নাটোরের নলডাঙ্গার সমসখলসী হিন্দুপাড়া গ্রামে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার এবং নীলফামারী সদর লক্ষীচাপ ইউনিয়নের ককই বড়গাছা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য-নলডাঙ্গা (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার সমসখলসী হিন্দুপাড়া গ্রামে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে প্রদীপ ওরফে কমল নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সমসখলসী হিন্দুপাড়া গ্রামের একটি চায়ের দোকানে বসে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটূক্তি করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে গ্রামবাসী। এই ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল প্রদীপ। গতকাল শনিবার দুপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। আটক প্রদীপ ওই গ্রামের কালাচাঁনের ছেলে।
নলডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সমসখলসী গ্রামের হিন্দুপাড়ায় চঞ্চলে চায়ের দোকানে বসে প্রদীপসহ কয়েকজন আড্ডা দিচ্ছিলেন।
এসময় তাদের মধ্যে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)কে নিয়ে ভারতের বিজিপি নেত্রীর কটূক্তি করা নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে প্রদীপ ভারতের বিজিপি নেত্রী নিপুন র্শমা যা বলেছেন তা সঠিক বলেছেন বলে মন্তব্য করেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে পুরো গ্রামজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। ঘটনার পরপরই প্রদীপ গা ঢাকা দেয়। গতকাল শনিবার প্রদীপকে আটক করার পর এলাকার পরিবেশ শান্ত হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশক্রমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা জানান, নীলফামারী সদর লক্ষীচাপ ইউনিয়নের গত ১৫ই জুন বিকেলে ককই বড়গাছা বিদ্যালয় হল রুমে ১০ম শ্রেণীর শেষ দিনের কৃষিশিক্ষা পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষার্থীরা জোরে কথা বললে, ওই বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান শিক্ষক ঈশ্বর চন্দ্র রায় শিক্ষার্থীদের শাসন করার সময় হযরত মোহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে খারাব মন্তব্য করলে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের শিক্ষকের রুমে নিয়ে ভয়ভীতি দেখান। ঘটনাটি এলাকার মানুষের মাঝে জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল শনিবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। মানববন্ধনে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, ঘটনাটি মেনে নেওয়ার মতো নয়। তাই আমরা শিক্ষকের উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে। বক্তারা বলেন, তাকে গ্রেফতার করা না হলে আরো কঠিন আন্দোলনে যাবো। আমাদের মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গণপতি রায়ের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনা শোনার পর শিক্ষক ইশ্বর চন্দ্র রায়কে আমার অফিসে ডেকে নিয়ে আসি। তখন তিনি ভুল স্বীকার করেন। গতকাল শনিবার মানববন্ধন হওয়ার পর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
লক্ষীচাপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। মানববন্ধনে আমিও ছিলাম, তবে ওই শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তির প্রয়োজন রয়েছে। শিক্ষকের সঠিক বিচারের আশ্বাস দিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষ করতে বলা হয় মানববন্ধনের নেতৃবৃন্দকে।
সদর থানার ওসি আব্দুর রউপ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সকলকে শান্ত থাকতে বলছি। লিখিত অভিযোগ পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন