান ৮৭।
বিগত তিন বছর ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি হেড টু হেড অ্যাডাপটিভ ট্রায়াল (এইচএইচএটি) পরিচালনা করার পর গবেষকরা এই ধানের জাতগুলো চিহ্নিত করেছেন। তারা পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও পরিমাণগত ডাটা তৈরির মাধ্যমে জনপ্রিয় পুরোনো মেগা জাতের তুলনায় নতুন উদ্ভাবিত জাতের উৎপাদনশীলতা পর্যবেক্ষণ করার জন্য ইচএইচএটি ট্রায়াল পরিচালনা করেন। এই ট্রায়ালে নতুন-উদ্ভাবিত উফশি জাত, আগে চাষ করা বেঞ্চমার্ক জাত এবং কৃষক-পর্যায়ের স্থানীয় জাতগুলোর উৎপাদনশীলতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য এক মাঠে একসঙ্গে চাষ করে উল্লেখিত ফলাফল পাওয়া যায়। এছাড়া গবেষণাটির মাধ্যমে বিভিন্ন সম্ভাবনাময় জাত এবং জাতগুলোর বিভিন্ন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ট্রায়ালে গবেষকরা কৃষক এবং কৃষি সম্প্রসারণকর্মীদের কাছ থেকে এসব জাত সম্পর্কে মতামত সংগ্রহ করেন। এছাড়া এই ট্রায়াল কৃষকের মধ্যে কৌতুহল, জ্ঞান এবং নতুন জাতের কার্যকরী চাহিদা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, গত বোরো মৌসুমে উফশি জাতের মধ্যে সর্বনিম্ন ফলন দিয়েছে ব্রি ধান ২৮ এবং জাতটিতে বিভিন্ন পোকা-মাকড়ের প্রকোপও ছিল বেশি। তাই এই জাতটিকে অবিলম্বে প্রতিস্থাপন করা উচিত বলে মনে করেন ধান বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণ কর্মীরা। এছাড়া ব্রি ধান ২৯ এবং ব্রি ধান ৮৯-এর ফলন প্রায় সমান হয়েছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় ব্রি ধান ২৯ নেক ব্লাস্ট রোগ দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল।
গবেষণাটির ব্রি অংশের ফলাফল উপস্থাপন করেন ফলিত গবেষণা বিভাগের প্রধান মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হুমায়ুন কবির এবং ব্রি ও ইরি অংশের ফলাফল উপস্থাপন করেন ইরির বিজ্ঞানী এবং সাউথ এশিয়া– সিড সিস্টেম অ্যান্ড প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট লিড- ড. স্বাতী নায়েক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন