শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

উন্নয়ন সম্পর্কে বাংলাদেশ অন্যদের যা শেখাতে পারে

ফাইনান্সিয়াল টাইম্স | প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০২২, ১২:১১ এএম

১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, তখন পাঁচ বছর বয়সের আগেই প্রতি পাঁচজনে একজন শিশুর মৃত্যু ঘটতো। আজ সেই সংখ্যা প্রতি ৩০ জনের মধ্যে একজন। যদিও বাংলাদেশ এখনো দরিদ্র, তবে এটি রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরিবেশগত ঝুঁকি এবং উচ্চ স্তরের দুর্নীতির সাথে লড়াই করছে এবং ব্যাপক সমস্যার মধ্যেও রূপান্তরিত হয়েছে দেশটি।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বেড়েছে আটগুণ। মহিলাদের গড়ে দুটি সন্তান রয়েছে, যার অর্থ প্রতিটি সন্তানের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সুস্থতাতে ব্যয় করার জন্য অভিভাবকদের কাছে আরো বেশি অর্থ রয়েছে এবং শিল্পে লগ্নি করার জন্য ব্যাংকগুলোর আরো বেশি সঞ্চয় রয়েছে। নিরঙ্কুশ দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসকারী মানুষের অনুপাত অর্ধেকের বেশি হলেও নারীদের অবস্থানের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা এখন বেশি।

বাংলাদেশ এ সপ্তাহে বহু বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আইএমএফের শরণাপন্ন হয়েছে। কিন্তু যদি পেছনে ফিরে দেখা যায়, তাহলে একসময় হেনরি কিসিঞ্জারের ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসাবে উড়িয়ে দেওয়া বাংলাদেশ আজ একটি উন্নয়ন সাফল্য। এটি আফ্রিকার অনেক অংশের জন্য শিক্ষা বহন করে এবং আফ্রিকার কোনো দেশ এর সাফল্যের কাছাকাছি আসেনি।

প্রকৃতপক্ষে কী সম্ভব তার একটি আভাস দেয় বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশ গৃহযুদ্ধ থেকে বেরিয়ে এসেও দ্রুত দুর্ভিক্ষ ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের মুখে পড়েছে দেখে। এ হতাশাজনক শুরু থেকে বর্তমানে সাফল্যের একটি সংস্করণে পরিণত হয়েছে দেশটি।

এক্ষেত্রে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ স্টেফান ডারকন তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন। প্রথমটি, গার্মেন্টস শিল্পে বাংলাদেশের রফতানি ১৯৮৪ সালের ৩২ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে বর্তমানে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সালে এটি পোশাক রফতানি থেকে ৫৪টি আফ্রিকান দেশের মোট আয়ের তুলনায় দ্বিগুণ আয় করেছে। দ্বিতীয়টি হল প্রবাসী আয়। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা গত বছর ২২ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছে। তৃতীয়ত, ব্র্যাক এবং গ্রামীণ ব্যাংকের মতো বেসরকারী সংস্থাগুলোর ভূমিকা, যারা অনেক দরিদ্র লোকের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটিয়েছে।

রেনেসাঁ ক্যাপিটালের প্রধান অর্থনীতিবিদ চার্লি রবার্টসনও বাংলাদেশের উন্নয়ন সাফল্যকে তিনটি বিষয়ের মধ্যে ফেলেছেন: সাক্ষরতা, বিদ্যুৎ এবং প্রজনন। তার দ্য টাইম ট্রাভেলিং ইকোনমিস্ট বইতে তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, শিল্পে সাফল্যের পূর্বশর্ত হল ৭০ শতাংশের ওপরে প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতা, জনপ্রতি ৩শ’ কিলোওয়াট ঘণ্টার উপরে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং ৩-এর নিচে জন্মহার। বাংলাদেশ এসব শর্তে উত্তীর্ণ হয়েছে।

অনেক আফ্রিকান দেশে সাক্ষরতার হার ৭০ শতাংশের উপরে, যার অর্থ শিল্পখারখানার জন্য তাদের তৈরি কর্মীবাহিনী রয়েছে। কিন্তু খুব কম দেশই প্রতিযোগিতামূলক হারে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। গিনি বিসাউ (মাথাপিছু ২১ শতাংশ) থেকে শুরু করে ইথিওপিয়া (৮২ শতাংশ) এবং নাইজেরিয়া (১শ’ ৫০ শতাংশ) পর্যন্ত বেশিরভাগ দেশই রবার্টসনের ৩শ’ ৩শ’ কিলোওয়াটের শর্ত পূরণে ব্যর্থ।

নাইজেরিয়ার প্রজনন হার ৫.২ এর বিপরীতে বাংলাদেশের প্রজনন হার ২। ৩-এর নিচে প্রজনন হারের আফ্রিকান দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বতসোয়ানা, মরিশাস, মরক্কো এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। তারাই মহাদেশটির সবচেয়ে ধনী। মধ্যম আয়ের কেনিয়া থেকে শুরু করে (প্রজনন হার ৩.৪) নাইজার পর্যন্ত আফ্রিকার বাকি অংশ বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে, যাদের প্রজনন হার ৬.৭।

রবার্টসন বলেন, দেশগুলো উন্নতি করতে পারে না যতক্ষণ প্রজনন হার জনপ্রতি ৩-এর নিচে না নেমে আসে। তবে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, পরিবারের আকার, পরিবারের সঞ্চয় এবং শিল্পের জন্য ব্যাংক ঋণের প্রাপ্যতা এবং সামর্থ্যের মধ্যে একটি সরাসরি এবং শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে।
নাইজেরিয়ায় ১২ শতাংশের বিপরীতে বাংলাদেশের জিডিপিতে ঋণের হার ৩৯ শতাংশ। বাংলাদেশ দেখিয়েছে যে, নানান জটিলতার মধ্যেও সমৃদ্ধি সম্ভব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
jack ali ৩১ জুলাই, ২০২২, ১০:১৪ পিএম says : 0
We can teach the world how to stay in power by hook or crook, how to loot our hard earned tax payers money and sending to foreign countries. We can teach to instil fear in the heart of general who protest against rulers crime by committing genocide, enforce disappearance, lodging false case against innocent people and keep them in the jail fore ever. We can teach the world how to become billionaire within few months. We can teach so many things to the world if we were to list then it would be a massive book.
Total Reply(0)
Md Bashir ৩১ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৮ এএম says : 0
Eto unnoyon hole employment nai kno? kno high quality student ra BCS diye corrupted hoye jay?
Total Reply(0)
Mohd Shah Jalal ৩১ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৮ এএম says : 0
দুর্নীতি কম করতে পারলে ২০৩০ বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে এখন একটা আমাদের চাওয়া দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ
Total Reply(0)
Md Nazmul Hossain ৩১ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৩ এএম says : 0
Ensha Allah Bangladesh parbe ! Joy Bangla, joy bongobondhu ! Allah Hafez !
Total Reply(0)
Sohel Ahmed Sohel ৩১ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৩ এএম says : 0
ভাই আমরা শ্রীলঙ্কা থেকে শিখে ফেলেছি উন্নয়নের সংজ্ঞা
Total Reply(0)
Raysa Islam ৩১ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৮ এএম says : 0
জয় বাংলাদেশের জয়। দুই সপ্তাহ বিদ্যুৎ নিয়ে কষ্ট করে আমরা ১০ বছরে সাফল্য ভুলে যেতে পারি না। আমরা দ্রুত এই সমায়ীক সমস্যা থেকে বের হয়ে আসব।
Total Reply(0)
Jamil Hosen Jon ৩১ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৭ এএম says : 0
জনগনের ভোট চুরি... মৃত মানুষের ভোটের অধিকার দেয়া।। দিনের ভোট রাতে করা।। এগুলো শেখাতে পারবে।।
Total Reply(0)
Raysa Islam ৩১ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৮ এএম says : 0
জয় বাংলাদেশের জয়। দুই সপ্তাহ বিদ্যুৎ নিয়ে কষ্ট করে আমরা ১০ বছরে সাফল্য ভুলে যেতে পারি না। আমরা দ্রুত এই সমায়ীক সমস্যা থেকে বের হয়ে আসব।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন