শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী বিশ্ব

ইরাক যুদ্ধ ভুল ছিল : ট্রাম্প

প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : একদা ইরাক নীতির জেরে জনপ্রিয়তা খুইয়ে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল জর্জ বুশকে। গত রোববার সেই নীতি নিয়ে ভুল স্বীকার করতে শোনা গেল বুশেরই দল অর্থাৎ রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মুখে। যুক্তরাষ্ট্র অনেক ভুল করেছে, ইরাক যুদ্ধ তারই একটা- রিপাবলিকানদের বিতর্কে এমনটাই দাবি করলেন রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সমালোচনা করলেন বর্তমান প্রেসিডেন্টেরও। বললেন, যুদ্ধ হলো। পুরো দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়াকে আমরা পঙ্গু করে দিলাম। যুদ্ধের প্রভাব থেকে বেরিয়ে পথটা ঠিক ছিল না, এই অভিযোগে ট্রাম্প দুষলেন বারাক ওবামাকেও। সাউথ ক্যারোলাইনার গ্রিনভিলে রিপাবলিকানদের বিতর্কে দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জেব বুশের কথার লড়াইয়ে উঠে এলো ইরাকে আগ্রাসন এবং ৯/১১-র প্রসঙ্গ। জেব বুশ আক্রমণাত্মক ট্রাম্পকে বুঝতে সরব হলেন ভাই জর্জ বুশের সমর্থনে।
জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের পর্যবেক্ষণের তুলাধুনা করেন বুশ। সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে রাশিয়ার ভূমিকা ইতিবাচক বলে মত ট্রাম্পের। বুশ বলেন, এটা হাস্যকর। ট্রাম্প বলেন, জেব ভুল বলছেন। আগে আইএস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ইরাক যুদ্ধ নিয়ে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বুশের ইমপিচমেন্ট হলে তাতে আমার সায় থাকত- নিজের অতীত এই মন্তব্যের সমর্থনে ট্রাম্প বিতর্কে বলেন, সে সময় মার্কিন প্রশাসন দেশকে ভুল পথে চালিত করেছিল। ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে দাবি করে অভিযানের পরে দেখা গেল কিছুই নেই। সেই ভুল মানতে বুশ নেন পাঁচ দিন। ফের ট্রাম্প বলেন, জর্জ বুশের আমলেই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভেঙে পড়েছিল।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনার বিতর্কে বৈদেশিক নীতি ও সুপ্রিম কোর্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তুমুল বাকযুদ্ধ হয়েছে। আইওয়া ও নিউ হ্যাম্পশায়ারে পর এবার ২০ ফেব্রুয়ারি সাউথ ক্যারোলিনায় প্রাইমারির ভোট অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। সে উপলক্ষে সিবিএস টেলিভিশনের আয়োজনে বিতর্ক অনুষ্ঠানে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকা ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ এবং ফ্লোরিডার সাবেক গভর্নর জেব বুশের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। বিবিসি জানায়, অনুষ্ঠানে বার বার একজনের বক্তৃতার সময় অন্যদের চিৎকার করতে বা হস্তক্ষেপ করতে দেখা গেছে। এক পর্যায়ে সিবিএস মডারেটর জন ডিকেরমন তাদের সতর্ক করে বলেন, আমরা কাদার মধ্যে বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালাচ্ছি। ইরাক যুদ্ধ এবং নাইন-ইলেভেন হামলার সময় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের ভূমিকা নিয়ে বিবাদে জড়ান ট্রাম্প ও জেব বুশ। ট্রাম্প বলেন, ইরাকের বিষয়ে আমাদের হস্তক্ষেপ করা একদম উচিত হয়নি। তারা মিথ্যা বলেছে। তারা বলেছে সেখানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর মত অস্ত্র রয়েছে। সেখানে কিছু ছিল না এবং তারা জানত সেখানে কিছু নেই।
ট্রাম্পের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান জেব বুশ। নিজের ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে বলেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যেসব সমস্যায় পড়েছেন সেগুলোর জন্য সবসময় আমার ভাইকে দায়ী করেছেন। ওবামার অভিযোগ শুনতে শুনতে আমি অসুস্থ ও ক্লান্ত বোধ করছি। এখন সত্যি বলতে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমার বিরুদ্ধে যেসব অপমানজনক তথ্য দিয়েছেন সেগুলো আমি একদমই পাত্তা দেই না। সুপ্রিম কোর্টের শূন্য হওয়া বিচারকের পদ পূরণ নিয়েও এদিন জমজমাট বিতর্ক হয়েছে। গত শনিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অ্যান্টোনিন স্কালিয়া মারা যান। বিচারপতির শূন্য পদে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার একজনকে মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সিনেটের রিপাবলিকোনদের তা ঠেকানো উচিত বলে মত দেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান দলের ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশীরও বেশিরভাগই চান পরবর্তী প্রেসিডেন্টই নতুন বিচারপতি নিয়োগ দিক। এ দুটো বিষয় ছাড়াও বিতর্কে অভিবাসন এমনকি গর্ভপাত নীতি নিয়েও তীব্র বিতর্কে একে অপরকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলেছেন প্রার্থীরা।
বিতর্কের গোড়া একে অপরের বিরুদ্ধে মুখিয়ে থাকা প্রার্থীরা ভদ্রতার সীমারেখাও ছাড়িয়ে গেছেন। দুর্বল ও মিথ্যাবাদী বলে জেব বুশকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুশও পাল্টা ট্রাম্পকে আখ্যা দেন দুর্বল ও প্রতারক বলে। অভিবাসন নিয়ে তর্কে মার্কো রুবিও ও টেড ক্রুজ একে অপরকে ডাহা মিথ্যুক আখ্যা দেন। ক্রুজকে জেব বুশের চেয়েও বড় মিথ্যাবাদী বলে আক্রমণ করেন ট্রাম্প। বিবিসি, রয়টার্স, ওয়েবসাইট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Akter Hossian ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১০:৩৬ এএম says : 1
এখন আর ভুল শিকার করে লাভ কি?
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন