সামাজিক বিজ্ঞানের গবেষণায় আন্তর্জাতিকভাবে অনুসৃত নীতি, পদ্ধতি ও মানদণ্ড কঠোরভাবে মেনে উপাত্ত সংগ্রহ ও তার শুদ্ধতা পরীক্ষাসহ গবেষণা পরিচালনা ও প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয় উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পচিালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, এই গবেষণাকে কোনো দিক থেকেই ভিত্তিহীন বলার কোনো অবকাশ নেই।
সংস্থাটির একটি গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির একটি বক্তব্যের প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।
গত ৩ জুলাই ইনটিগ্রেটেড এনার্জি এন্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যান (আইইপিএমপি) প্রণয়ন বিষয়ক দ্বিতীয় স্টেকহোল্ডার মিটিংয়ে টিআইবি প্রণীত ‘বাংলাদেশে কয়লা ও এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্প: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের বিষয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি টিআইবিকে ‘তথ্য-প্রমাণ ভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের’ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই বছরের মে মাসে প্রকাশিত টিআইবির সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয় জাপান অচল প্রযুক্তি (ব্যবহার করতে) বাংলাদেশকে প্রভাবিত করছে, তখন আমি দেখতে পেলাম যে এটি ভিত্তিহীন”।
রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যেও জবাবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “জাপানের রাষ্ট্রদূতকে আশ^স্ত করতে চাই, উল্লিখিত গবেষণার পূর্ণ প্রতিবেদন এবং এক্সিকিউটিভ সামারি আগেই জাপানের রাষ্ট্রদূতকে পাঠানো হয়েছে। ‘জাপান তার অচল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে বাংলাদেশকে প্রভাবিত করছে’ এমন কোনো মন্তব্য টিআইবি’র আলোচ্য গবেষণায় করা হয়নি। বরং এ খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ কর্তৃক চীন ও জাপানের পুরাতন এবং ব্রাউন ফিল্ড বয়লারগুলোকে গ্রীন নামে চালিয়ে দেওয়া এবং উন্নত দেশের উদ্বৃত্ত ও অব্যবহৃত কয়লা প্রযুক্তির ‘ডাম্পিং ক্ষেত্র’ হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করার অভিযোগের বিষয়টি টিআইবি প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞ মতামত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, টিআইবির গবেষণায় জ¦ালানি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে জাপানি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের দ্বন্দ্ব বিষয়ে বিশদ আলোচনা হলেও জাপানের রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে কোনো আলোকপাত করেননি। যদিও জাপানের রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেছেন, এটি নিয়ে তৃতীয়বারের মতো জাপান বাংলাদেশের পাওয়ার ও এনার্জি খাতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজে যুক্ত ছিল।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “দাতাদের প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং পরামর্শ প্রদান অনিবার্য এবং দাতা-গ্রহীতা সম্পর্কেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা প্রয়োজনীয়ও। এজন্য আইইপিএমপি প্রণয়নে জাপানিদের সহায়তাকে স্বাগত জানাই, তবে তারা একটি বিশ্বাসযোগ্য ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করার মাধ্যমে এর সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নকালীন ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত পরিবেশ তৈরির একটি উত্তম উদহারণ তৈরি করতে পারত। যা স্বচ্ছতার জন্য অধিকতর ফলদায়ক হতো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন