বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হুমকি মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে -প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সিলেট অফিস | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ৫:২৯ পিএম

ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক যে কোনো ‘হুমকি’ মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে সব সময় প্রস্তুত থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আজ বুধবার দুপুরে সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসে ১৭ পদাতিক ডিভিশনের অধীনে একটি পদাতিক ব্রিগেডসহ ৯টি ইউনিটের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীতে ১৭ পদাতিক ডিভিশনের যাত্রা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আরও একটি পদাতিক ব্রিগেড সদরসহ নয়টি ইউনিটের যাত্রা শুরু হলো।

সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক যে কোনো হুমকি মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘পেশাদারিত্বের গুণগত মান অর্জনের জন্য সবাইকে পেশাগতভাবে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ এবং মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হতে হবে।’

‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ দেশের সম্পদ,দেশের মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের প্রতীক। সবাই ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের প্রতি আস্থা,পারস্পরিক বিশ্বাস,সহমর্মিতা,ভ্রাতৃত্ববোধ,কর্তব্যপরায়ণতা, দায়িত্ববোধ এবং সর্বোপরি শৃঙ্খলা বজায় রেখে কর্তব্য সম্পাদনে একনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

দ্রুত ও সমন্বিত আধুনিকায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে যুগোপযোগী সেনাবাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা

তিনি বলেন, ৯৬ সালে সরকারে এসেই সেনাবাহিনীকে একটি জ্ঞানভিত্তিক পেশাদার বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আমরা সেনাবাহিনীর অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিটি সদস্যের নৈতিক ও মানসিক শক্তি এবং পেশাগত জ্ঞান বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিয়েছি।

ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আওতায় তিন বাহিনীর পুনর্গঠন ও আধুনিকায়নের কার্যক্রমগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণ এবং সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের অংশ হিসাবে নতুন পদাতিক ডিভিশন ও বেশ কিছু ব্রিগেড প্রতিষ্ঠা করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, সরঞ্জামাদি ও জনবলের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ফোর্সেস গোলের আওতায় ইতোমধ্যেই সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া কোরের অত্যাধুনিক ট্যাংক, গোলন্দাজ বাহিনীর কামান, আকাশ প্রতিরক্ষার অংশ হিসাবে মিসাইল সিস্টেম, পদাতিক বাহিনীর ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইল এবং আর্মি এভিয়েশনের যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার সেনাবাহিনীতে যোগ করেছে নতুনমাত্রা।

মিঠামইনে একটি রিভারাইন ব্রিগেড প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার মধ্যবর্তী পায়রা নদী সংলগ্ন এলাকায় লেবুখালী সেনানিবাসে একটি পদাতিক ডিভিশন গঠনের নীতিগত অনুমোদন প্রদানের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্রিগেড পর্যায়ে স্পেশাল ফোর্স গঠনের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে- যোগ করেন তিনি।

জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিপাগল আপামর জনসাধারণের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অকুতোভয়, তেজদ্বীপ্ত ও দেশপ্রেমী সেনাবাহিনী চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল।’

সেনাবাহিনীর কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সম্পদ সীমিত। তা সত্ত্বেও বর্তমান সরকার সেনাবাহিনীর জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে যাচ্ছে। এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লে. জেনারেল আনোয়ার হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন