বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান বন্ধের জন্য গুটিকয়েক নির্মাতার দাবিকে চলচ্চিত্র শিল্প ধ্বংসের ষড়যন্ত্র ও হীন স্বার্থপর অপতৎপরতা বলে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের চলচ্চিত্র শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজক, প্রদর্শক ও চলচ্চিত্রগ্রাহক সমিতি এবং ফিল্ম এডিটরস গিল্ডসহ সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ।
গতকাল বুধবার পৃথক পৃথক স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তারা এ দাবি করেন। বলেন গত ৪ জুলাই সোমবার রাজধানীর শাহবাগে কয়েকজন চলচ্চিত্র নির্মাতা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান বন্ধের দাবি জানান। চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য, দেশের জন্য এবং সর্বোপরি মানুষের সুস্থ বিনোদনের জন্য ক্ষতিকর এই দাবি আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না এবং এটিকে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চলচ্চিত্র শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। আমরা সিনেমা অঙ্গনের মতলববাজ-ধান্দাবাজদের বিচার প্রার্থনা করি। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, দেশের মানুষ যে চলচ্চিত্র দেখতে চায়, হলে যায়, সেই চলচ্চিত্রকে সহায়তা দেওয়া যারা বন্ধ করতে বলে, তাদের সাথে আমরা শিল্পীরা নেই। আমরা তাদের এ ধরনের স্বার্থপর দাবির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের নেতা সোহানুর রহমান সোহান বলেন, সরকারি নীতিমালা পুরোপুরি অনুসরণ করে দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা-বোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত কমিটিই অনুদান প্রদান করে। ‹সরকার যে চলচ্চিত্র শিল্পকে রক্ষার চেষ্টা করছে, একে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ বুকের রক্ত দিতেও দ্বিধা করবে না› বলেন তিনি।
চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির পক্ষে সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, স্বার্থপর আন্দোলনকারীদের বক্তব্য ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং স্বার্থসিদ্ধিমূলক। আমরা এ ধরণের অপতৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
বাণিজ্যিক সিনেমায় না দিয়ে আর্ট ফিল্মে অনুদান দেয়াকে জনগণের অর্থে জনগণের সাথে প্রতারণা উল্লেখ করে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস বলেন, সরকার যখন আর্ট ফিল্মের জন্য লাখ লাখ টাকা দিচ্ছে, তখন থেকেই আমরা বলে আসছি, সাধারণ দর্শক যে সিনেমা দেখার জন্য হলে আসে না, সেসব সিনেমাকে সরকারি অর্থ দেয়া প্রকৃত সিনেমাপ্রেমীদের সাথে প্রতারণা।
চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির পক্ষে সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, চলচ্চিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি আবদুল লতিফ বাচ্চু এবং ফিল্ম এডিটরস গিল্ড সভাপতি আবু মুসা দেবুও পরিচালক সমিতির সঙ্গে একমত হয়ে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় গত তিন বছরে (২০২০-২১-২২) ৫৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পাশাপাশি আর্টফিল্ম, ডকুড্রামা ও প্রামাণ্যচিত্রসহ ২৫টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রকে অনুদান দিয়েছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় সংখ্যা ও অনুদানের অর্থ দুই মাপকাঠিতেই বেশি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন