মানুষকে তার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা ও ১৫ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বয়সের স্মৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন।
সেগুলো সমকালীন বিষয়, খেলাধুলা বা অন্য কোনো ঘটনা যাই হোক না কেন, কোনো ব্যাপার নয়। এটা হতে পারে অস্কার পুরস্কার, হিট রেকর্ড, বই বা ব্যক্তিগত স্মৃতি। আমরা যখন কোনো ব্যক্তির জীবন পরিসর বিষয়ে স্মৃতির বক্ররেখার পরিকল্পনা করি তখন আমরা স্মৃতি বিজ্ঞানের গবেষকরা একে বলি সহসা স্মৃতিচারণ।
এটা হচ্ছে জ্ঞানীয় মনস্তত্ত্বের উপর বিরল প্রভাব যা নিয়ে বিতর্ক হয়নি। এটা আছে কিনা তা নিয়ে আমরা গবেষণা বাদ দিয়েছি এবং প্রশ্ন শুরু করেছি কেন। নিউরো বায়োলজিক্যাল বিবরণ বলে যে মস্তিষ্কের পরিপক্বতার ক্ষেত্রে এমন কিছু আছে যা ঐ সময়কালে সম্মুখীন হওয়া তথ্যের দিকে আমাদের চালিত করে যা বিশেষ করে চমৎকারভাবে সংকেতায়িত থাকে।
কিছু গবেষক বলেন যে আমরা প্রথম চুম্বন, প্রথম গাড়ি চালানো শিক্ষা ও এরকম বিষয়গুলোর অভিজ্ঞতা ভালো স্মরণ করতে পারি যেগুলো এ বয়সে ঘটে থাকে। অন্যরা বলেন, সহসা স্মৃতিচারণ হচ্ছে আমাদের জীবনে সাংস্কৃতিকভাবে সংজ্ঞায়িত অধ্যায়ের অংশ যাতে প্রধান অভিজ্ঞতাগুলো ঘটে এবং তারপর তা শেয়ার করা হয় ও আলোচিত হয়।
আমাদের নিজস্ব গবেষণা আলাদা কিছু বলে যে এটা আসে কারণ এ সময় আমরা স্মৃতিগুলোকে শুইয়ে রাখি এবং তথ্যগুলো জমা করি যা বাকি জীবনের জন্য সংজ্ঞায়িত করবে যে আমরা কে, যা হচ্ছে স্মৃতিতে নিজেকে স্ফটিক স্বচ্ছ করা। এটা সঠিক কিনা তা জানতে আমরা পরীক্ষার ব্যবস্থা করি।
আগের অধিকাংশ গবেষণায় যা হয়নি, আমরা স্মৃতি পরীক্ষার উপর নির্ভর করতে চাইনি। আমাদের থিয়োরির জন্য স্মৃতি পরীক্ষার সমস্যা হল সংজ্ঞা যা লোকে ব্যক্তিগতভাবে তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। আপনি অন্য কিছু আশা করতে পারেন না, লোকে এলোমেলোভাবে সংঘটিত ঘটনা স্মরণ করতে পারে না, অন্যদিকে গুরুত্বহীন তথ্য স্মরণ বা তাতে মনোযোগ দেয়ার জন্য তাকে লড়াই করতে হয়। যে সব বিষয় আমাদের জীবনে ভূমিকা রাখে সেগুলোর প্রতি গুরুত্ব দিতে আমরা বাধ্য, অবশ্যই আমরা সেগুলো স্মরণ করি।
অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন ঘটনা বা গান স্মরণ করার আহ্বান জানিয়ে আপনি এর চারপাশে থাকার চেষ্টা করতে পারেন যা তাদের কাছে কোনো অর্থ বহন করে না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে তারা যা স্মরণ করতে পারে তা সম্পূর্ণরূপে তাদের সংশ্লিষ্ট নয়। এমনকি এসব বিষয় যদি মনে অবিকল গেঁথেও যায় তা ব্যক্তির কাছে কিছুই নয়, এটি যে কোনো অবস্থায়ই সংজ্ঞায়িত করে যে আপনি কে। আমরা বৃত্ততুল্যতা পরিহার করতে চাই।
আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্মৃতি গবেষকদের নিকট থেকে আরেকটি ক্ল্যাসিক পন্থা ব্যবহার যা একটি নির্দিষ্ট এলাকার ক্ষেত্রে কম ব্যবহৃত হয়। তাহল স্বীকৃতি। অংশগ্রহণকারীদের মুক্তভাবে বিষয় স্মরণ করতে বলার পরিবর্তে আমরা তাদেরকে অস্কার বিজয়ী ছায়াছবি বা বিক্রি শীর্ষের সঙ্গীত একক সংগ্রহের নির্দেশ দিতে পারি যা তারা ১৯৫০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যকার একটি তালিকা থেকে স্মরণ করবে। তারা যখন তাদের প্রথম ছবি দেখা/গান শোনার অভিজ্ঞতা স্মরণ করে অথবা কখন তা মুক্তি পেয়েছে বা প্রকাশ হয়েছে সে তথ্যের উপর ভিত্তি করে আমরা ১৫-২৫ বছরের সময়টির প্রতি পক্ষপাতিত্বের সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছি।
আমরা অংশগ্রহণকারীদের তালিকা থেকে তাদের ৫টি প্রিয় জিনিস পছন্দ করতে বলি যা ছিল আমাদের গবেষণায় প্রকৃত নতুনত্ব। এর অর্থ আমরা অংশগ্রহণকারীদের জীবনকালের ওপর একটি বক্ররেখা আঁকতে পারি এটা দেখতে যে যদি ১৫-২৫ বছর সময়কালের স্মরণ করা গানের অনুপাত তাদের পছন্দ করার বয়সের তালিকার চেয়ে অধিক কি-না। যদি অ-ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ ছায়াছবি/গান স্মৃতিচারণে প্রাধান্য বিস্তার করে, আমরা আমাদের থিয়োরি বাদ দিতে পারি যে ব্যক্তির উন্নয়ন হচ্ছে ব্যাখ্যা এবং স্মৃতি বিষয়ে হলে সেখানে ফিরে যাওয়া।
আমরা দেখি যে এটি যখন ছায়াছবি/গান প্রাসঙ্গিক হয় যা অংশগ্রহণকারীরা পছন্দ করেন না, জীবনের অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে ১৫-২৫ বছর সময়কালীন অধ্যায়ের মধ্যে তারা তা স্বীকার করতে অধিক অনিচ্ছুক। বিষয়টি নিশ্চিত করতে একই বিষয়ে আমরা দু’বিষয়ই তাদের জিজ্ঞাসা করি যে কোন গানগুলো তাদের প্রিয় এবং কোন গানগুলোর কথা তারা স্মরণ করে এবং তখনো আমরা একই জবাব পাই।
আমাদের আবিষ্কার বলে যে লোকে তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যে বেশী বিষয় স্মরণ করে তার যুক্তি যথার্থ, কারণ এটা ঘটে তখন যখন তাদের পরিচিতি গড়ে ওঠে। যে সব বিষয়ের আমরা সম্মুখীন হই সে সবের সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন বিষয় আমরা স্রেফ ভুলে যাই। আমাদের প্রবৃত্তি ও নানা ঘটনায় তার প্রকাশ, তথ্য এবং এ সময়কালের মিডিয়া আমাদের বাকি জীবনের জন্য সংজ্ঞায়িত করে।
এর অর্থ অবশ্য এ নয় যে, স্মৃতি উন্নয়ন অথবা সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতার সাথে সম্পৃক্ত মানুষের স্মৃতিচারণ বিষয়ক থিয়োরিগুলো অপ্রাসঙ্গিক। এখনো যে প্রশ্নটি রয়ে গেছে সেটি হচ্ছে কেন নির্দিষ্ট বিষয়গুলো ব্যক্তিগতভাবে আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এবং এ সব থিয়োরি এখনো এখানে জবাব প্রদানে সক্ষম যে যা পছন্দনীয় বা গুরুত্বপূর্ণ সে সব বিষয় আমরা সাংস্কৃতিকভাবে শেয়ার করতে পারি; অথবা আমাদের কা-জ্ঞান অক্ষুণœ রাখতে আমরা স্মৃতি কল-কবজার উপর নির্ভর করতে পারি।
আবিষ্কারের অন্যান্য ক্ষেত্র হচ্ছে চলচ্চিত্র অথবা গান বা অন্য কোনো স্মৃতি যা আমরা প্রবলভাবে অনুভব করি কিন্তু পছন্দ করি না। আমাদের এখনো গবেষণা করা প্রয়োজন যে এ সব বিষয় একই ১৫-২৫ বিধি অনুসরণ করে কি না যদিও সেগুলো আমাদের সংজ্ঞায়িত করে না। যাহোক, এখনকার মত আমরা এই গোটা প্রক্রিয়া কীভাবে কাজ করে তা বোঝার কমপক্ষে এক ধাপ নিকটবর্তী হয়েছি। আমাদের কম বয়সের গুরুত্বপূর্ণ গান অথবা চলচ্চিত্র অথবা বই অথবা ঘটনাবলী আমাদের জীবনের সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে এবং আমরা যা, তার আবরণের অংশ হতে পারি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন