খোলা জায়গায় গোসলের সময় লোকজন তাকিয়ে থাকত। খুব অস্বস্তি হতো। সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হতো মাসিকের সময়।’ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ধলপুর এলাকার একটি বস্তিতে থাকা এক কিশোরী এভাবেই জানিয়েছিল তার অসুবিধার কথা। রাজধানী ঢাকার নিম্ন আয়ের পরিবারের বসবাসের স্থান বা বস্তিতে থাকা অনেক কিশোরী ও তরুণী এখনো এই সুবিধার বাইরে। গতকাল শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় এক রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিম্ন আয়ের এলাকায় থাকা কিশোরী ও তরুণীদের জন্য নিরাপদ গোসলখানা নিয়ে জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
‘নিরাপদ গোসলখানা সবার জন্য সবখানে’ সেøাগান নিয়ে রাজধানীর ধলপুর, মালেক মেম্বার, আইজি গেট এবং ম্যাচ কলোনি বস্তিতে এ বছরের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে অংশ নেয় ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি ৪১৭ জন কিশোরী ও তরুণী।
জরিপের অন্তর্ভুক্ত চারটি স্থানের তথ্য বলছে, ৭২ শতাংশ কিশোরী-তরুণী উন্মুক্ত গোসলখানায় তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকে। ওই এলাকার কেউবা আশপাশের উঁচু ভবন থেকে, কেউ উন্মুক্ত গোসলখানায় গোসলের দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে কি-না, তা নিয়ে ভয়ে থাকে অনেক মেয়ে। এ ছাড়া উন্মুক্ত গোসলখানায় পুরুষ ও বয়স্ক নারীদের বকাঝকা, যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনাও ঘটে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই চার এলাকার ৯৯ শতাংশ গোসলখানাই উন্মুক্ত। ওই সব গোসলখানার মাত্র ১৫ শতাংশ মেয়েদের জন্য আলাদা। বাকিগুলো নারী-পুরুষকে একসঙ্গেই ব্যবহার করতে হয়। গোসলখানাগুলোতে ছাদ ও দেয়াল না থাকায় মেয়েদের কোনো গোপনীয়তা থাকে না। অনেক কিশোরী বয়স্ক নারীদের অশোভন মন্তব্যের শিকার হয়। গোসলের সময় পুরুষেরা থাকায় অস্বস্তিতে ভোগে তারা।
জরিপ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, একটি গোসলখানা ৩৫ থেকে ৪৫ জন ব্যবহার করে থাকে। ফলে দীর্ঘসারি থাকে গোসলের জন্য। ৭৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মেয়ে জানিয়েছে, তারা সহজে জায়গা পায় না। জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ওয়াশ স্পেশালিস্ট এসএম তারিকুজ্জামান। সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন মানিক কুমার সাহা, শিরোপা কুলসুম, ফায়েজ বেলাল প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন