কুমিল্লায় কোরবানির হাটবাজারে মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে গৃহপালিত গয়াল। বিলুপ্তপ্রায় বন-গরু প্রজাতির এ পশুটি কুমিল্লায় বাইসন নামেও পরিচিত। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার মাঝিগাছা এলাকার ফাতেমা এগ্রোর পরিচালক সাকিউল হল আলভী বলেন, গত কোরবানিতে তিনি দুটি গয়াল পালন করেছিলেন। সেগুলো খুব ভালো দামে বিক্রি করেছেন। এবারও কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে গয়াল পালন করেছেন।
ফাতেমা এগ্রোর কর্মচারী মো. মোতালেব জানান, প্রথম দিকে গয়াল লতাপাতা ছাড়া অন্য কিছু খেতে চাইত না। কারণ পাহাড়ী অঞ্চলের গহিন বনে এরা বিভিন্ন লতাপাতা খেয়েই বেড়ে ওঠে। লোকালয়ে আনার পর আস্তে আস্তে দেশীয় খাবারে অভ্যস্ত হয়। মোতালেব বলেন, আমরা খামারের গরুকে যে খাবার দেই, গয়ালকেও একই খাবার দেয়া শুরু করি। দিনে একটি গয়াল ৪ কেজি ভুষি, ৪ কেজি ধানের কুঁড়া, এক কেজি ভুট্টা, খইল ১ কেজি, গমের ছোলা ২ কেজি ও ১০ কেজি সবুজ ঘাস খায়। এখন একেকটি গয়ালের ওজন প্রায় ১১ মণ। হাটে নেয়ার পর দাম তোলা হবে ৫ লাখ টাকা করে। কুমিল্লা নগরীর ল²ীনগর এলাকার রাফি এগ্রোর স্বত্বাধিকারী জুয়েল আহমেদ জানান, বছর খানেক আগে তিনি বান্দরবন থেকে কয়েকটি গয়াল সংগ্রহ করেন। বর্তমানে একেকটি গয়ালের ওজন হবে অন্তত ১২শ’ কেজি। ৮ লাখ টাকা হলে তিনি গয়ালটি বিক্রি করবেন। জুয়েল বলেন, খাদ্য হিসেবে ভুষি, লবণ, কুঁড়া, কাঁচা ঘাস ও শুকনো খড় দেওয়া হয়। এদের দেহে কৃত্রিম ওষুধ প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে না। গয়াল ১৫ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত বাঁচে। ১০ থেকে ১১ মাস গর্ভধারণের পর মাদি গয়াল একটি বাচ্চা জন্ম দেয়। গাভীর মতো গয়ালের ওলান নেই, তাই দুধ দোহানো যায় না। গয়াল মূলত গোশতের চাহিদা পূরণ করে। এর গোশত খুবই সুস্বাদু।
কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে গয়াল পালন করছেন খামারিরা। মূলত গোশতের জন্যই গয়াল পালন করা হয়। গহীন বনের ছোট ছোট ঝোপে এরা দলবেঁধে থাকে। তবে এটি এখন গৃহপালিত পশু হিসেবে স্বীকৃত। গয়ালের গোশতে কোলেস্টেরল কম হওয়ায় মানবদেহের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন