নাসিক নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান ইনকিলাবকে জানান, তাদের নেতাকর্মীদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সইতে হচ্ছে। তিনি জানান, এবারের নাসিক নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে রণনীতি রণকৌশল নির্ণয়ে নিয়ামকশক্তি যোগাবে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে নারায়ণগঞ্জ থেকেই সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হবে। নাসিক নির্বাচনকে ঘিরে জেলার শীর্ষ থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এখন সতর্ক ও চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন।
তিনি আরো বলেন, তৃণমূলের মতামত নিয়েই আমাকে মেয়র হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। বিএনপির শীর্ষ নেতারাসহ প্রত্যেক থানার নেতাকর্মীরা খুবই আন্তরিকভাবে আমার জন্য কাজ করছে। ব্যক্তিগতভাবে করো সাথে আমার কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। এটা আমার কোনো নির্বাচন নয় এটা দলের নির্বাচন। তাই বিএনপির নেতাকর্মীরা সবাই এখন ঐক্যবদ্ধ। সারা নগরী জুড়েই ভোটের আমেজ শুরু হয়েছে। আমি সকল জায়গাতেই ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তারা বহুদিন পরে ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আমি জয়ের ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনে সরকার দলীয় প্রার্থীর অনীহার ব্যাপারে এড. শাখাওয়াতকে প্রশ্ন কারা হলে তিনি জানান, আইভী নিজের সুবিধার জন্যই সেনাবাহিনী চাচ্ছেন না। গতবারের নির্বাচনে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন কিন্তু এবার সরকারি দলের প্রার্থী হওয়ায় তার সেনাবাহিনীর প্রয়োজন হবে না। বরং সেনাবাহিনী না থাকলে তার আরো বেশি সুবিধা হবে।
৮ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ, বাতিল ¬ ১
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৯ মেয়র প্রার্থীর মাঝে ১ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সকাল সাড়ে ন’টায় শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মিলনায়তনে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে যাচাই-বাছাই শুরু হয়। এছাড়া আরো ৬ কাউন্সিলর পদে প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।
মেয়র পদে প্রার্থিতা বাতিল হওয়া ব্যক্তি হলেন, অ্যাড. সুলতান মাহামুদ। ৩শ’ জনের স্বাক্ষর না থাকায় তার প্রার্থিতা বাতিল হয়। অপরদিকে ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী বিএনপি নেতা শাহেন শাহ, ২১ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা আলী আজহার তৌফিক ও কাজী রেজওয়ানুল হক মামুন, ২২নং ওয়ার্ডে মোঃ শাহ আলম, আজাহারুল ইসলাম ভূইয়া ও ২৪ নং ওয়ার্ডের আব্দুস সাত্তারের প্রার্থিতা বাতিল হয়। এর আগে প্রথম দিনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ঋণখেলাপি, কর পরিশোধ না করা, বয়স কম হওয়ায় ১০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম দিনে ১ থেকে ১৮ নং ওয়ার্ড এর সাধারণ কাউন্সিলর ১১৬ জন আগ্রহী প্রার্থীদের ও ১ থেকে ৬ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত (মহিলা কাউন্সিলর) ২৩ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
গতকাল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দ্বিতীয় দিনে। আইভীর প্রস্তাবকারী মোঃ রাশেদ বলেন, আমি মনে করি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনীর কোনো প্রয়োজন নেই। গত বারের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, এবারের নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে। বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য গ্রাউন্ড ফিল্ড চাই। নারায়ণগঞ্জে অনেক অস্ত্র রয়েছে যেগুলো এখনো উদ্ধার করা হয়নি। নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার জন্য এই অস্ত্রগুলোর ব্যবহার হতে পারে। এছাড়া অনেক অবৈধ অস্ত্রও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে জনগণের আস্থা কমে গেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাই।
ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, অ্যাড. সাখাওয়াতের বক্তব্যের সাথে আমিও একমত। এছাড়াও প্রশাসনের মধ্যে দলীয়করণ বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির মনোনীত প্রার্থী রাশেদ ফেরদৌস বলেন, ভোটাররা সকলেই সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ চাই। তাই সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরিবেশ ভালো আছে। সেনাবাহিনীর প্রয়োজন হলে তখন পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপনারা আমার প্রতি আস্থা রাখুন। নজিরবিহীন সুষ্ঠু নির্বাচন সৃষ্টি করতে আপনারা আমাকে সহযোগিতা করুন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন