শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ক্যানসারের চিকিৎসায় বিপুল দেনা, আত্মহত্যা করলেন দম্পতি

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২২, ১১:২২ এএম

‘আমাদের সময় শেষ। আমরা চাই না, আমাদের মৃত্যু নিয়ে কোনো আলোচনা হোক।’ মঙ্গলবার সকালে কলকাতার বাঁশদ্রোণী থানায় এমন একটি ইমেল আসার পরে আত্মহত্যা রুখতে ছুটে যায় পুলিশ। ঠিকানা খুঁজে পেতেও সমস্যা হয়নি। কিন্তু দেখা যায়, ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ। সেটি ভেঙে ভেতরে ঢুকে পুলিশ দেখে, শোয়ার ঘর প্রবল ঠান্ডা। এসি চলছে, আর বিছানায় কম্বলের নিচে পাশাপাশি দুটি মৃতদেহ! ঘটনাটি ঘটেছে গড়িয়ার ব্রহ্মপুরে। খবর আনন্দবাজারের।
লালবাজারের কর্মকর্তারা জানান, ওই যুগল ইমেলে লিখেছিলেন, তাদের মৃত্যু নিয়ে আলোচনা তারা চান না। তাই পুলিশ খুব বেশি কিছু বলতে চায়নি। এমনকি, কীভাবে তাদের মৃত্যু হলো, তা-ও বলেনি পুলিশ।
ওই দম্পতির নাম হৃষীকেশ পাল ও রিয়া সরকার। দুজনেরই বয়স তিরিশের কোঠায়। পুলিশের ধারণা, তারা আত্মহত্যা করেছেন।
২০১৯ সালে রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় হৃষীকেশের। হৃষীকেশ আগে একটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু চাকরি পাকা হওয়ার আগেই হাইওয়েতে গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। হাতে ও চোখে গুরুতর চোট লাগে। ফলে চাকরি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। চিকিৎসায় খরচ হয় মোটা টাকা। এর পরে রক্তের ক্যানসার ধরা পড়ে হৃষীকেশের। রিয়া একটি পার্লারে কাজ করতেন। বিয়ের পর ব্রহ্মপুরে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা জানতে পেরেছে ক্যানসারের চিকিৎসা চালাতে নানা জায়গা থেকে হৃষীকেশ ও রিয়া টাকা ধার করেন। সব মিলিয়ে তাদের প্রায় ২৫ লাখ টাকার দেনা রয়েছে।
পুলিশকে পাঠানো ইমেলে একটি উইল করে রেখে যাওয়ার কথাও লেখা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, তাপস দাস নামে এক ব্যক্তি এলে তার হাতেই যেন দেহ দুটি দেওয়া হয়। রিয়ার পরিবার যাতে দেহ না পায়, উইলে সে কথাও রয়েছে।
তাপস নামের সেই ব্যক্তি থানায় জানিয়েছেন, তিনি গাড়ি সার্ভিসিং সংস্থায় কাজ করতেন। সেখানেই গাড়ির কাজ করাতে যাওয়া হৃষীকেশের সঙ্গে পরিচয়। ক্যানসারের কথা তখনই জানেন। হৃষীকেশ বলেছিল, তাদের মৃত্যুর পরে সৎকারের দায়িত্ব নিতে। রিয়ার পরিবার যেভাবে অপমান করেছে, তার পরে ওদের যেন দেহ না দেওয়া হয়।
পুলিশের দাবি, ক্যানসারে আক্রান্ত হৃষীকেশের সঙ্গে বিয়ে মানতে পারেনি রিয়ার পরিবার। তাই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন রিয়া। গত দুবছরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। কিন্তু মৃত্যুর আগে সবাইকে একটি ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে তাকে এবং হৃষীকেশকে কীভাবে অপদস্থ করা হয়েছে, তা বলে গিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন