ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সরকার কৌশলে দেশে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করছে। শিক্ষা সিলেবাস থেকে ক্রমেই ইসলামী ও নৈতিকতা শিক্ষা তুলে দিয়ে হিন্দুত্ববাদের দিকে ধাবিত করতে বিভিন্নভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্য বইয়ে একটি ধর্মগ্রন্থকে বাদ দিয়ে অন্য একটি ধর্মগ্রন্থকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ‘সবাই মিলে কাজ করি’ শিরোনামে মহানবীর সংক্ষিপ্ত জীবনী ছিল, ক্লাস থ্রিতে ‘খলিফা আবু বকর’ শিরোনামে সংক্ষিপ্ত জীবনী, ক্লাস ফোরে খলিফা হযরত ওমরের সংক্ষিপ্ত জীবনী, ‘বিদায় হজ্ব’ শেষ নবীর জীবনী একটা ছিল, সেগুলো বাদ দেয়া হয়েছে। ‘পঞ্চম শ্রেণিতে ‘বই’ নামে একটা কবিতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেটা ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন বিরোধী কবিতা। আর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ‘লাল গরু’ নামক একটি ছোট গল্প আনা হয়েছে। যা মুসলিম শিক্ষার্থীদের শেখানো হচ্ছে গরু হচ্ছে মায়ের মতো। তাই গরু জবাই করা ঠিক নয়। সপ্তম শ্রেণির বইতে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যয়ের ‘লালু’ নামক একটা গল্প ঢুকানো হয়েছে, যাতে শেখানো হচ্ছে হিন্দুদের কালিপূজা ও পাঠাবলির কাহিনী। অষ্টম শ্রেণির বইতে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ, অর্থাৎ রামায়ণের সংক্ষিপ্ত রূপ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এভাবে সিলেবাসে হিন্দুত্ববাদ শিক্ষা শুরু হয়েছে। এইগুলো কীসের আলামত?’
মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই শনিবার রাতে কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন চাপিতলা হাইস্কুল মাঠে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি আয়োজিত বিশাল ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, সমাজ সেবক আলহাজ্ব আব্দুল মুঈন শামীম, চাপিতলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুছা আল কবির, সাবেক চেয়ারম্যান কাইয়ূম ভূঁইয়া।
সমাজ সেবক আলহাজ্ব সাদেকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মুজাহিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুফতি মানসুরুল হকের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে বয়ান করেন, টঙ্গি জামিয়া নূরিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা নজীর আহমদ, জামিয়া দারুল উলুম মুহিউস সুন্নাহ করিমপুরের প্রিন্সিপাল মুফতী দ্বীন মোহাম্মদ আশরাফ, মাওলানা রাশেদুল ইসলাম রহমতপুরী, অন্ধ হাফেজ আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন, বাঙ্গরা বাজার থানা মুজাহিদ কমিটির সদর হাফেজ সাব্বির আহম শাহীন মোল্লা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা না থাকায় ছাত্রের ব্যাটের আঘাতে শিক্ষকের করুণ মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। কুষ্টিয়ায় শিক্ষককে জুতারমালা পরিয়ে ঘুরানো হয়েছে। আজকে আমাদের সাথে আলোচনার সময় অনেক ইউনিভার্সিটির শিক্ষকগণও বলেন, কখন ছাত্রের হাতে নাজেহাল হতে হয়, এমন আতঙ্কে থাকেন। এটার মূল কারণ হচ্ছে নৈতিকতা ও ধর্মীয় শিক্ষা না থাকা। এ জন্য শিক্ষার সকলস্তরে যদি ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়, তাহলে এমন ঘটনার অবতারণা আর হবে বলে মনে হয় না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন