স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিমকোর্টসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে প্রেষণে বা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ আবশ্যিকভাবে গ্রহণ করে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত ‘বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের
বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে পরামর্শ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা প্রসঙ্গে’ শীর্ষক স্মারকে নির্দেশক্রম এ অনুরোধ জানানো হয়। গতকাল (সোমবার) বিকালে এ স্মারকের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ।
স্মারকে বলা হয়, ‘সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার কর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনে রত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি দান ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলা বিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত এবং সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা প্রযুক্ত হয়ে আসছে। বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বিষয় যেমন কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরি, নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা বিধান, বিদেশ গমন ও চাকরির অন্যান্য শর্তাবলী ইত্যাদি বিষয়ে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
‘সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী অধ:স্তন আদালতগুলোকে একটি পৃথক, স্বতন্ত্র ও স্বাধীন সার্ভিস হিসেবে ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস’ নামে নামকরণ করা হয়েছে এবং জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের কর্মস্থল নির্ধারণ, চাকরির শর্তাবলী ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরি, নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা বিধান ও চাকরির অন্যান্য শর্তাবলী) বিধিমালা, ২০০৭ প্রণয়ন ও বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে। ওই বিধিমালার বিধি ৩ এ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের কর্মস্থল নির্ধারণের বিধান, বিধি ৭ এ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শক্রমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রেষণ বা অন্যভাবে নিয়োগের বিধান বিবৃত হয়েছে।’
স্মারকে আরো বলা হয়, ‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সুপ্রিমকোর্ট, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অফিসে প্রেষণ বা অন্যভাবে নিয়োগ করা হলেও তারা বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাই থাকেন। এবং কেবলমাত্র নিয়োগকালীন সাময়িকভাবে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকেন বিধায় সংবিধানের ১০৯, ১১৬ ও ১১৬(ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিধান সাপেক্ষ তাদের ওপর সুপ্রিমকোর্টের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অব্যাহত থাকে। এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের চাকরির শর্তাবলী, বিদেশ গমন ইত্যাদি সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে পরামর্শের বাধ্যবাধকতা থাকায় এর যে কোনো ব্যত্যয় আইন, বিধি-বিধান ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং অসদাচরণের শামিল।’
স্মারকে বলা হয়, ‘বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সুপ্রিমকোর্ট, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অফিসে প্রেষণ বা অন্যভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দায়িত্ব পালনকালে তাদের চাকরির শর্তাবলী, বিদেশ ভ্রমণ ইত্যাদি সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে পরামর্শে গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশক্রমে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন