যানজটে ঢাকার জীবন দিন দিনই দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। সকালে শুরু হওয়া যানজট যেন মধ্যরাতেও শেষ হয় না। কর্মব্যস্ত মানুষের প্রতিদিনকার বড় ভোগান্তি হয় এই অসহনীয় যানজটের কারণে। গণপরিবহনে উঠলে গন্তব্যে যেতে বসে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। রোদে, ঘামে আর গণপরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রীর ঠাসাঠাসিতে নাকাল রাজধানীবাসী।
দিন দিন এ পরিস্থিতি আরও নাজুক হচ্ছে। সকাল থেকেই সড়কে ছিল গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় মোবাইল অ্যাপ ভিত্তিক মোটরসাইকেল চালকদের। তারাও ছিলেন যাত্রীর অপেক্ষায়। গণপরিবহন, সিএনজি চালিত অটোরিকশায়, ব্যক্তিগত যানবাহনে ও মোবাইল অ্যাপ ভিত্তিক মোটরসাইকেলে করে যে যার মতো ছুটে চলেছেন তাদের কর্মস্থলে। সড়কে যানবাহনের প্রচন্ড চাপ ও বিভিন্ন সড়কের সংস্কার কাজের কারণে সৃষ্টি হওয়া যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীবাসী।
কর্মব্যস্ত অন্য দিনের মতো গতকাল সোমবারও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছিল তীব্র যানজট। ব্যস্ততম সড়কে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে গাড়িগুলো। এতে সময় ও অর্থ যেমন নষ্ট হচ্ছে, মানুষের দুর্ভোগও ছাড়িয়ে যাচ্ছে সহনীয়তার সব সীমা। শহরের বাসিন্দারা প্রতিদিনের যানজটের কবলে পড়ে নানা স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এর মধ্যে যানজটে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি নারী-শিশুদের। শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।
রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, এফডিসি মোড়, মগবাজার, শাহবাগ, প্রেসক্লাব, মতিঝিল, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ি এলাকায় দেখা যায় তীব্র যানজট। কর্মজীবীরা গাড়িতে বসে বারবার শুরু ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকাচ্ছেন।
যানজটের কথা মাথায় রেখে অনেকে আগেভাগে বাসা থেকে বের হচ্ছেন। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হচ্ছে না। প্রতিদিনই রাস্তায় দুর্ভোগ বাড়ছে। অনেককে বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে ছুটতে দেখা গেছে। যথাযথ নগর পরিকল্পনা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন ছাড়া এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি নেই, মনে করেন যাত্রীদের অনেকে।
শিকড় পরিবহনের যাত্রী রাশেদুল বলেন, ঢাকায় যানজট পরিস্থিতির দিনদিন বাড়ছে। যানজট নিরসনে বিভিন্ন সময় নানা পরিকল্পনা-মহাপরিকল্পনা নেয়া হলেও কোনো উন্নতি হচ্ছে না। উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে খোঁড়াখুড়িও শেষ হচ্ছে না। সড়কের দুপাশে অবৈধ পার্কিং তো রয়েছেই। রাস্তায় প্রচন্ড যানজটের কারণে ৩০-৪০ মিনিটের পথ যেতে দেড় ঘণ্টার বেশি লেগেছে। চালকদের যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো। তবে প্রতিদিনের মতো আজও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তৎপরতা দেখা গেছে।
বাস চালকরা বলেন, মিরপুর রুটের কয়েকটি স্থানে বেহাল দশার কারণে আমাদের ট্রিপ কমে গেছে। মিরপুর থেকে গুলিস্তান ট্রিপ কমে যাওয়ার কারণে আয়ও আগের চেয়ে কমে গেছে। সকাল, দুপুর ও রাতরে সবসময় লেগে থাকে যানজট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন