শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ছোট গরুতেই তুষ্টি ক্রেতাদের

শেষ মুহুর্তে খুলনায় জমে উঠেছে কোরবানির হাট

ডি এম রেজা সোহাগ, খুলনা থেকে | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২২, ১২:০০ এএম

শেষ মুহুর্তে খুলনায় কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। বেড়েছে পশু আমদানি সংখ্যা ও হাসিল আদায়ের পরিমাণ। তবে দাম বেশি থাকায় অনেক ক্রেতাকেই খালি হাতে ফিরতে দেখা যাচ্ছে। বড় আকারে গরু ক্রেতারা দরদাম করছেন ঠিকই কিন্তু সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না। চাহিদা রয়েছে মাঝারি ও ছোট আকারের গরুর। নগরীর জোড়াগেটে সিটি করপোরেশনের হাট, ফুলবাড়িগেট যোগিপোল এলাকার হাট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

খুলনা মহানগরীর জোড়াগেটে গত ৩ জুলাই সিটি করপোরেশনের পশুর হাট উদ্বোধন করা হয়। প্রথম তিনদিন বিক্রি তেমন না হলেও গতকাল শুক্রবার বেড়েছে বিক্রির পরিমাণ। গত বুধবার রাত ১২টার পর থেকে গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত ৩৩৩টি পশু বিক্রি হয়। এরমধ্যে ২১৮টি গরু ও ১১৫টি ছাগল বিক্রি হয়েছে। হাসিল আদায় হয়েছে ৯ লাখ ৭২ হাজার ৮৪৫ টাকা। হাটে খুলনা মহানগরী ও জেলার বিভিন্নস্থান থেকে গরু এসেছে। পাশাপাশি বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ ও সাতক্ষীরা থেকেও গরু এসেছে। ক্রেতা সমাগমও প্রচুর। ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের আগ্রহ ৮০ হাজার থেকে সোয়া লাখ টাকা দামের গরুতে। হাটে যে ২৫/৩০ মনের বিশালাকার ১৪ থেকে ১৫টি গরু উঠেছে, ক্রেতারা সেগুলোর দাম করলেও বিক্রি হচ্ছে না। মহানগরীর নিরালা এলাকার সাব্বির হোসেনের আনা ২৫ মন ওজনের গরু ক্রেতারা ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত বলেছেন। বিক্রেতা ১১ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন। একইভাবে আরেকটি ২৮ মন ওজনের গরু ৭ লাখ টাকা দাম উঠেছে। বিক্রেতা আমিরুল খন্দকার আশা করছেন ঈদের আগের দিন এটি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি হবে।
নগরীর চানমারী বাজার আহমদীয়া মাদরাসার শিক্ষক ফারুখ আহমদ বলেন, আছরের নামাজ পড়ে গরু কিনতে হাটে এসেছি। দরদাম না হওয়ায় অনেকক্ষণ ঘুরেছি। অবশেষে একটি গরুর দেখা মিললেও মালিক ৬৫ হাজার টাকা চেয়েছেন। কিন্তু অনেক কষাকষির পর ৫২ হাজার টাকায় গরুটি আমাকে দিয়েছেন। সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার দু’বন্ধু মো. হাফিজুর রহমান ও মো. জাহাঙ্গীর গরু কিনতে হাটে এসেছেন । তিন ঘণ্টা ঘুরেও নিজের বাজেটের মধ্যে গরু কিনতে পারেননি। দাম বেশি চাচ্ছেন খামারিরা।
কথা হয় গরুর ব্যবসায়ী রাজা মিয়ার সাথে। তিনি গতকাল শুক্রবার সকালে ট্রলারে ২৪টি গরু খুলনার জোড়াগেট পশু হাটে এনেছেন। দুপুর পর্যন্ত তার ৫টি গরু বিক্রি হয়েছে। পশুর দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম বেড়েছে। বেড়েছে গো-খাদ্যের দাম। পরিবহন খরচও তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। তাই বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে।
জোড়াগেট পশু হাটের আহ্বায়ক ও ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শামসুজ্জামান মিয়া স্বপন বলেন, গত দু’দিনের তুলনায় এখানে পশুর আমদানি বেশি হয়েছে। হাট আরো জমে উঠবে। দাম গেল বারের তুলনায় বেশি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, সবকিছুর দাম বেড়েছে। তারপরও পশু বিক্রির সংখ্যা কম নয়। গত দু’দিনের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে। বেড়েছে হাসিল আদায়ের পরিমাণও। হাট ঈদের দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে।
এদিকে, নগরীর ফুলবাড়িগেট যোগিপোল এলাকায় গরুর হাটে প্রচুর ক্রেতা সমাগম দেখা গেছে। এ হাটে মাঝারি আকারে গরুর সংখ্যা বেশি তাই বিক্রিও বেশি। হাটের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বাবু জানান, ৮০ হাজার থেকে সোয়া লাখ টাকার গরুর চাহিদা এবার খুব বেশি। দু লাখ, তিন লাখ টাকা দামের গরুও বিক্রি হচ্ছে। এককভাবে যারা কোরবানি করছেন, তারা ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে এই হাটে গরু কিনছেন। হাটের পরিবেশ খুব ভাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার দূর দূরান্ত থেকে নির্বিঘ্নে হাটে গরু আসছে। কোথাও চাঁদাবাজি বা এ ধরণের ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন